জমি নিয়ে বিরোধ : চাচার পা ধরেও বাঁচতে পারলেন না ভাতিজা

মাগুরার মহম্মদপুরে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে চাচার রামদায়ের কোপে ভাতিজা খুন হয়েছে। এ সময় চাচার পায়ে ধরে বাঁচার আকুতি জানিয়েও বাঁচতে পারলেন না ভাতিজা মাহফুজার মোল্যা (৪২)। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বানিয়াবহু গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে।
নিহতের চাচাতো ভাই ফারুক মোল্লা বলেন, আমার দাদীর জমি জাল দলিল করে দখলের চেষ্টা করেন চাচা কদম মোল্লা। এতে মাহফুজারের বাবা আফসার মোল্যাসহ আমরা চাচার এই কাজে বাধা দেই এবং দলিল জাল করায় আমরা ২০১৯ সালের শেষের দিকে মাগুরা আদালতে একটি মামলা করি। মামলায় চাচা কদমকে হাজতে পাঠায় আদালত। চারমাস জেল খাটার পর চাচা জামিনে বের হয়ে আসে। এরপর আমাদের বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকি দিতে থাকে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে বাড়িতে আমি ও চাচাতো ভাই মাহফুজার উঠানে বসেছিলাম। এর মধ্যে হঠাৎ ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে প্রতিপক্ষের লোকজন। এরপর চাচাতো ভাইদের কয়েকজন আমাকে ও মাহফুজারকে ধরে নিয়ে যায়। বাড়ির পাশে মাঠের ভিতরে নিয়ে চাচা কদম মোল্লা, তার ছেলেরাসহ তাদের লোকজন রামদা দিয়ে মাহফুজারের গায়ে কোপ দেয়। আমি ও মাহফুজার চাচার পা জড়িয়ে ধরে বাঁচার জন্য চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই চাচাতো ভাই মাহফুজার মারা যায়।
স্থানীয়রা জানান, কলিম উদ্দিন নামের একজন বাঁচাতে গিয়ে গুরুত্বর জখম হন। তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এছাড়া মান্নান (৫৫), হাসান (৩৫), জরিনা (৬০) ও গোলাম রসুলসহ (৫৮) কয়েকজন আহত হয়েছেন। তারা মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মাগুরা সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মাগুরা পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. হাফিজুর রহমান, মহম্মদপুর থানার ওসি নাসির উদ্দীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার মিজানুর রহমান জানান, সম্প্রতি বিরোধপূর্ণ জমি কদম মোল্লা ও তার লোকজন দখল করতে গেলে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার জন্য গত সোমবার উভয়পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকা হয়। আফসার মোল্যার লোকজন উপস্থিত হলেও কদম মোল্যার লোকজন উপস্থিত হয়নি।
মহম্মদপুর থানার ওসি নাসির উদ্দীন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাছাড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More