শীত আসার আগেই বৈরী আবহাওয়ায় চুয়াডাঙ্গায় বেড়েছে শিশু রোগী

রোটাভাইরাসের কারণে বাড়তে পারে ডায়রিয়ার প্রকোপ : শিশুদের আরও যতœ নেয়ার পরামর্শ
স্টাফ রিপোর্টার: শীত আসার আগেই চুয়াডাঙ্গায় শিশুদের ঠা-াজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। গত তিন দিন ধরে বহিঃবিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে গড়ে প্রায় ৫শ’ রোগী। আর শিশু ওয়ার্ডে ১৫ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত ৭০ শিশু। ফলে মেঝেতে থেকেও চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে অনেক রোগীকে। আবার ওয়ার্ডে জায়গা না পেয়ে বারান্দায় ঠাঁই হয়েছে অনেক শিশুর। শয্যার বিপরীতে কয়েকগুন বেশি রোগী থাকায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তার-নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের। বহিঃবিভাগেও ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অনেক শিশুকে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে শিশু রোগীর সংখ্যা। জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ ঠা-াজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বৃষ্টি শেষ হলে শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়টাতে শিশুদের প্রতি আরও বেশি যতœ নিতে হবে। শিশুরা অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময় পেরিয়ে গেলেও চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া অনেকটাই উষ্ণ ছিল। তবে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা তিন দিন ধরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে হঠাৎ করেই তাপমাত্রা কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। হঠাৎ করেই আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারণে শিশুদের মধ্যে ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। গরম থেকে ঠা-া আবহাওয়ার কারণেই শিশুরা জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ঠা-াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সোমবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৭০ শিশু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। আর বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন সাড়ে ৪শ’ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে ১৫ শয্যার বিপরীতে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৭০ শিশু। প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের মেঝেতে রেখেও চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। শুধু মেঝেতেই নয়, থাকতে হচ্ছে বারান্দাতেও। সেখানে কর্মরত নার্স ও ওয়ার্ড বয় বলছেন, হঠাৎ করেই শিশু রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় তারা সেবা দিতে বিপাকে পড়ছেন। হাসপাতালটির বহির্বিভাগেও শিশু রোগীর চাপ বেড়েছে বলে জানালেন তারা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশু রোগীর চাপ বেড়েছে। ওয়ার্ডে ও বহির্বিভাগে রোগী চাপ কয়েক গুণ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। ডা. মিলন আরও বলেন, বৃষ্টি শেষ হলে আবার শিশুদের মধ্যে রোটাভাইরাসের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে পারে। তাই শিশুদের আরও বেশি যতœ নিতে হবে এই সময়টিতে। শিশুরা অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Comments (0)
Add Comment