টানা দ্বিতীয় দিনে মৃত্যু ৪২ : শনাক্ত ২ হাজার ৭৩৫

দেশে প্রতিদিনেই করোনায় বাড়ছে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা
স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশে করোনাভাইরাস থাবা বিস্তার করে চলেছে। প্রতিদিনেই বাড়ছে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে আক্রান্তের হার ২১ শতাংশের নিচে নামছেই না। গত ২৪ ঘণ্টায় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো করোনায় ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৩০। একই সময়ে নতুন করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৭৩৫ জন। সারা দেশে এখন মোট শনাক্ত রোগী ৬৮ হাজার ৫০৪ জন। নতুন ৬৫৭ সহ মোট ১৪ হাজার ৫৬০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গতকাল সোমবার নিয়মিত বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।
বুলেটিনে জানানো হয়, সারা দেশে ৫২টি পরীক্ষাগারে ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৯৬১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৯৪৪টি। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজার ৯৩১টি। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ। আর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ, মৃতের হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। শনাক্তের বিশ্লেষণে পুরুষ ৭১ ও নারী ২৯ শতাংশ। আর মৃত্যু পুরুষ ৭৭ এবং নারী ২৩ শতাংশ।
নাসিমা সুলতানা বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ, ৯ জন নারী। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩০ জন এবং বাসায় ১২ জন। অঞ্চলভিত্তিক ঢাকা বিভাগে ২৫ জন, ৮ জন চট্টগ্রাম ১ জন সিলেট, ১ জন রাজশাহী, ২ জন খুলনার, ২ জন ময়মনসিংহ, ২ জন বরিশাল ও ১ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৪২ জনের মধ্যে ২ জনের বয়স ছিলো ৯০ বছরের বেশি। এছাড়া ২ জনের বয়স ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১২ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ১০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১ জনের ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ছিলো ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২৯৭ জন। ছাড় পেয়েছেন ১৪৪ জন। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে গেছেন ১১ হাজার ৮৭১ জন। মোট ছাড় পেয়েছেন ৪ হাজার ৩১৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৭ হাজার ৫৫২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ২২৮ জন। এ পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৫ জন। ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৫২ সহ মোট ২ লাখ ৪৭ হাজার ৩৫৩ জন ছাড় পেয়েছেন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৬ হাজার ৭২ জন।
নাসিমা সুলতানা জানান, চীন থেকে একটি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে সফরে এসেছেন। তারা বাংলাদেশে ১৪ দিন অবস্থান করবেন। এই সময় তারা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন কোভিড-১৯ হাসপাতাল, কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র ও ল্যাব পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ব্যবস্থাপনাসহ তাদের অভিজ্ঞতা ও মতবিনিময় করবেন। সারা দেশে অনলাইন সভার মাধ্যমে কথা বলবেন। এই দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপমহাপরিচালক ও চিফ ফিজিশিয়ান।
গত রোববারের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ জন মারা গেছেন, যা এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। ১৩ হাজার ১৩৬টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরো ২ হাজার ৭৪৩ জনের মধ্যে। সেই হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও মৃত্যু হয়েছে সমানসংখ্যক। দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে ২ হাজার ৯১১ জনের, যা গত ২ জুনের বুলেটিনে জানানো হয়। গতকালের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ২৯৭ জনকে। এ প?র্যন্ত আসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১১ হাজার ৮৭১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৪৪ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ হাজার ৩১৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৭ হাজার ৫৫২ জন।

Comments (0)
Add Comment