পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো স্কুলছাত্রীর

মেহেরপুরে খালাতো ভাইয়ের মোটরসাইকেলে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় বিপত্তি
নিহত স্কুলছাত্রী মহুয়া হোসেন তিষা

মেহেরপুর অফিস: পরীক্ষায় অংশ নিতে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মহুয়া হোসেন তিষা নামের এক স্কুলছাত্রী নিহত হয়েছে। বিদ্যালয়ে পৌঁছানোর আগেই বাড়ির অদূরে প্রধান সড়কে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তিষা ছিটকে সড়কের ওপর পড়লে পেছন থেকে আসা বালুবোঝাই পাওয়ারট্রিলার তার বুকের ওপর দিয়ে চলে যায়। তাকে উদ্ধার করে নেয়া হয় হাসপাতালে। তিষাকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত মহুয়া হোসেন তিষা (১৫) মেহেরপুর শহরের উপকন্ঠ সদর উপজেলার বামনপাড়ার বাসিন্দা এবং জেলা প্রশাসকের গাড়ি চালক কাজী মোমিন হোসেনের মেয়ে। তিষা মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির মানবিক শাখার ছাত্রী ছিলো। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের কোর্টরোড সড়কে জেলা পরিষদের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, কৃষি বিজ্ঞান পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য রোববার সকালে খালাতো ভাই পলাশের সাথে মোটরসাইকেল যোগে বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তিষা। পথিমধ্যে শহরের কোর্ট রোড সড়কে জেলা পরিষদের সামনে পৌঁছুলে সড়কের গতিরোধক অতিক্রমের সময় একটি অটোরিকশা ও সাইকেল পলাশের মোটরসাইকেলের সামনে চলে আসে। মোটরসাইকেলটি সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাইলে একটি অটোরিক্সার সাথে ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে সড়কে পড়েন পলাশ ও মহুয়া হোসেন তিষা। এসময় পেছন দিয়ে আসা একটি বালিবোঝাই পাওয়ারট্রিলার মহুয়া হোসেন তিষার বুকের ওপর দিয়ে চলে যায়। রক্তাত্ব জখম অবস্থায় স্থানীয়রা পলাশ ও মহুয়া হোসেন তিষাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মহুয়া হোসেন তিষাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত পলাশকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত তিষার খালাতো ভাই পলাশ বলেন, তিষার বিদ্যালয়ে পরীক্ষা ছিলো। বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য সকালে মোটরসাইকেলে বাসা থেকে বের হন তারা। শহরের কোর্টরোড এলাকায় পৌঁছুলে সড়কে বসানো গতিরোধক পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মুনসুর আলম খান, পুলিশ সুপার রাফিউল আলমসহ সরকারি কর্মকর্তারা হাসপাতালে যান।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ দারা খান বলেন, সকালে সরকারি উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী তিষা পরীক্ষা দেয়ার জন্য বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিষার বাবা মোমিন হোসেন বলেন, ‘মেয়েটি দেখতে ঠিক আমার মায়ের মতো ছিলো। তাকে খুব আদর-যতেœ রাখতাম। ডিউটি শেষে প্রতিদিন ফেরার পথে মেয়ের জন্য খাবার নিয়ে আসতাম। কিন্তু অকালে মেয়েটি চলে গেলো।’

Comments (0)
Add Comment