নৌকার সিল হবে টেবিলে এবং ওপেন

স্টাফ রিপোর্টার: ‘নৌকার সিল হবে ওপেন এবং টেবিলে। একের অধিক সিল মারতে হবে। পুলিশ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা কিছু করতে পারবেন না।’ কথাগুলো মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এম খালেকের। তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সম্প্রতি মেহেরপুরের গাংনীর ষোলটাকা ইউনিয়নের পথসভায় দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি এমন বক্তব্য দেন। এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তৃতীয়ধাপের ইউপি নির্বাচনে ষোলটাকা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন দেলবার হোসেন। দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন আনোয়ার পাশা।
১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে এম এম খালেককে বলতে দেখা যায়, ‘নৌকার সিলটি আমরা টেবিলে দেব আর সদস্যের সিলটি গোপন কক্ষে দেব। এখানে পুলিশ, প্রশাসন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা যারা আছেন, তাদের কিছু করার নেই। তাদের কিচ্ছু বলার নেই। আমি ভোট দেব টেবিলে দেব, ওপেন দেব। যদি প্রশাসন বাধা হয়ে দাঁড়ায়, আমরা লন্ডনে থাকবো না। আপনাদের আশপাশেই থাকবো। ফোন খোলা থাকবে। আপনারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আপনাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং আছেন। আমাদের মন্ত্রী আছেন, এমপি আছেন। গণ্যমান্য নেতারা আছেন। আপনাকে ভোট দেয়ার সময় যদি কেউ ঠেলা দেয়, তবে আপনিও তাকে ঠেলা দেবেন। আপনারা সেন্টার নিয়ন্ত্রণে নেবেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের দুজন নেতা বলেন, এভাবে দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যদি চলমান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো বক্তব্য দেন, তাতে দলের মর্যাদা ক্ষুণœ হয়। ভোটারদের মধ্যে আস্থাহীনতা কাজ করে। ভোটাররা ভোট দিতে নিরুৎসাহিত হন। অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশনা রয়েছে।
ষোলটাকা ইউপির বিদ্রোহী প্রার্থী আনোয়ার পাশা বলেন, এভাবে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা যদি প্রকাশ্যে সিল মারার ঘোষণা দেন, তবে নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া কঠিন। পুলিশ ও নির্বাচন কার্যালয়ে অভিযোগ দেয়ার কার্যক্রম চলছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক বলেন, নির্বাচনে বিভিন্ন পথসভায় নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করার জন্য বক্তব্য দেয়া হয়। বিরোধীপক্ষের কর্মীরা সেসব বক্তব্যের ভিডিও সংযোজন-বিয়োজন করে অপপ্রচার চালাতে ব্যবহার করছে। দলের মধ্যে যারা বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে মেহেরপুর সদর ও গাংনী উপজেলার ছয়টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ছয়টি ইউপিতে একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী আছেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু আনসার বলেন, চলমান নির্বাচনে গাংনী উপজেলা থেকে তেমন কোনো প্রার্থীর অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More