বাজলো স্কুলের ঘণ্টা : দেড় বছর পর প্রিয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস

স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ দেড় বছর পর অবশেষে খুললো স্কুল-কলেজ। দেশজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনে ছিল ভিন্ন এক পরিবেশ। ছিল উৎসবের আমেজ। যেন প্রাণ ফিরে পেল সবাই। সহপাঠীরা দীর্ঘদিন পর একে অপরকে পেয়ে আনন্দে ছিল আত্মহারা। হাসিমাখা মুখ ছিল শিক্ষকদেরও। নবীনবরণে যেমন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়া হয়, ঠিক তেমনি শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিয়েছে স্কুলগুলো। কোথাও কোথাও বিয়ের সাজে সাজানো হয়েছে ক্যাম্পাস। প্রবেশপথে বেলুন দিয়ে ফটক সাজানো হয়েছে। আর শিক্ষার্থীরা প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই বেজে ওঠে ড্রামের বাদ্য। কোথাও কোথাও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে গোলাপ ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় চকলেট। গত মার্চে মারিয়া যখন স্কুল ছেড়েছিলো, তখন সে পঞ্চম শ্রেণিতে ওঠে। দেড় বছর ধরে সে স্কুলের বাইরে। এখন যখন সে স্কুলে এলো, তখন সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। সপ্তম শ্রেণিতে উঠতে আর মাত্র চার মাস বাকি। মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী জানায়, সহপাঠীদের দেখতে পেয়ে ভালোই লেগেছে। দীর্ঘদিন ওদের দেখিনি। সবার চেহারাও একরকম ভুলেই গিয়েছিলম। গতকাল স্কুলগুলোর ভেতরে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাস হয়। স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো মানা হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে শিক্ষকদের ছিল সতর্ক দৃষ্টি। বসার ও চলাফেরার ক্ষেত্রে ৩ ফুট দূরত্বের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেন শিক্ষকেরা। ক্লাসে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের চেয়ে আলোচনায় স্থান পায় স্বাস্থ্যবিধি মানার দিকটি। হয় স্মৃতিচারণ, গান, আবৃত্তি। স্কুলের ভেতরে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানলেও স্কুলের বাইরের চিত্র ছিল ভিন্ন। স্কুলের বাইরে অনেক শিক্ষার্থীকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। দেখা গেছে, অনেকে শিক্ষার্থী জটলা করে গল্প করছে, আনন্দে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরতেও দেখা গেছে। কোনো কোনো স্কুলের সামনে বসেছেন ফেরিওয়ালারা। ঝালমুড়ি ও চটপটির দোকানের সামনে ছিল শিক্ষার্থীদের ভিড়। শিক্ষার্থীদের মাস্ক খুলে খাওয়া দাওয়া করতে দেখা গেছে। এসব চিত্র মহল্লার স্কুলগুলোতেই বেশি।
সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গাতেও দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশি সময় পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের গোলাপ ফুল দিয়ে বরণ এবং শরীরের তাপমাত্রা মাপা ও হাতে স্যানিটাইজার দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরতে পেরে খুবই আনন্দিত। জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আতাউর রহমান জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। কর্মকর্তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সকালে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘুরে দেখা গেছে, উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছে। করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরিধান করে স্কুলে এসেছে তারা। স্কুলগুলোর ফটকে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মেপে প্রবেশ করানো হচ্ছে। তাদেরকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। ফটকে স্কুলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষকদেরও অবস্থান করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের ফুল নিয়ে বরণ করে নেয়ার আয়োজন করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার মোট ৬৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর মধ্যে ৪৪৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৯টি মাদরাসা, ২০টি কলেজ ও ১৪১টি মাধ্যমিক ও নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম দিনে পঞ্চম শ্রেণির প্রথম শিফটে ১১৪ জনের মধ্যে উপস্থিত ৮৭ জন ও দ্বিতীয় শিফটে ১১২ জনের মধ্যে ৮০ জন উপস্থিত। অষ্টম শ্রেণিতে প্রথম শিফটে ১৩২ জনের মধ্যে ৯৮ জন ও দ্বিতীয় শিফটে ১২০ জনের মধ্যে ৮০ জন। ২০২০ সালের ১৭ মার্চের আগের দিন উপস্থিত ছিল পঞ্চম শ্রেণির প্রথম শিফটে ১১৪ জনের মধ্যে উপস্থিত ৯০জন ও দ্বিতীয় শিফটে ১০৮ জনের মধ্যে ৮৫ জন উপস্থিত। অষ্টম শ্রেণিতে প্রথম শিফটে ১৩২ জনের মধ্যে ৮৫ জন ও দ্বিতীয় শিফটে ১১৬ জনের মধ্যে ৮০ জন। কালিয়াবকরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ৩৮ জন উপস্থিত। ২০২০ সালে ছিল ৪০ জন। পঞ্চম শ্রেণিতে ৫১ জন উপস্থিত। ২০২০ সালে ছিল ৬২ জন। চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মালাকার জানান, তার বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর অভিভাবক সরকারি চাকরি করেন। তাই বদলিজনিত কারণে অনেকেই চলে গেছেন। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী কিছুটা কম উপস্থিত। সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার ও জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান (ভারপ্রাপ্ত) চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন। এ সময় জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মালাকার। এর আগে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের গোলাপ ফুল দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহসিন আলীসহ অন্যান্য শিক্ষকরা স্বাগত জানায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি বেঞ্চে দু’জন করে ছাত্রীদের বসানো হয়। এ সময় জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান বলেন, শিক্ষা বিভাগের ১৯ দফা নির্দেশনা মেনে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে। শিক্ষকদের এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আমরা চায়না স্কুল বন্ধ হোক। সকলকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ তেতুল শেখ কলেজ ও ছাদেমান নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা মেনে পাঠদানের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মেনে পাঠদানের উদ্বোধন করা। ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজ ও ছাত্রীদের স্কুলমুখি করতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সকল শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। কলেজ ও বিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদেরকে তাপমাপা যন্ত্রের মাধ্যমে তাপমাত্রা মেপে প্রবেশ করতে হয়। মাস্ক পরা নিশ্চিত করা ও হয়। দুটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কলেজ ও ছাদেমান নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজি আব্দুল্লা শেখ।
