শিক্ষা কার্যক্রম ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার পদক্ষেপ নিতে হবে

গত কয়েক বছর ধরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই নিয়ে নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ বছরও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক কমিটির (এনসিটিবি) পাঠ্যবই নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বছরের প্রথম দিন থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা সব বই হাতে পেয়েছে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে। এ দীর্ঘ সময় বই না পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। এদিকে নতুন বছরে স্কুলের ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সব মিলে পুরো বছরে ১৫৮ দিন ছুটি থাকছে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে। সেই হিসাবে পাঁচ মাসের বেশি ছুটি থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ১০ এপ্রিল শুরু হয়েছে এসএসসি পরীক্ষা, চলবে ১৩ মে পর্যন্ত। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে, সেখানে নিয়মিত ক্লাস নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ঈদুল আজহার ছুটির পর শুরু হবে এইচএসসি পরীক্ষা। তখনো পরীক্ষার কারণে ক্লাসের বিঘœ ঘটবে। যথাসময়ে বই না পাওয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ছুটি থাকায় শিক্ষা কার্যক্রমে যে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে, তা কাটিয়ে ওঠার পদক্ষেপ নিতে হবে। বছরের প্রথম কয়েক মাস এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো ক্লাস না হলে পরবর্তী সময়ে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও স্কুল বন্ধ রাখতে হয়। শিক্ষাবিদদের মতে, বছরজুড়ে দীর্ঘ ছুটি থাকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে গুণগত শিক্ষার মান নিশ্চিত করা এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে শিশুরা মোবাইল ফোনসহ নানা ডিভাইসের প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে। এমন প্রেক্ষাপটে শনিবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা উচিত বলে মনে করেন অনেক শিক্ষাবিদ ও অভিভাবক। মানহীন ও ভুলে ভরা পাঠ্যপুস্তক নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কাজেই মানসম্মত ও ত্রুটিমুক্ত বই প্রকাশে কর্তৃপক্ষকে আরও আন্তরিক হতে হবে। এসব পাঠ্যবই নিয়ে যাতে কোনোরকম দুর্নীতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীরা যাতে সফল হয়, সেজন্য যা যা করা দরকার সবই করতে হবে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় হারিয়ে যায়। এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।