বাংলাদেশে তিন দিনের শুভেচ্ছা সফরে মার্কিন নৌবাহিনীর ‘ইউএসএস ফিৎসজেরাল্ড’: দুই দেশের সামুদ্রিক সহযোগিতার নতুন অধ্যায়

স্টাফ রিপোর্টার:বাংলাদেশের জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘ইউএসএস ফিৎসজেরাল্ড’ এসে পৌঁছেছে, শুরু হলো তিন দিনের একটি বিশেষ শুভেচ্ছা সফর। বুধবার বেলা শেষে বাংলাদেশে আগমনের খবর নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।

এই সফর উপলক্ষে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর ‘বানৌজা আবু উবাইদাহ’ জাহাজটি আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ‘ইউএসএস ফিৎসজেরাল্ড’-কে স্বাগত জানায়। উভয় পক্ষের নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা আন্তরিক সৌজন্য সাক্ষাত করেন এবং পেশাগত অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময়ের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

আইএসপিআর জানায়, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো দুই দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও সহযোগিতা জোরদার করা। সরাসরি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নৌসদস্যরা পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি করবে এবং উন্নত বিশ্বের সামুদ্রিক প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর সুযোগ পাবে। এর ফলে বাংলাদেশের নৌবাহিনী আধুনিকীকরণের পথে আরও এগিয়ে যাবে।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক জলের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার বর্তমান বিশ্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের মতো একটি উপকূলীয় দেশ হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। মার্কিন নৌবাহিনীর এই শুভেচ্ছা সফর কেবল কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করাই নয়, বরং সামুদ্রিক নিরাপত্তায় সহযোগিতা ও প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। এটি বাংলাদেশের নৌবাহিনীর জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা অর্জনের বিশেষ সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য, ২০২২ সালে আগেও এই ধরনের একটি শুভেচ্ছা সফর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সফরের মতোই এইবারও আশা করা যাচ্ছে, দুই দেশের নৌকর্মীদের মধ্যে মতবিনিময়, প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে। এর মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সঙ্গে সঙ্গে সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে সমন্বয় বৃদ্ধি পাবে।

‘ইউএসএস ফিৎসজেরাল্ড’ জাহাজটি আগামী শুক্রবার বাংলাদেশের জলসীমা ত্যাগ করবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে। এই সফর শেষে দুই দেশের সামরিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক বার্তা গড়ে উঠবে, যা ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপন করবে।

বাংলাদেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এই ধরনের শুভেচ্ছা সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল সামরিক পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যম নয়, বরং আন্তর্জাতিক জলসীমায় শান্তিপূর্ণ সহযোগিতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করবে। একই সঙ্গে এটি দেশের নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ ও দক্ষতা বৃদ্ধি করবে, যা সামগ্রিকভাবে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।