মেহেরপুর বিসিকের অধিকাংশ প্লট খালি : অনেকেই চালু কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন

স্টাফ রিপোর্টার: কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, জমির মূল্যবৃদ্ধি, নিরাপত্তার অভাব, বর্জ্য ফেলার ডাস্টবিন না থাকাসহ আরো বেশ কিছু কারণেই মেহেরপুর বিসিকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে না বলে অভিযোগ উদ্যোক্তাদের।
বিসিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৩৫ বছর আগে ১৯৮৭ সালে মেহেরপুরে বিসিকের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুর দিকে এখানে উদ্যোক্তা তৈরি, ঋণ বিতরণ, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালানো হতো। ২০০৬ সালে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের খড়ের মাঠ এলাকায় ১০ একর জমি নিয়ে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ২১ হাজার টাকা শতক হিসেবে জমি বরাদ্দ দেয়া হলে ৭০টি প্লটের মধ্যে ৩১ জন উদ্যোক্তার মধ্যে ৬৪টি প্লট বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হয়। ২০১৪ সালে জমির দাম পাঁচ গুণ বাড়িয়ে এক লাখ ৬ হাজার টাকা করা হলে নতুন কোনো উদ্যোক্তা এখানে শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে আর আগ্রহ দেখাননি। আবার প্লট বরাদ্দ পাওয়া অনেকে বিক্রি করতে গিয়েও ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না। ফলে অনেকটা খালি পড়ে থাকা শিল্পনগরীতে গত ১৬ বছরে মাত্র ১১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও নানা কারণে পাঁচটি চালু থাকে। বাকিগুলো অনিয়মিত। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, বন্ধ কারখানা চালু বা পতিত জমিতে শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বিসিক উদ্যোগী হচ্ছে না। এ ছাড়া সীমানা পাঁচিল না থাকায় নিরাপত্তার অভাব, কাঁচামালের অভাব, সহজ শর্তে শিল্পঋণ না পাওয়া ও দক্ষ কারিগরের ঘাটতির কারণেই অনেকেই চালু কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
বিসিকে প্লট বরাদ্দ পাওয়া অঞ্চল ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় আমার প্লটে কাঁটাতার ও পেরেক উৎপাদন করেছি। কিন্তু প্রতিনিয়ত ঘাটতি ও করোনার কারণে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। অধিকাংশ প্লটে এখনো কারখানা হয়নি। অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী প্লট নিয়ে ফেলে রেখেছেন। তারা শুরু করলেও তাদের দেখাদেখি আমরা শুরু করতে পারি।’ সালেহ উদ্দীন আবুল জানান, আমি নিয়মিতভাবে উৎপাদন করার চেষ্টা করছি। কিন্তু উৎপাদিত পণ্যের কোনো বাজার নেই। যারা উৎপাদন শুরু করেছেন নিজের উদ্যোগে শুরু করেছেন। বিসিক থেকে কোনো সুযোগসুবিধা দেয়া হয়নি। এমনকি ঋণের বিষয়ে কোনো খোঁজখবর পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্ষুদ্র কুটির শিল্প সমিতি (নাসিব) মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. নাইমুর রহমান বলেন, ‘ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তুলতে যেসব প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা দরকার তার মধ্যে অন্যতম বিসিক। কিন্তু তাদের খুব একটা সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া ব্যাংকগুলোও এসএমই ঋণ দিচ্ছে না। ফলে মেহেরপুরে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে।’ এসব অভিযোগের ব্যাপারে বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সোলাইমান হোসেন বলেন, আমি কয়েক দিন হলো যোগদান করেছি। এখনো সবকিছু গুছিয়ে নিতে পারিনি। তবে প্লট মালিকরা যাতে বরাদ্দ পাওয়া প্লটগুলোতে কারখানা গড়ে তোলেন সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা করবো।’

Comments (0)
Add Comment