যেখানেই হোক পেশিশক্তি কখনোই কল্যাণ বয়ে আনেনি

কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। হামলা পাল্টা হামলায় উত্তেজনার পারদ চড়ছে। অবাক হলেও সত্য যে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ পিতার সেবা শুশ্রূষা করতে গিয়েও ছেলে প্রতিপক্ষের হামলায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে পাশে থাকা মামাকেও হতে হয়েছে রক্তাক্ত জখম। এর আগে পর পর দু’দিন সন্ধ্যায় ও রাতে হামলা পাল্টা হামলায় একজন স্কুলছাত্রসহ দুজন রক্তাক্ত জখম হয়েছে। এসব বিষয়ে থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগও পেশ করা হয়েছে। পুলিশ বলছে তদন্ত চলছে। দিন যতোই যাচ্ছে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাকুপির মধ্যে রাজনীতির প্রভাব ততোই স্পষ্ট হচ্ছে। পুলিশ দ্রুত সোচ্চার না হলে পরিণতি কতোটা ভয়াবহ হতে পারে তা অনুমান করলেও শরীরের রোম শিউরে ওঠে। উঠছে।

ঘরে বাইরে রাজপথে বা জাতীয় সংসদের ঘোরানো প্যাঁচানো সিঁড়ি, যেখানেই হোক পেশি শক্তি কখনোই কল্যাণ বয়ে আনেনি। ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে সুবিধা নেয়া গেলেও আখেরে তারও করুণ পরিণতি অনিবার্য হয়ে ওঠে। ইতিহাস অন্তত তাই বলে। এরপরও হামলা, খুন রাহাজানি কেন? এসব কখন বাড়ে? পেশিশক্তি প্রয়োগে প্রভাব প্রতিপত্তি পাওয়ার আশায় পরিবেশ পরিস্থিতি যখন অনুকূল হয়ে দাঁড়ায় তখন। তবে কি চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি তেমন? বিতর্ক থাকলেও যুক্তির খাতিরে এটুকু নিশ্চয় বলা অবান্তর নয়, পেশিশক্তি প্রয়োগকারীরা অবশ্যই তেমনই ভাবছে। এভাবনার স্থায়িত্ব কতটা তা নির্ভর করছে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে পুলিশের কর্তব্যপরায়ণতার ওপর। আইন নিশ্চয় কারোর চোখের ইশরায় চলে না, চলার কথাও নয়। আইন আইনের গতিতে চললে পুলিশি সক্ষমতা ফুটে ওঠাই সঙ্গত। তাতে ঘাটতি মানেই সমাজের ক্ষতি।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যে যুবকের পিতা চিকিৎসাধীন, তার ওপর হামলা হয়েছে হাসপাতাল প্রাঙ্গণেই। এর আগেও হামলার শিকার হয়েছে সে। তার বিরুদ্ধে যতো অভিযোগই থাক, তার ওপর হামলা চালানোর অধিকার আইন কাউকে দেয়নি। হামলা পাল্টা হামলার মধ্যদিয়ে যারা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তটস্থ করে তুলেছে চুয়াডাঙ্গা, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নেয়া প্রয়োজন। আইন অবজ্ঞা করে যারা তারা অপরাধী। ওরা সব সময়ই ক্ষমতার ছায়া খোঁজে। ছায়া নিয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠে। প্রশ্রয় না পেলে ওরা যেমন ভয়ানক হয় না, তেমনই পরিবেশ সুন্দর থাকলে দায়িত্বশীলদের প্রতি সমাজের শান্তিকামী মানুষগুলো সন্তোষ প্রকাশ করে। ব্যতিক্রমে দংশিত বিবেক অসভ্যতা থেকে মুক্তির জন্য হাপিত্যেস করে। স্বস্তির জন্য অস্থির হয়।

Comments (0)
Add Comment