স্টাফ রিপোর্টার: তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনে ৩৫ পরিচালক পদের মধ্যে ৩১টি পদে জয়ী হয়েছে ফোরাম। আর সম্মিলিত পরিষদ জয়ী হয়েছে ৪টি পদে। অন্যদিকে ঐক্য পরিষদ একটি পদেও জয়ী হতে পারেনি। সংগঠনটির ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচনকেন্দ্রিক তিন জোট—ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ ঢাকা ও চট্টগ্রামে সব পদে প্রার্থী দিলেও ঐক্য পরিষদের প্রার্থী ছিল ছয়জন। ফলে সব মিলিয়ে প্রার্থী ছিলেন ৭৬ জন। নির্বাচনে ফোরামের প্যানেল দলনেতা রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান বাবু। আর সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা হলেন চৈতি গ্রুপের এমডি মো. আবুল কালাম। ঐক্য পরিষদের দলনেতা রোমো ফ্যাশন টুডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে ভোট গণনা শেষ হয়। নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ ইকবাল। বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন সৈয়দ আফজাল হোসেন ও আশরাফ আহমেদ। বিজিএমইএর ঢাকার অঞ্চলের ২৬ পদের ২৫টিতে জয়ী হয়েছেন ফোরামের প্রার্থীরা। তারা হলেন মাহমুদ হাসান খান, শাহ রাঈদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, এম এ রহিম, ফয়সাল সামাদ, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, কাজী মিজানুর রহমান, মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, ইনামুল হক খান, মো. হাসিব উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ, ভিদিয়া অমৃত খান, জোয়াদ্দার মোহাম্মদ হোসনে কামার আলম, এ বি এম শামছুদ্দিন, নাফিস-উদ-দৌলা, সুমাইয়া ইসলাম, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মজুমদার আরিফুর রহমান, ফাহিমা আক্তার, আসেফ কামাল পাশা, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, রুমানা রশীদ, সামিহা আজিম এবং রেজওয়ান সেলিম। ঢাকায় একটি পদে সম্মিলিত পরিষদের ফারুক হাসান জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৯ পদের ৬টিতে জয়ী হয়েছেন ফোরামের প্রার্থীরা। তারা হলেন, সেলিম রহমান, এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাকিফ আহমেদ সালাম, মো. শরীফ উল্লাহ, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী এবং এনামুল আজিজ চৌধুরী। বাকি তিনটি পদে জয়ী হয়েছেন সম্মিলিত পরিষদের সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, এস এম তৈয়ব ও রাকিবুল আলম চৌধুরী। নির্বাচনে ঢাকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ এক হাজার ১৪৯টি ভোট পেয়েছেন ফোরামের দলনেতা মাহমুদ হাসান খান। আর চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন ফোরামের সেলিম রহমান। এবারের নির্বাচনে ভোটার ছিলেন এক হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার ৫৬১ এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার। তার মধ্যে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শনিবার সকাল ৮টায় ঢাকার ঢাকার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেল এবং চট্টগ্রামের র্যাডিসন ব্লু হোটেল বে ভিউ কেন্দ্রে একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। নির্ধারিত পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোটকেন্দ্র প্রবেশ করে ভোট দিয়েছেন ভোটারেরা। তাই বাইরে প্রার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পেরেছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। তবে কারা কখন ভোট দিচ্ছেন সেটি ডিজিটাল মাধ্যমে সরাসরি দেখানো হয়। সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা আবুল কালাম দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোট সুষ্ঠু ও সুন্দর হচ্ছে। ভোটের ফলাফল যা–ই হোক, আমরা মেনে নেব।’ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১১ জুন সভাপতি ও সহসভাপতি পদের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন পর্ষদ ১৬ জুন দায়িত্ব নেয়ার কথা রয়েছে। গত বছরের মার্চে বিজিএমইএর নির্বাচন হয়েছিল। তাতে সম্মিলিত পরিষদ সব পদে জয়ী হলেও নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তখন সভাপতি হন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। এরপর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাঁকে আর দেখা যায়নি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হয়। গত ২০ অক্টোবর বিভিন্ন অভিযোগে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিজিএমইএ’র সভাপতি আব্দুল মান্নান কচি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। অজ্ঞাতস্থান থেকে পদত্যাগ পাঠান তিনি। এরপর বিজিএমইএ’র দায়িত্ব নেন ডিজাইনটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার রফিকুল ইসলাম। খন্দকার রফিকের নেত্বত্বে পুনর্গঠিত বোর্ড পোশাক খাতের অস্থিতিশীলতা সামাল দিতে না পারায় ২০ অক্টোবর রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বিজিএমই’র নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সন্মানিত দাতা সদস্য মাহমুদ হাসান খান বাবু’র মাহমুদ হাসান বাবুর নেতৃত্বাধীন ফোরাম জয়ী হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি ও সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের সভাপতি সরদার আল আমিনসহ প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, বিজিএমইএ’র নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়লাভ করেছে ‘ফোরাম’ জোট। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমদু হাসান খান বাবু ফোরামে নির্বাচিত হওয়ায় দর্শনায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আনন্দ মিছিল করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১১ টার দিকে দর্শনা পুরাতন বাজার থেকে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। দর্শনা কেরুজ মাকের্টের সামনে করা হয়েছে সংক্ষিপ্তসভা। বক্তব্য দেন, দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয় কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক নাহারুল ইসলাম মাস্টার, ইকবাল হোসেন, শরিফ উদ্দিন, বিএনপি নেতা আলমগীর, মুজিবর, নাজিম, আমিরুল, জেলা কৃষক দলের সদস্য হাতেম, দর্শনা পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, যুগ্মআহ্বায়ক অপু সুলতান, থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক টুটুল শাহ, দর্শনা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নুর আলম সিদ্দিকী মজনু, দর্শনা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের রাশেদ হোসেন, দর্শনা থানা মৎস্যচিবি দলের সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন, দশনা থানা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রিয়েল ইসলাম লিওন, দর্শনা পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল মামুন, জেলা যুবদলের সদস্য সুলতান, মিতুল, আরুক, নাসির উদ্দিন হাসু, সজিব, হৃদয় প্রমুখ।
এ দিকে দর্শনা পৌর যুবদল, ছাত্রদল ও দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের পক্ষ থেকে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন দর্শনা পৌর যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক জাহান আলী, যুবদল নেতা মমিন, নাঈমুর রহমান সবুজ, সানজারুল ইসলাম, রাজ হোসেন, শেখ মুন্না সুজন, সাজু আহমেদ, দর্শনা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরাফাত হোসেন, দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব পলাশ আহমেদ, সিনিয়র যুগ্মআহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন মোফা, হোসাইন, পৌর ছাত্রদলের যুগ্মআহবায়ক সাইদুর রহমান, আল মুকিত, ছাত্রনেতা আরিফ হোসেন, শেখর শাওন, মুশফিকুর রহমান, আব্দুল হাই, সাইফ, আলামিন, আবিদ হাসান, সজীব প্রমুখ