স্টাফ রিপোর্টার: শ্রমিক অসন্তোষের কারণে টানা তিন সপ্তাহের বেশি সময়ধরে বন্ধ রয়েছে কুষ্টিয়ায় বিএটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা (গ্রিন লিফ থ্রেশিং প্ল্যান্ট জিএলটিপি)। উন্মুক্ত আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে কারখানা চালুর ক্ষেত্রে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনার উদ্দেশ্যে গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গায় সাধারণ তামাক চাষিদের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার কৃষক বিএটিবি’র সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জমিতে তামাক চাষ করেছেন। কিন্তু তামাক মৌসুম শুরু হয়ে গেলেও, বন্ধ রয়েছে কারখানার কার্যক্রম। ফলে, নিজেদের উৎপাদিত তামাক নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। সঠিক সময়ে তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করা না গেলে পাতার গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে। তখন আর কৃষকরা এ পাতা বিক্রি করতে পারবেন না, যা তাদের ভয়াবহ আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলবে। দুপুরের দিকে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নিজেদের দাবি নিয়ে জড়ো হন স্থানীয় তামাক চাষীরা। এসময়ে বিভিন্ন সেøাগানসহ প্ল্যাকার্ড হাতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। মানববন্ধনে অংশ নেয়া কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আর কোন উপায় না পেয়ে, আমরা এ মানববন্ধন আয়োজন করেছি। আমরা যদি আমাদের ফসল বিক্রি করতে না পারি, তাহলে বছরের বাকিটা সময় আমাদের নাখেয়ে থাকতে হবে। কারখানা চালু করতে আমরা প্রশাসনের সাহায্য চাই।’ আরেক কৃষক মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, “আমরা মৌসুমে চুক্তি নিয়ে কাজ করি। এতোদিন জমিতে আমরা শ্রম, সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করেছি। আমাদের অনেককেই ঋণও নিতে হয়েছে। এখন যদি এ তামাক বিক্রি করতে না পাড়ি, তাহলে আমাদের গিয়ে পথে বসতে হবে। আমরা প্রশাসনের কাছে এর সমাধান চাই।’ এর আগে, গত১৪ মে, বুধবারে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুরের এবং পাশ্ববর্তী এলাকার কৃষকরা কারখানা চালু করার দাবিতে মানববন্ধন করেন। উল্লেখ্য, মরসুমি শ্রমিকদের দাবির ভিত্তিতে শুরু হয় আন্দোলন, যার প্রেক্ষিতে কারখানার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় বিরটি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, বেশিরভাগ দাবি মেনে নিতে ইতোমধ্যেই নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও কিছুস্বার্থান্বেষী মহল শ্রমিকদের অসৎ উদ্দেশ্যে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। এমনকি আন্দোলনে অংশ নিতে না চাওয়া শ্রমিকদেরও বাধ্য করা হচ্ছে আন্দোলনে যোগ দিতে।