বিএনপির কাউন্সিলে আওয়ামী নেতারা, তৃণমূলে ক্ষোভ

গত ২ জুলাই পটুয়াখালী জেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতাকে। এমনকি ওই কাউন্সিলে ডেলিগেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এক শ্রমিক লীগ নেতা। কাউন্সিলে আওয়ামী নেতাদের অংশগ্রহণ ও ডেলিগেটের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মীদের অনেকেই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী নেতাদের আশ্রয়দাতাদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

দলীয় একাধিক সূত্র মতে, গত ২ জুলাই পটুয়াখালী ব্যামাগারে জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক নামের এক ব্যক্তি উপস্থিত হলে তৃণমূল নেতারা ক্ষোভে ফেটে পরেন। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পতিত শেখ হাসিনার সরকারের সময় তিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন এবং ২৪ এর ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। অবশ্য, কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে আসার পর জাহাঙ্গীরকে তাৎক্ষণিক ব্যায়ামাগার থেকে বের করে দেওয়া হয়।

সম্মেলন আগের রাতে অনুষ্ঠানের সাজসজ্জার তদারকির দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় জাহাঙ্গীরকে।

এছাড়াও খলিল শরীফ নামের আরেক শ্রমিকলীগ নেতাকে ডেলিগেট কার্ড ঝুলিয়ে সম্মেলনে দেখা যায়। বিনএপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সেলফি তুলতেও দেখা যায় তাকে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিএনপির অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী ডেলিগেট কার্ড থেকে বঞ্চিত, সেখানে অনুপ্রবেশকারী নব্যদের গলায় কার্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাকারিয়া আহমেদ তার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘যিনি এ লোককে অতিথি কার্ড দিয়েছেন তাকে খুঁজে বের করে তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি রইলো জেলা বিএনপির কাছে। আমরা কিন্তু কাউকেই ছাড় দিবো না, দয়া করে দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করলে বাপকেও ছাড় দিবো না।’

দুমকি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার চোখে পরে নাই। তবে বিষয়টি তদন্ত করে যারা তাকে ডেলিগেট কার্ড দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবো।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান টোটন বলেন, ‘এতো বড় একটা প্রোগ্রাম যেখানে ১৫ থেকে ২০ হাজারের অধিক দলের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ অংশগ্রহন করেছে। এতো বড় অনুষ্ঠানে কে কোথা থেকে আসছে আমাদের জানা ছিল না। আর আদৌ জানার সময়ও ছিল না, সম্ভবও ছিল না। আমরা কাউন্সিল সফল করার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এর মধ্যে যদি এমন অনাকাঙ্খিত ও অসাংগঠনিক ঘটনা ঘটে তা অবশ্যই তদন্তের দাবি রাখে। আমরা এ ব্যাপারে অচিরেই একটি তদন্ত কমিটি করবো।’