দূতাবাসের ছাড়পত্র না পাওয়ায় রোববার ফিরতে পারেনি ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশীরা

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে  রোববার ( ১৬ মে )দেশে ফিরতে পারছেন না ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশী নাগরিকরা।  দূতাবাসের ছাড়পত্র (এনওসি) না পাওয়ায় দেশে ফেরার অনুমতি পাননি তারা। রোববার দুপুর পর্যন্ত এ চেকপোস্ট দিয়ে কোন বাংলাদেশী নাগরিক দেশে আসেননি। বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের দেশে ফেরার কথা ছিল।  এ উপলক্ষে সব ধরণের প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছিল।  দর্শনা ইমিগ্রেশন সূত্র জানিয়েছে, ভারতের দূতাবাস থেকে অনাপত্তি পত্র (এনওসি) না পাওয়ায় দেশে প্রবেশ করতে পারেনি সেখানে আটকে পড়া বাংলাদেশী নাগরিকরা। রোববার (১৬ মে) দুপুর পর্যন্ত ভারতের হাইকমিশন থেকে কাউকে ছাড়পত্র বা এনওসি দেয়া হয়নি। ফলে দেশে আসার অনুমতি পাননি তারা।  তবে ছাড়পত্র ও করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলেই তাদেরকে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন।

করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীন জানান, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে ভারতে গিয়ে আটকা পড়েছে বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী নাগরিকরা। দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে এমন প্রায় ৩ শতাধিক বাংলাদেশী যাত্রীদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।  আজ রোববার থেকে তাদের দেশে প্রবেশের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়।  দেশে প্রবেশের পর দর্শনা চেকপোস্টে তাদেরকে হেলথ স্ক্রিনিং ও করোনা পরীক্ষা করা হবে। করোনাভাইরাস পরীক্ষায় করোনায় আক্রান্তদের রাখা হবে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে। এছাড়া আগত সবাইকে রাখা হবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে। তিনি আরও জানান, দূতাবাসের ছাড়পত্র না থাকায় আজ রোববার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে কেউ দেশে আসতে পারেননি।  তবে আগামীকাল সোমবার তাদের দেশে প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে। দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এস আই) আব্দুল আলিম জানান, ভারত থেকে দেশে আসা বাংলাদেশীদের আগমন উপলক্ষে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।  দেশে প্রবেশের পর দর্শনা চেকপোস্টে তাদেরকে হেলথ স্ক্রিনিং ও করোনা পরীক্ষা করা হবে। করোনা শনাক্তদেরকে রাখা হবে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে। এর আগে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কিত চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।  সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দর্শনা চেকপোস্টে প্রবেশের পর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদেরকে সেখানেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত রোগীদেরকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে নেয়া এবং বাকীদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। কোয়ারেন্টিন সেন্টার হিসেবে প্রাথমিকভাবে নার্সিং ইনস্টিটিউট ও দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে নির্বাচন করা হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নির্ধারিত পরিবহনে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন সেন্টারে যাত্রীদেরকে পৌঁছানো হবে। কোয়ারেন্টিনে অবস্থানকালীন সকলকেই থাকা ও খাওয়ার খরচ বহন করতে হবে। দেশে প্রবেশকারীদের পাসপোর্ট পুলিশ হেফাজতে থাকবে। কোয়ারেন্টিন শেষে সিভিল সার্জনের ছাড়পত্রের পর পাসপোর্ট ফেরত দেয়া হবে। পুরো প্রক্রিয়া তদারকির জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীনকে প্রধান করে সাত সদস্যের মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।  কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা) আবু রাসেল,  সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. আওলিয়ার রহমান, চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি প্রতিনিধি, জেলা গ্রাম প্রতিরক্ষা ও আনসার বাহিনীর প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন ও জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিন মুক্তা।

 

 

 

 

Comments (0)
Add Comment