বগুড়ায় মদ পানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫

স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ায় বিষাক্ত মদ পানে নতুন করে আরও পাঁচজনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার মারা গেছেন চারজন। আর একজন গত সোমবার রাতে মারা গেছেন, যার মৃত্যুর খবর আজ জানিয়েছে পুলিশ। শেষ মারা যাওয়া এই পাঁচজনের মধ্যে দুজন হাসপাতালে এবং বাকি তিনজন বাড়িতে মারা গেছেন। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় মদ পানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫। এর মধ্যে ৪ জন হাসপাতালে এবং বাকি ১১ জন বাড়িতে মারা গেছেন।
নতুন করে যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে তারা হলেন শহরের তিনমাথা পুরান বগুড়া দক্ষিণপাড়া এলাকার রামনাথ রবিদাস (৬০), পুরান বগুড়া জিলাদারপাড়ার কুলিশ্রমিক রমজান আলী (৬৫), শাজাহানপুর উপজেলার দুরুলিয়া ম-লপাড়ার সিএনজিচালিত অটোরিকশার মেকার মেহেদী হাসান (২৮), রহিমাবাদ উত্তরপাড়ার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আবদুর রাজ্জাক (৪০) এবং কাটাবাড়িয়া এলাকার জমি মাপজোখকারী সার্ভেয়ার আহাদ আলী (৩৮)।
এর আগে সোমবার বিভিন্ন সময়ে মারা গেছেন বগুড়া শহরের শহরের তিনমাথা পুরান বগুড়া দক্ষিণপাড়া এলাকার প্রেমনাথ রবিদাস (৭০), তার ছেলে সুমন রবিদাস (৩৮), বগুড়া সদরের ফাঁপোড় এলাকার রিকশাচালক জুলফিকার রহমান (৫৬), ফুলবাড়ি মধ্যপাড়ার রিকশাচালক আবদুল জলিল (৬৫), ফুলবাড়ি এলাকার কারখানা শ্রমিক পলাশ (৩৪), শহরের কাটনারপাড়া এলাকার হোটেল শ্রমিক সাজু মিয়া (৫৫), বগুড়া শহরের চারমাথা ভবেরবাজার এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন (৫৫), শহরের তিনমাথা পুরান বগুড়া এলাকার রাজমিস্ত্রি রমজান আলী (৬০), কাটনারপাড়া হটুমিয়া লেনের বাবুর্চি মোজাহার আলী (৭৫) ও কাহালু পৌর এলাকার উলুট্ট মহল্লার অটোরিকশার চালক কালাম (৫০)। মদ পানে বগুড়া শহরের পুরান বগুড়া এলাকার একই পরিবারের তিন সদস্য মারা গেছেন। তারা হলেন দুই ভাই প্রেমনাথ রবিদাস ও রামনাথ রবিদাস এবং প্রেমনাথের ছেলে সুমন রবিদাস। প্রেমনাথের ছোট ছেলে সুজন রবিদাস বলেন, তারা পেশায় মুচি। জুতো সেলাই করে সংসার চালাতেন। তার দাবি, বাবা প্রেমনাথ, চাচা রামনাথ, বড় ভাই সুমন এবং একই এলাকার রমজান আলী শহরের তিনমাথা এলাকার খান হোমিও হলের মালিক শাহিনুর ইসলামের কাছ থেকে নিয়মিত মদ কিনে খেতেন। একই দোকান থেকে মদ কিনে তারা রোববার কোনো এক সময় পান করেন। চারজনই মারা গেছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিববাটি এলাকার হোটেল শ্রমিক রঞ্জু মিয়া (৪০), ফুলবাড়ি এলাকার পায়েল (৩৮) এবং কালীতলা এলাকার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আইয়ুব আলী (৩৯)। অন্যদিকে এ ঘটনায় রঞ্জুর ভাই মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে শহরের তিন হোমিও দোকানিকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।
অসুস্থ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শহরের পারুল হোমিওহল, খান হোমিওহল, সাতমাথায় একটি দেশি মদের দোকানসহ কয়েকটি দোকান থেকে অ্যালকোহল কিনে পান করে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘটনার পর থেকে খান হোমিওহল বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন মালিক শাহিনুর রহমান। তার মুঠোফোনও বন্ধ। লাপাত্তা পারুল হোমিও হলের মালিক নুরুন্নবী শেখও।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ বলেন, অভিযুক্ত অ্যালকোহল ব্যবসায়ীদের আটকের চেষ্টা চলছে।

Comments (0)
Add Comment