সব ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের উদার আন্তরিকতা চান গাংনীর মানুষ

গাংনী প্রতিনিধি: মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা উন্নয়নের শিখরে। মেহেরপুর সদর উপজেলাও সবসময় উন্নয়নে এগিয়ে। অথচ জেলার অর্ধেক অংশ নিয়ে গঠিত গাংনী উপজেলা এ দুই উপজেলা থেকে উন্নয়নে অনেক পিছিয়ে। জেলার অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে জেলার সার্বিক উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই গাংনী উপজেলাকে উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে জেলা প্রশাসকের উদার আন্তরিকতা চাইলেন গাংনীর বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গাংনী ইউএনও কার্যালয়ে নবাগত মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খানের সাথে মতবিনিময় সভায় এমন দাবি করা হয়। বক্তব্যে জেলা প্রশাসক গাংনীর উন্নয়নে গাংনীর মানুষের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। কোভিড-১৯ আমাদের কিছু সক্ষমতার জায়গা উন্মোচিত করেছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশ যেখানে কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে; সেখানে আমাদের অর্থনীতির ধারা সচল রয়েছে। সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজ করার আশা প্রকাশ করে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনায় ছিলেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ।

বক্তব্যে মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, ঐতিহাসিক কারণে মুজিবনগর উন্নয়নের শিখরে আর সদর হিসেবে মেহেরপুর বেশি সুবিধা পায়। গাংনী অবহেলিত। কখনও কখনও মনে হয়েছে সদর আর মুজিবনগর নিয়েই মেহেরপুর জেলা।

গাংনীর মানুষ একটু ভালবাসা পেলে অনেক আপন করে নিতে পারে উল্লেখ করে এমপি বলেন, আপনার হাত ধরে উন্নয়ন গতি আসবে। বন্যা না হলেও জেলার নতুন সমস্যা জলাবদ্ধতা। চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে ধরে জলাবদ্ধতার নিরসন করতে হবে। খালবিল ও নদী খননের দাবি করেন তিনি।

গাংনী উপজেলার উন্নয়ন কাজে জেলা প্রশাসক দফতরের কাজগুলো দ্রুত সম্পাদনের তাগিদ দিয়ে সাহিদুজ্জামান খোকন আরও বলেন, যুব উন্নয়ন, টিটিসি ও শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ হবে গাংনীতে। যার জন্য জেলা প্রশাসকের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আপনি চাইলে এ কাজগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু করা সম্ভব। উন্নয়ন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কাজগুলোতে জেলা প্রশাসকের উদার সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।

গাংনীর মানুষের নায্য পাওনা দেয়ার দাবি জানিয়ে গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক বলেন,  দেরিতে হলেও গাংনীর মানুষের সাথে জেলা প্রশাসকের এ মতবিনিময় সভার খুবই প্রয়োজন ছিলো। কারণ জেলার প্রায় অর্ধেক অংশ হচ্ছে গাংনী উপজেলা। মেহেরপুর জেলায় যিনি জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি ভাগ্যবান কেননা এটা ঐতিহাসিক জেলা।

সরকারি অনুদান ও সহায়তার ক্ষেত্রে গাংনী যেনো বঞ্চিত না হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাংনীর মানুষ যেনো আপনার কাছ থেকে কখনো বঞ্চিত না হয়। অনেক সময় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে খুশি করার জন্য অনেকে এখানে কম দিয়ে থাকেন। অথচ প্রতিমন্ত্রী মহোদয় কিন্তু এটা চান না। তাই যারা দায়িত্ব পালন করছেন তারা সঠিক বিচারের কাজ করবেন এ প্রত্যাশা গাংনীবাসীর।

সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন বলেন, আমরা সবসময় সহযোগিতা করবো। গাংনীর মানুষের প্রতি একটু বেশি নজর রাখবেন। আগের জেলা প্রশাসককে আমরা বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছি। আপনি গাংনীর মানুষের মন জয় করবেন তাহলে গাংনীর মানুষও আপনাকে মনে রাখবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মুন্তাজ আলী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদুল হক জুয়েল, গাংনী থানার ওসি তদন্ত সাজেদুল ইসলাম ও মটমুড়া ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ। উপস্থিত ছিলেন জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা ও সুধী সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More