ভেড়ামারায় আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা : গুলিবিদ্ধ ৩ ভাই

২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীরা গ্রেফতার না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
৩ভেড়ামারা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক ম-লকে (৫২) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় আরও ৩ ভাই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চড়পাড়া গ্রামে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। ভেড়ামারা থানার ওসি মজিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত সিদ্দিকুর রহমান উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড চাঁদগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি চরপাড়া গ্রামের ওমর ম-লের ছেলে। গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সময়কার বিরোধের জেরধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে। এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমানের (৫৩) হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করলে আগামীকাল (শনিবার) থেকে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতারা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সিদ্দিকুর ও তার কয়েকজন স্বজন শুক্রবার সকালে চরের মাঠে ফসলের ক্ষেতে কাজে যান। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিত তাদের ওপর শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে সিদ্দিক ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার সঙ্গে থাকা তিন ভাইও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা হলেন নিহত সিদ্দিকুরের ভাই আনিছুর রহমান, আবদুল খালেক ও বাদশা ম-ল। স্থানীয় লোকজন জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরধরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ভেড়ামারা থানার ওসি মজিবর রহমান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ঘাতকদের ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো মুহূর্তে আবার বড় রকম সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমানের হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করলে আজ শনিবার থেকে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতারা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভেড়ামারা প্রেসক্লাবের সামনে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লাশ সামনে রেখে বিক্ষোভ করেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শামীমুল ইসলাম এ হুঁশিয়ারি দেন। এর আগে বিকেলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ ভেড়ামারা শহরে আনা হয়। সেখানে লাশ নিয়ে বিক্ষোভের সময় নেতাকর্মীরা জাসদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সেøাগান দেন। সমাবেশে শামীমুল ইসলাম বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আহ্বান করছি, যদি সন্ত্রাসীদের গ্রেফতর না করা হয়, তবে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি, অবশ্যই আওয়ামী লীগ এমন কঠোর কর্মসূচি দেবে, তখন প্রশাসন আমাদের দায়ী করতে পারবে না। নিহত সিদ্দিকের পরিবার যাদের নাম বলেছে, দায়ী করছে, তাদের প্রত্যেককে ধরতে হবে। যদি না করেন, তাহলে যে দলমতের হোক, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ব্যবস্থা নেবে।’
প্রশাসনের উদ্দেশে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আপনারা অন্য কোনো খেলা খেলবেন না। টেলিফোনের চিন্তা করবেন না। আমাদেরও বহুত টেলিফোন আছে। একটা টেলিফোনের চেয়ে অনেক ওজনের কয়েকশ’ টেলিফোন করাতে পারি।’ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বসে থাকবো না। বিচার না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবো। অনেক হয়েছে আর নয়।’ নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিরোধের জেরে জাসদ মনোনীত চেয়ারম্যান ও জাসদ নেতা আবদুল হাফিজ এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে হাফিজ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হত্যাকা-ের ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। থানায় মামলাও হয়নি।

 

Comments (0)
Add Comment