মেহেরপুর পৌরসভা ও চার ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন

প্রতীক পেয়েই মাঠ গরম করছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর পৌরসভা ও মেহেরপুর সদর উপজেলার চার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণা এখন জমজমাট। গতকাল শুক্রবার প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। প্রতীক পেয়েই মাঠ গরম করছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা। স্ব স্ব রিটার্নিং অফিসার পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেন।
মেহেরপুর পৌরসভায় এবার ব্যতিক্রমী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। বর্তমান মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন ও সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু ছাড়া মেয়র পদে আর কোন প্রার্থী নেই। বর্তমান ও সাবেকের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের আগে থেকেই ভোটযুদ্ধ শুরু হয়েছে। গেল কয়েকদিনের মনস্তাত্তিক লড়াইয়ের পর এবার প্রতীক নিয়ে মাঠের যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
বর্তমান মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। মেয়র পদে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়েই লড়ছেন। গত নির্বাচনে তিন নৌকা প্রতীক নিয়ে বেশ বড় ব্যবধানেই বিএনপি প্রার্থীকে হারিয়ে জয়লাভ করেছিলেন। সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতুর প্রতীক নারকেল গাছ। আনুষ্ঠানিক প্রতীক বরাদ্দের পর তিনি ও প্রচারণা শুরু করেছেন। গত নির্বাচনে তার শোচনীয় পরাজয় হয়েছিল। দীর্ঘদিন পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তিনি নিজেকে জনপ্রিয় মেয়র হিসেবে দাবি করে আসছেন।
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপির প্রার্থীর পাশাপাশি মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। দলীয় প্রার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্দীতায় তিনি সুবিধা করতে পারেননি। এবার বিএনপি মাঠে না থাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি। ভোটের মাঠেই দেখা যাবে তার জনপ্রিয়তা কেমন। এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ভোটাররা।
আগামী ১৫ জুন মেহেরপুর পৌরসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৫ হাজার ২০২ জন। এর মধ্যে ১৮ হাজারের ওপরে নারী ভোট। গত নির্বাচনের মতই এবারও নারী ভোটারের সংখ্যা পুরুষ ভোটারের চেয়ে কিছুটা বেশি। মেহেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের পাশাপাশি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঝেও প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে ইতি বেগম বলপেন, আলপনা খাতুন জবা ফুল, দিল আফরোজ চশমা ও মনোয়ারা খাতুন আনারস প্রতীক পেয়েছেন। ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে শিউলি আক্তার জবা ফুল, ফিরোজা খাতুন চশমা, মোমেনা বেগম আংটি, বিলকিস আনারস, পলি অটোরিকশা, আফরোজা টেলিফোন, শারমীনা বলপেন ও খাদিজা বেগম দ্বিতল বাস প্রতীক পেয়েছেন এবং ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে তৃতীয় লিংগের সীমা চৌধুরী জবা ফুল, হামিদা খাতুন চশমা ও রোকসানা আনারস প্রতীক পেয়েছেন।
এদিকে মেহেরপুর পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে মোয়াজ্জেম হোসেন টেবিল ল্যাম্প, মীর জাহাঙ্গীর আলম পানির বোতল, গোলাম ফারুক পাঞ্জাবি, রাজিব ডালিম ও রাশেদুজ্জামান উটপাখি প্রতীক পেয়েছে। ২নং ওয়ার্ডে সঞ্জয় কুমার সাহা উটপাখি, আল মামুন টেবিল ল্যাম্প, তপন কুমার পাঞ্জাবি, ওয়াসিম খান ব্ল্যাকবোর্ড, শফিকুল ইসলাম ডালিম ও ইয়াসিন আলি শামিম পানির বোতল প্রতীক পেয়েছেন। ৩নং ওয়ার্ডে ইনসান আলী টেবিল ল্যাম্প, শাকিল রাব্বি ইভান ডালিম, সৈয়দ আবু আব্দুল্লাহ পানির বোতল ও জাহাঙ্গীর আলম উটপাখি প্রতীক পেয়েছেন। ৪নং ওয়ার্ডে আব্দুর রহিম পানির বোতল, নুরুল ইসলাম ডালিম ও রিয়াজউদ্দিন উটপাখি প্রতীক পেয়েছেন। ৫নং ওয়ার্ডে হাসেম আল উটপাখি, এসএম আবুল হাসানাত পানির বোতল, শরিফুল ইসলাম টেবিল ল্যাম্প, আক্তারুল ইসলাম পাঞ্জাবি ও মোস্তাক আহমেদ ব্রিজ প্রতীক পেয়েছেন। ৬নং ওয়ার্ডে সৈয়দ মঞ্জুরুল হাসান পানির বোতল, শামীম রেজা টেবিল ল্যাম্প, বোরহানুল আজিম উটপাখি ও শাহিনুর রহমান পাঞ্জাবি প্রতীক পেয়েছেন। ৭নং ওয়ার্ডে এসএম ফিরোজুর রহমান পাঞ্জাবি, নুরুল আশরাফ রাজিব উটপাখি, মনিরুল ইসলাম পানির বোতল, ইলিয়াস হোসেন গাজর ও তারিকুল ইসলাম টেবিল ল্যাম্প প্রতীক পেয়েছেন। ৮নং ওয়ার্ডে খন্দকার শফিউল কবীর পাঞ্জাবি, সৈয়দ মঞ্জুরুল কবীর রিপন ডালিম, এ কে শাকিল আহমেদ পানির বোতল, আব্দুস সাত্তার ব্রিজ, সাখাওয়াত হোসেন টেবিল ল্যাম্প, মতিয়ার রহমান গাজর, নাজমুল হাসান রানা ব্ল্যাকবোর্ড ও রিন্টু রহমান উটপাখি প্রতীক পেয়েছেন। এছাড়া ৯নং ওয়ার্ডে সোহেল রানা পানির বোতল, মোহাম্মদ বিন হাশেম উটপাখি ও হামিদুল ইসলাম টেবিল ল্যাম্প প্রতীক পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, আগামী ১৫ জুন মেহেরপুর পৌরসভার নির্বাচন। এদিকে এদিন প্রতীক পাওয়ার পরপরই প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা শুরু হয়েছে।
মেহেরপুর পৌরসভার পাশাপাশি আমঝুপি, বারাদী, পিরোজপুর ও শ্যামপুর ইউনিয়নে ১৫ জুন অর্থাৎ একই দিনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আমঝুপি ভেঙে শ্যামপুর এবং পিরোজপুর ভেঙে বারাদী ইউনিয়নের জন্ম হয়। বড় দুটি ইউনিয়ন ভেঙে বারাদী ও শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়েছে। ফলে জেলার অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদগুলো যথা সময়ে নির্বাচন হলেও এই চারটি ইউনিয়নে নির্বাচন হবে ১৫ জুন।

Comments (0)
Add Comment