প্রবাসী শরিফুলের ৬ বিয়ে! চাঞ্চল্যের সৃষ্টি

স্টাফ রিপোর্টার: মাত্র ৩৮ বছর বয়সে ৬ বিয়ে করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী শরিফুল ইসলাম নামে এক প্রতারক। একে একে ৫টি মেয়ের জীবন নষ্ট করে গোপনে আবারো তিনি লুনা নামে এক যুবতীর সঙ্গে বিয়ের পীড়িতে বসেছেন। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতারক শরিফুল ইসলাম হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের আবু তালেব মণ্ডলের ছেলে। এ ঘটনায় শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার পাঁচ নম্বর স্ত্রী শামীমা আরেফিন ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি ও আদালতে ৪টি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলায় শরিফুলকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ৬ষ্ঠ বিয়ের আগে প্রতারক শরিফুল হরিণাকুণ্ডু উপজেলার হিঙ্গেরপাড়া গ্রামের কমেলা খাতুন, একই উপজেলার রিশখালী গ্রামের মনির উদ্দীনের মেয়ে মমতাজ বেগম, ঝিনাইদহ সমতা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরিরত আনজিরা খাতুন, শৈলকুপার রিনা খাতুন ও ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়ার শামীমা খাতুনকে বিয়ে করেন। সর্বশেষ প্রতারক শরিফুল পাগলাকানাই ব্যাকা ব্রিজ এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে লুনা খাতুনকে বিয়ে করে সিঙ্গাপুর চলে গেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া নিজের চেহারাকে পুঁজি করে সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া যুবতীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন অর্থলোভী এই শরিফুল। হরিণাকুণ্ডু উপজেলার হিঙ্গেরপাড়া গ্রামের কমেলা খাতুনের ভাই ইউপি মেম্বার আলমগীর হোসেন জানান, তার বোনকে বিয়ে দেয়ার পর সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য দুই লাখের বেশি টাকা দিয়েছিলাম শরিফুলকে। বিদেশে যাওয়ার পর আরো টাকা দাবি করতে থাকলে নিজেরাই শরিফুলকে ত্যাগ করতে বাধ্য হই। তিনি অভিযোগ করেন শরিফুল একটা লম্পট ও অর্থলোভী। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে বহু নারীর জীবন নষ্ট করেছেন। রিশখালী গ্রামের ওহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তার বোন মমতাজকে বিয়ে দেয়ার সময় কোন যৌতুকের দাবি ছিল না। বিয়ের এক সপ্তাহ পর সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য তিন লাখ টাকা দাবি করে শরিফুল। এরপর তারা তার বোনকে তালাক নিয়ে নেন।

এদিকে ঝিনাইদহের আদালতে দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালে পাঁচ লাখ টাকার কাবিনে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শরিফুল সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে নববধূ শামীমার ওপর। টাকা না দিলে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে শরিফুল সিঙ্গাপুর চলে যায়। এ অবস্থায় স্ত্রী শামীমা শ্বশুরবাড়ি ও বাপের বাড়ি আসা যাওয়া করতে থাকে। বিদেশ থেকে শরিফুল ইসলাম মোবাইলে আরো ৫ লাখ টাকা দাবি করতে থাকে। এছাড়া তার পিতার সম্পত্তির ফারাজ বিক্রি করে তাকে দিতে বলেন। শামীমা এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় স্বামী শরিফুল। ২০২২ সালের ১৪ মার্চ দুপুরে তাকে নিতে আসেন ভাসুর শহিদুল, দেবর এনামুল, ননদ রুপালী খাতুন ও নোনদায় মামুনুর রশিদ। তিনি শ্বশুর বাড়িতে না গেলে কথা কাটাকাটি ও তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে তারা জোটবদ্ধ হয়ে মারধর করেন। শামীমার মা সালমা খাতুন জানান, বিয়ে করতে না করতে যে প্রতারক শ্বশুরের কাছে যৌতুক চান তার বিচার হওয়া উচিৎ। তিনি বলেন আমি শুনেছি শরিফুল এর আগে আরো ৪-৫টি বিয়ে করেছে। সে নিজের চেহারা ও সিঙ্গাপুরকে পুঁজি করে প্রতারণার জাল বিস্তার করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই আব্দুল হক জানান, শরিফুল শামীমাকে বিয়ে করেছিল এটা সত্য। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। তিনি বলেন শরিফুল ৫/৬টি বিয়ে করেছেন বলে তিনিও শুনেছেন। তিনি বলেন সর্বশেষ লুনা নামে একটি মেয়ে বিয়ের পর ঢাকায় আরো একটি বিয়ের খবর পেয়েছি। গোটা বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More