মানবিকতার দৃষ্টান্ত: পথশিশু অনিকের চিকিৎসায় অবহেলা চিকিৎসার দায়িত্ব নিলো পুলিশ সুপার।

স্টাফ রিপোর্টার:চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় গত বৃহস্পতিবার দুপুর আনুমানিক ১২টা নাগাদ ঢাকা থেকে খুলনাগামী ‘চিত্রা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে পথশিশু অনিক (১২)। দর্শনা থানাধীন দর্শনা হঠাৎ পাড়া নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনিক ট্রেনের ছাদে চড়ে যাচ্ছিল। দর্শনা হঠাৎ পাড়া এলাকায় পৌঁছালে সে ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আঘাত পায়। দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে দর্শনার মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা দর্শনা হল্ট রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে, ফাঁড়ির এসআই (নিঃ) মোঃ রফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। রেলওয়ে পুলিশ আহত শিশুটিকে উদ্ধার করে বিকেল ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করেন।
তবে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডের বারান্দায় পথশিশু অনিক চিকিৎসা বিহীন অবহেলা ও অনাদরে পড়ে থাকলে বিষয়টি হাসপাতালে দায়িত্বরত ডিএসবি পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টিগোচর হয়।
পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলে চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম-সেবা মহোদয় শিশুটির চিকিৎসার সকল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। একইসাথে, তিনি শিশুটির পরিচয় সনাক্তে কাজ করতে সকল অফিসার ইনচার্জদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
সংবাদ পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ , খালেদুর রহমান হাসপাতালে পৌঁছে জানান, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় তার সুস্থতার জন্য আমাদের দায়িত্বে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা চলছে।
চুয়াডাঙ্গার যুগান্তর (সমাজ কল্যাণ সংস্থা) সভাপতি মো: ইউসুফ জানান, অনিক নামের ছেলেটিকে চুয়াডাঙ্গা দর্শনা থানা থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হসপিটাল এ ভর্তি করিয়েছেন। তিনি আরও জানান, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার ও ওসি সদর তার পরিবার খোঁজার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং তার চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি রাখছেন না। পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে পুলিশ সুপার নিয়মিত খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং ওসি নিজে হাসপাতালে এসে শিশুটিকে দেখে গেছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি খালেদুর রহমান জানান বর্তমানে শিশু অনিক এর চিকিৎসা চলছে এবং চুয়াডাঙ্গা পুলিশ কর্তৃক পরিচয় শনাক্তের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
পথশিশু অনিকের প্রতি পুলিশ সুপারের এমন মানবিক উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।