স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে জনসম্মুখে ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে কাকলী খাতুন (৩৫) নামে এক নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এসময় ট্রেনের ধাক্কায় ওই নারী গুরুতর আহত হয়েছেন। স্থানীয়রা কাকলী খাতুনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে রেফার্ড করেন। গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খুলনা থেকে চাপাইনবাবগঞ্জগামী মহানন্দ এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। আহত কাকলী খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের সোহেল রানার স্ত্রী এবং পার্শ্ববর্তী আমিরপুর গ্রামের দবির উদ্দিনের মেয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী তাজু ড্রাইভার দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, গতকাল সোমবার বিকেলে আমিসহ বেশ কয়েজন চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলাম। এসময় ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন থেকে আলমডাঙ্গা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। হঠাৎ দেখি একটা নারী রেললাইনের ওপরে দাঁড়িয়ে দুই হাত উঁচু করে আছে। স্থানীয়রা যাওয়ার আগেই ট্রেনের ধাক্কায় নিচে পড়ে যায়। এতে তিনি গুরুতর জখম হন। পরে কাকলী খাতুনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে কাকলীর কাছে থাকা মোবাইল থেকে তার পরিবারের নিকট খবর দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের ধারণা আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই সবার সামনে দুই হাত উঁচু করে ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। তিনি অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেছেন।
ওই নারীর স্বামী সোহেল রানা বলেন, আমার স্ত্রীকে সকাল থেকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। বিভিন্ন স্থানে খুঁজেও পাইনি। পরে শুনতে পাই আমার স্ত্রী হাসপাতালে। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আলমডাঙ্গা উপজেলার কোনো একজনের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমি কাজে গেলেই মোবাইল ফোনে কথা বলতো। আমি জেনে যাবো বলে তার মোবাইল ফোনটা ড্রয়ারে তালাবদ্ধ করে রাখতো। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার মিমাংসাও করা হয়েছে। আমার ছোট ছোট দুইটা ছেলে আছে। তাদেরকে রেখে সোমবার সকালে বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় নগদ পাঁচ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। আমার ধারণা ওই ছেলের সাথে আমার স্ত্রী চলে যাওয়ার কথা ছিলো। তবে তার নিকট থেকে টাকা ও স্বর্ণলংলারগুলো নিয়ে সটকে পড়েছে। তাই সে নিরুপায় হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, কাকলী খাতুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথা, কপালসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তার মাথা এবং কপালে ১০-১২টা সেলাই দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে এক নারী চলন্ত ট্রেনের সামনে দাঁড়িতে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। এখনও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। আমরা বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।