ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর সাফদালপুরে দুটি মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ

৯ ঘণ্টা পর খুলনার সঙ্গে রেলযোগাযোগ স্বাভাবিক

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি: ৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর খুলনার সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন লাইনচ্যুত ট্যাংকারগুলো উদ্ধার করলে গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর সাফদালপুর স্টেশনে দুটি মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ৫টি ট্যাংকার লাইনচ্যুত হয়।

সংশ্লিষ্ট কোটচাঁদপুর স্টেশনমাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, দর্শনা থেকে পাথরবোঝাই ও যশোর নোয়াপাড়া থেকে মালবাহী ডিজেল তেলবোঝাই ট্রেন দুটি সিগন্যাল অমান্য করে একই লাইনে ঢুকে পড়ে। এ সময় বিকট শব্দে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫টি ট্যাংকার লাইনচ্যুত হয়। বগি লাইন থেকে পড়ে যাওয়ার ফলে বিপুল পরিমাণ ডিজেল তেল এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন লাইনচ্যুত ট্যাংকারগুলো উদ্ধার করলে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তিনি আরও জানান, চালকের অসতর্কতার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

কোটচাঁদপুর ফায়ার স্টেশনের অফিসার আব্দুর রাজ্জাক জানান, দর্শনা থেকে খুলনাগামী পাথরবোঝাই (মালবাহী) ট্রেনটি স্টেশনে অপেক্ষায় ছিলো। বিপরীত দিক থেকে আসা তেলবোঝাই মালবাহী ট্রেনটি ওই ট্রেনে আঘাত করে। এ সময় তেলবোঝাই ট্রেনের ৫টি ট্যাংকার লাইনচ্যুত হয় এবং তিনটি ট্যাংকার ফেটে তেল বের হতে থাকে। খবর পেয়ে রাত ৩টার দিকে দমকল বাহিনীর সদস্যরা সেখানে আসেন। এরপর থেকে এলাকার সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় ধূমপান ও আশপাশের বাড়িঘরে আগুন জ্বালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মাইকিং করা হয়। বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কায় এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, রেললাইনের ধারের খানাগর্ত তেলে ভর্তি হয়ে যায়। দ্রুত ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণ না করা হলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। সাধারণ মানুষ ছড়িয়ে পড়া তেল লুটে নিচ্ছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। এদিকে ঈশ্বরদী রেলওয়ে কন্ট্রোলরুম থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থলে কর্মকর্তারা অবস্থান করছেন এবং তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুস সোবহানকে।

রেলের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, সকাল ৬ টার দিকে ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা উদ্ধার কাজ শেষে প্রধান লাইন মেরামত ও লাইনচ্যুত হওয়া ওয়াগন উদ্ধারের পরে দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা পর সকাল ১১ টায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় খুলনা থেকে পার্বতীপুরগামী কেপি ২১ আর ট্রেনের চালক আনিছুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি।

এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রেল মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাড. শফিকুল আজম খাঁন চঞ্চল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কোটচাঁদপুর সার্কেল) মোহাইমিনুল ইসলাম, কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুন্নেছা মিকি, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলীসহ রেলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More