করোনার উপসর্গ নিয়ে কালীগঞ্জে নৈশপ্রহরীর মৃত্যু

কবর খননে রাজি হয়নি কেউ : কবর খুঁড়ে দাফন করায় প্রশংসায় ভাসছেন তরুন আলেমগণ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাশীপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে করোনা উপসর্গে মৃত শুকুর আলীর (৫৫) লাশ পড়ে ছিলো। গত বৃহস্পতিবার মৃতের দাফনকার্য সম্পাদন করতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ৮ তরুন আলেম সকালেই গিয়েছিলেন ওই বাড়িতে। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা অপেক্ষার পর একটি অ্যাম্বুলেন্স ম্যানেজ হলে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় মৃতের নিজ বাড়ি উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের ঘোপপাড়া গ্রামে। কবর খোঁড়ার লোকও পাওয়া গেলো না সেখানে। অগত্যা আলেমগণ নিজেরাই কবর খোঁড়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কেউ কোদাল পর্যন্ত দিতে চাইলো না। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুর সহযোগিতায় একটি কোদাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। একাধারে ৬-৭ ঘণ্টা পিপিই পরে উপজেলার ঘোপপাড়া নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে লাশের দাফনকার্য সম্পাদন করায় প্রশংসায় ভাসছেন তরুন আলেমগণ। তরুন আলেম মুফতি ফারুক নোমানী বলেন, মৃতের বাড়িতে আমাদের প্রায় ৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে লাশ বহনের গাড়ি আসার অপেক্ষায়। ৫ ঘণ্টা পর উপজেলার বড় রায়গ্রামের হাসান নামের এক অ্যাম্বুলেন্স চালক তার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসায় শুকুর আলীর মৃত দেহ তার গ্রামের বাড়ি ঘোপপাড়া নেয়া সম্ভব হয়েছে।” তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মানুষ চিরজীবন বাঁচতে চায়। করোনার ভয়ে এলাকার লোকজন কবর খোঁড়ার জন্য কোদাল পর্যন্ত দিতে চাইলো না। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুর সহযোগিতায় একটি কোদাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। মৃত্যের দাফন সম্পন্ন করতে বেলা দেড়টা পর্যন্ত পিপিই পরে থাকতে হয় তাদেরকে। আজ অনেক কষ্ট হয়েছে, তারপরও মৃতের পাশে থাকবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা। লাশ দাফনের কাজে গাড়ি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদীর যোগান দিতে সমাজের বিত্তবান ও কর্তা ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। লাশ দাফনকার্যে অংশ নেন মাও. রুহুল আমিন, মুফতি ফারুক নোমানী, হাফেজ হেদায়েতুল্লাহ, মাও. তরিকুল ইসলাম, মাও. ইয়াসিন আলী, মাও. নাজির আহমাদ, হাফেজ দিনার ও মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান। করোনার উপসর্গ নিয়ে ঢাকা থেকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এসে শুকুর আলী (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে কালীগঞ্জ পৌরসভার কাশিপুর গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। মৃত শুকুর আলী কালীগঞ্জের ঘোপপাড়া গ্রামের মৃত মসলেম উদ্দীনের ছেলে। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ির একটি তেল ফ্যাক্টরীর নৈশ প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট ছিলো। এছাড়া তিনি ডায়াবেটিস রোগেও ভুগছিলেন।

Comments (0)
Add Comment