চুয়াডাঙ্গায় তরতর করে নামছে তাপমাপা যন্ত্রের পারদ

উত্তরে হিমেল হাওয়ায় বয়ে আনছে কনকনে শীত
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় কনকনে শীত অনুভুত হচ্ছে। গতরাত থেকে তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে শুরু করেছে। গতকাল রোবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গাসহ পাশর্^বর্তী এলাকায় সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। দুপুরে ঝলমলে রোদ দেখা দিলেও তাতে তাপমাত্রা খুব একটা বাড়াতে পারেনি। বরঞ্চ চুয়াডাঙ্গায় গত পরশুদিনের তুলনায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপ আরও দেড় দু ডিগ্রি হ্রাস পেয়ে ২০ দশমিক ৮ এবং সর্বনি¤œ ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। গতরাত ৩টায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা আরও কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমেছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, উপ মহদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগেের রয়েছে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। উত্তর ও উত্তর পশ্চিম থেকে শীতল বাতাস বয়ে যাচ্ছে। প্রবাহমান শৈত্যপ্রবাহ আরও বিস্তৃত হতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভবনা রয়েছে। তবে রাতের তাপমাত্রা ৪৮ ঘণ্টায় ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে। ৫ দিনে সামান্য পরিবর্তনের সম্ভবনা রয়েছে। দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা গতকাল রোববার শ্রীমঙ্গলে ৯ দশমিক ১ ও সর্বোচ্চ টেকনাফে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় রোববার রাত থেকে তাপমাত্রা আরও কমবে। একই সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের এলাকাও বিস্তৃতি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, বাংলাদেশের আকাশ থেকে মেঘ সরে যাওয়ায় দিনে রোদ বাড়তে শুরু করেছে। আর রাতে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে শীত বাড়ার পাশাপাশি শৈত্যপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। যার মধ্যে একটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ রূপ নিতে পারে। চুয়াডাঙ্গা যশোর ঈশ^রদীসহ পাশ^বর্তী এলাকা জুড়ে তরতর করে নামছে তাপমাত্রা।
জানাগেছে, বড় এলাকাজুড়ে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দেশে এখন কাগজে কলমে শৈত্যপ্রবাহ নেই। তবে উত্তরে হাওয়া বেশি থাকায় ও কুয়াশার দাপটে শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে। এ অনুভূতি থাকে বেশি রাতে ও সকালে। এমন আবহাওয়া আরও দু’দিন থাকবে। তবে দু’তিন দিন পরে শীতের তীব্রতা কমতে থাকবে। এসময় দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় আরেকদফা শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত ২-১ দিনে তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি পর্যন্ত কমেছে। শীতের পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে কুয়াশা বেশি বেড়েছে। আগামী কয়েক দিন উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তথা চুয়াডাঙ্গা ঈশ^রদী এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ ছড়াতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, যশোর, তেঁতুলিয়া, রংপুর, রাজশাহী, নওগাঁর বদলগাছী, চট্টগ্রামের সীতাকু-, সন্দ্বীপ, মাদারীপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১-১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরে তীব্র শীতে দুস্থ শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।

Comments (0)
Add Comment