খোশ আমদেদ মাহে রমজান

।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।

খোশ আমদেদ মাহে রমজান

।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।

পবিত্র মাহে রমজানের মাগফেরাতের দশকের আজ সপ্তম দিন। রমজান মাস নেকী অর্জনের মাস। এই মাসে প্রতিটি নেক আমলের ছওয়াবকে কমপক্ষে সত্তর গুণ বৃদ্ধি করা হয়। এজন্য এই মাসে দান-খয়রাত করলে অথবা যাকাত দিলে অন্য মাসের চেয়ে অনেক গুণ বেশি ছওয়াব পাওয়া যাবে। যাকাত দেয়ার সময় যদিও রমজানের সঙ্গে সম্পর্কিত না, তারপরও অনেকে বাড়তি ছওয়াব হাসিলের জন্য এই মাসে যাকাত দিয়ে থাকেন। যাকাত হলো মালের ওপর গরিবের হক বা অধিকার, এটা কোন অনুগ্রহ নয় যে দিলাম বা দিলাম না। এই হক মহান আল্লাহ জাল্লা শানুহই ঠিক করে দিয়েছেন। যাকাত কে আল্লাহ তায়ালা বিত্তবানদের ওপর ফরজ করেছেন। কুরআন শরিফে বার বার আদেশ করা হয়েছে নামাজ কায়েম করো, যাকাত আদায় কর। যাকাত আদায় করলে মাল পবিত্র হয়। আর যাকাত আদায় না করলে সম্পূর্ণ মালের ভেতর নাপাকি লেগে থাকে। আল্লাহপাক এরশাদ করেন, তাদের সম্পদ হতে যাকাত গ্রহণ করবে। এর দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র করবে এবং পরিশোধিত করবে (সূরা তওবা: ১০৩)। যাকাত দিলে যেমন মালের পবিত্রতা হাসিল হয়, ঠিক তেমনি দ্বীলের পবিত্রতাও হাসিল হয়। তাছাড়া, যাকাত কে ইসলামের পাঁচটি বুনিয়াদ বা ভিত্তির একটি বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। আমরা বিত্তবানরা যদি নিয়মিত যাকাত দিই তাহলে সমাজে কোন অভাবী, গরিব থাকতে পারে না, কেউ না খেয়ে মরতে পারে না। আজ সারা পৃথিবীতে দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে হৈ চৈ পড়ে গেছে। কিšুÍ ইসলামের এই সুমহান যাকাত ব্যবস্থা যদি চালু থাকে তাহলে সমস্ত দুনিয়ার মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এর প্রমাণ হযরত সাহাবায়ে কেরামের যুগ। ইসলামপূর্ব যুগে তদানিন্তন আরব সমাজে ছিল চরম অভাব-অনটন আর খাদ্যের জন্য হা হা কার। কিন্তু যখন যাকাত ব্যবস্থা চালু হলো তখন সমাজ থেকে অভাব এমনভাবে দূর হলো যে আর গরিব লোক পাওয়া যাচ্ছিলো না যাকে যাকাত দেয়া যায়। তবে যাকাত দেয়া সবার জন্য ফরজ নয়। যে পরিমাণ ধন-সম্পদ হলে যাকাত ফরজ হয় তাকে নিসাব বলে। রৌপ্যের নিসাব সাড়ে ৫২ তোলা এবং স্বর্ণের নিসাব সাড়ে সাত তোলা। নিসাব পরিমাণ ধন-সম্পদ বা অর্থ কারো কাছে পূর্ণ এক বছর কাল থাকলে তার ওপর যাকাত ফরজ হয়ে যায়। যাকাত না দিলে পবিত্র কুরআনে ধমকি প্রদর্শন করা হয়েছে যে জাকাত না দিলে মাল জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে তাদের ললাটে, পার্শ্বে ও পিঠে দাগ দেয়া হবে (বাকারা: ৩৪-৩৫)। তাই আসুন আমরা এই পবিত্র মাসে আমাদের যাকাত পরিপূর্ণভাবে আদায় করি এবং আমাদের মালকে পবিত্র করি।

(লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More