অপরদিকে, ঝিনাইদহের নগরবাথান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রিওপেনিং উদ্বোধন করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার শুধাংশু বিশ্বাস, ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম এবং বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক। সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফুলেল শুভেচ্ছায় শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করানো হয়।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, দীর্ঘ ১৭ মাস পর স্কুলে এসে আলমডাঙ্গার শিক্ষার্থীরা খুবই খুশি ও উচ্ছ্বসিত। বেলুন-রঙিন কাগজ দিয়ে স্কুল গেট ও ক্লাস রুম সাজিয়ে, কোথাও কোথাও কেক কেটে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসেছে শিক্ষার্থীরা। প্রথমদিনে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ সময় শিক্ষা বিভাগ, জেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তিরাসহ বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান গেটে থার্মোমিটার, মাস্ক, হ্যান্ডওয়াস ও ফুল হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করতে শিক্ষকদের দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজ, মহিলা ডিগ্রি কলেজ, আলমডাঙ্গা পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পাইলট বালিকা বিদ্যালয় ও এরশাদ একাডেমিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথমদিনে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শুরু হয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল যথেষ্ঠ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান গেটে থার্মোমিটার, মাস্ক, হ্যান্ড ওয়াস ও ফুল হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করতে শিক্ষকদের দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলেছে স্কুলগুলো। গতকাল রোববার সকাল থেকেই বিদ্যালয় গেটে ভিড় ছিল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কারণে আনন্দে নির্ধারিত সময়ের আগেই উপস্থিত হয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষকদের মধ্যেও ছিল উৎফুল্লতা। ফুল, চকলেটসহ বিভিন্ন উপহার দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া করোনা থেকে বাঁচতে মাস্ক, স্যাানিটাইজার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনা চলতে নেয়া হয়েছে কঠোর পদক্ষেপ। স্কুলে আসতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা। মেহেরপুর জেলায় ৩০৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২১কি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৪টি মাদরাসা এবং ১২টি কলেজ রয়েছে। দীর্ঘদিন পর কলেজ খোলার পর মহিলা কলেজের ছাত্রীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এদিন সকালে মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কলেজের শিক্ষকরা ছাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীরা কলেজে প্রবেশ করে আনন্দ প্রকাশ করেন। সরকারি মহিলা কলেজে বিএনসিসি সদস্যরা কলেজের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের তাপমাত্রা মেপে তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় কলেজের অন্যান্য ও শিক্ষকগণ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এদিন সকাল ৭টার দিকে মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুজ্জামান উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ক্লাসে স্বাগত জানান। সহকারী শিক্ষক কাজী আনিসুজ্জামান, সেকেন্দার আলীসহ বিদ্যালয় অন্যান্য শিক্ষকগণ এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রায় দেড় বছর পর মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমায় গতকাল রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় সারা দেশের মতো মেহেরপুর জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। এদিন সকাল ৭টার দিকে সকলে মেহেরপুর জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে দেখা যায়, উৎসব মুখর পরিবেশে। প্রথম ব্যাচে এসএসসি শিক্ষার্থীরা তাদের শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করে। কলেজের অধ্যক্ষ রিতা পারভীনের নেতৃত্বে কলেজের শিক্ষকরা এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় তাদেরকে শিক্ষকরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়। তার আগে স্কুল ও কলেজের প্রবেশ পথ গেইটে শিক্ষার্থীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসেছে তারা। তাদের পরনে সেই চিরচেনা স্কুল ড্রেস, কাঁধে বইয়ের ব্যাগ। তবে সহপাঠীদের সঙ্গে নেই আগের মতো হইহুল্লোড়। শিক্ষকদের নির্দেশনা অনুযায়ী ছাত্র-ছাত্রীরা দূরত্ব বজায় রেখে তারা ক্লাসে প্রবেশ করছে।
মেহেরপুরের এ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে বিদ্যালয়ের আঙিনাগুলোতে ঝড়ঝাপটাসহ বিদ্যালয়ের ভেতরেও নোংরা পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পরপরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা সহ পাঠদানের পরিবেশ গড়ে তোলে।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মুজিবনগর উপজেলাতে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর মুজিবনগর উপজোয় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় ক্লাস শুরু করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে গোপালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্রীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে অর্ভ্যত্থনা জানানো হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ক্লাসে স্বাগত জানান। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সহকারী শিক্ষক মোছা. আফরোজা খাতুন, আব্দুল হালিম, আব্দুল মালেক, জান্নাতুল ফেরদৌসসহ বিদ্যালয় অন্যান্য শিক্ষকগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন। মুজিবনগর উপজেলায় ৩৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৬টি কিন্ডারগার্ডেন, ১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪টি মাদরাসা ও ৫টি কলেজ রয়েছে।

Comments (0)
Add Comment