পান হাট নিয়ে গোকুলখালী-ভালা্ইপুর মোড়ের রশি টানাটানি : সড়ক অবরোধ

ভালাইপুর প্রতিনিধিঃ চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুর মোড়ের সাপ্তাহিক পান হাটটি হঠাৎ করে নির্ধারিত স্থানে ক্রয় বিক্রয় না করে গোকুলখালীতে ক্রয় বিক্রয় করায় ফুসে ওঠেন ভালাইপুর মোড় বাজার দোকান মালিক সমিতি ও সাধারন ব্যাবসায়ীরা। অপরদিকে গোকুলখালীর ব্যবসায়ীদের দাবি, গোকুলখারীতেই ছিলো হাট, ভালাইপুরে তা হুট করে সরিয়ে নেয়া হয়েছি। দাবিকে অযৌক্তিক বলে আখ্যা দিয়ে ভালাইপুরেই পান হাট বসানোর দাবিতে চুয়াডাঙ্গা=মেহেরপুর সড়ক ও ভালাইপুর মোড় আসমানখালী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ভালাইপুর মোড় বাজার দোকান মালিক সমিতি ও সাধারন ব্যাবসায়ীরা। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ উপস্থিত হয়। পুলিশি আশ্বাসে অবরোধ সরিয়ে নেন আন্দোলনকারীরা।
জানাগেছে শনিবার চুয়াডাঙ্গা সদরের ভালাইপুর মোড়ের সাপ্তাহিক পান হাট বসানো হতো। গতকাল শনিবার আলমডাঙ্গার চিৎলা ইউনিয়নের গোকুলখালী বাজারে বসানো হয় পান হাট। ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ই হাজির হন সেখানে। এ খবর পেয়ে ভালাইপুর মোড় বাজার দোকান মালিক সমিতি তাৎক্ষণিক আন্দোলনে নামেন। শুরু করেন সড়ক অবরোধ।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভালাইপুর মোড়ের সকল ব্যাবসায়ীরা ও ভালাইপুর মোড় বাজার দোকান মালিক সমিতি লোকজন তাদের সকল ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে নির্ধারিত স্থানেই পানের হাট বসাতে হবে এই দাবীতে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর সড়ক ও ভালাইপুর মোড় আসমানখালী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ভালাইপুর মোড় বাজার দোকান মালিক সমিতি ও সাধারন ব্যাবসায়ীরা, এসময় চুয়াডাঙ্গা টু মেহেরপুর সড়কের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ মোঃ ফখরুল আলম খাঁন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ভালাইপুর মোড়ে উপস্থিত হন। এ সময় ব্যাবসায়ীদের সাথে আলোচনা করেন এবং এক উপজেলার হাট অন্য উপজেলার নিয়ে বসানোর জন্য যারা ষড়যন্ত্র করছে তদন্ত পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং আগামী সপ্তাহে পানের হাটটি যথাস্থানে বসানোর আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ কারীদের আশ্বস্ত করলে তারা বিক্ষোভ তুলে নিয়ে নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে ভালাইপুর মোড় বাজার কমিটির সভাপতি হাজী আমির হোসেনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক ও ভালাইপুর বাজার দোকান মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা আসাদুজ্জামান কবীর, জেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, আলুকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইসলাম উদ্দিন,, চিৎলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোজাম্মেল হক, খাদিমপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শাহাজালাল ব্যানা, ভালাইপুর মোড় বাজার দোকাল মালিক সমিতির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা মুক্তার, ভালাইপুর মোড় বাজার দোকাল মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মোতালেব ও সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান নান্টু। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সহসভাপতি ছানোয়ার হোসেন, নুর মোহাম্মদ, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক হোসেন আলী কালু, এনামুল কবীর, শারিউর রহমান লন্টু, সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আজিজ, অর্থ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সাবেক অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার কামরুদ্দীন জাভেদ, প্রচার সম্পাদক মোফাজ্জেল হক, দপ্তর সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, ধর্ম সম্পাদক রবিউল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক মহিউদ্দীন ময়েন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুল গফফার, কার্য নির্বাহী সদস্য টিপু সুলতান, মনিরুল ইসলাম মনি, ইলিয়াছ হোসেন, আকতার হোসেন, আব্দুল্লা আল ফারুক, আব্দুল মজিদ প্রমুখ। বিক্ষোভ সভার পরিচালনা করেন ভালাইপুর মোড় দোকান মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক সোহেল রানা শান্তি। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মার্কেট মালিক ও ব্যাবসায়ী বলেন গত কয়েকদিন ধরে ভালাইপুর মোড়ের পান হাট গোকুলখালী বনাবেন বলে পান ব্যাবসায়ীদের পান ক্রয় করা ডোল, ভালাইপুর থেকে গোকুলখালী নিতে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল বলে জানান।
এবিষয়ে ভালাইপুর মোড় দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হাজি আমির হোসেন বলেন,ভালাইপুর বাজারের উন্নয়ন দেখে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে হাটটি অন্যত্র বসানোর চেষ্টা করছে,তাদের কেউ কেউ হাটের মধ্যে কাঁদা পানি বলে খোঁড়া যুক্তি দাড় করানোর চেষ্টা করছে,বিগত সময়ে এর থেকেও বেশী কাঁদা পানি থাকলেও ব্যবসায়ীরা অন্যত্র সরে যাইনি।কিন্ত আমরা যখন বাজারের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের চেষ্টা করছি সেই সময়ে এই হাটটিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যারা ষড়যন্ত্র করে হাটটি অন্যত্র সরানো বা ভালাইপুর হাটের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে আমরা সকল ব্যাবসায়ীদের সাথে নিয়ে তা প্রতিহত করবো।আর প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি যারা জোরপূর্বক এধনের কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।
এ বিষয়ে হাট ইজারাদার দেলোয়ার হোসেন দিপু বলেন নিয়ম অনুযায়ী ভালাইপুর মোড়ের সাপ্তাহিক পান হাটের খাজনা তুলতে যেয়ে দেখি হাটে কোন পান ক্রয় বিক্রয় হচ্ছেনা, আমি তো হতবাক হয়ে পড়ি। নির্ধারিত হাটের খাজনা তুলতে না পেরে আমার বিশাল ক্ষতি, এ ক্ষতির দায় কে নেবে। কি কারনে সাপ্তাহিক হাটে ব্যাপারীরা বা বিক্রেতা আসেনি জানতে ব্যাপারীদের কাছে ফোন দিলে তারা বলেন ভালাইপুর মোড়ের নির্ধারিত পান কেনা স্থানে প্রচন্ড কাদা হওয়ায় আমরা গোকুলখালি কেনা শুরু করেছি।

Comments (0)
Add Comment