অবসর জীবনে ৬২ বছর বয়সে এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করলেন ডা. তরুন কান্তি ঘোষ

স্টাফ রিপোর্টার: জীবনের সিংহভাগ সময় যিনি চুয়াডাঙ্গার রোগী সাধারণের সেবায় ব্যয় করেছেন তিনি হলেন গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. তরুন কান্তি ঘোষ। সেবার মানসিকতায় তিনি এতটায় যতœবান যে, অবসর জীবনে গিয়েও ৬২ বছর বয়সে এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন এই চিকিৎসক। এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের নিকট জানান, ১৯৯৪ সালে ডিজিডি ও এমসিপিএস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে কনসালটেন্ট গাইনী হিসেবে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যোগদান করেন। পরবর্তীতে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের মে মাসে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। মেডিকেল কলেজে যোগদান করার পর থেকে ইচ্ছা থাকা সত্বেও এফসিপিএস ডিগ্রিটি অর্জন করতে না পারার অনুশোচনা তিলে তিলে তাকে দগ্ধ করেছে। তাই অবসরে গিয়েও তার একান্ত ইচ্ছাশক্তি ও প্রাণপণ চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত ২০২১ সালের জুলাই মাসে এফসিপিএস ডিগ্রিটি অর্জন করেন। ডিগ্রিটি অর্জন করেন বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স এন্ড সাজর্নস (বিসিপিএস) থেকে।
অবসর জীবনে ৬২বছর বয়সে কেনো তিনি এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তরুন কান্তি ঘোষ সোজা সাপটা উত্তর দেন। তিনি বলেন, ‘১৯৯৪ সালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে মাত্র কয়েকটি বছর ছাড়া প্রায় ২০ বছরের বেশী সময় ধরে সেবার মানসিকতা নিয়ে চুয়াডাঙ্গাবাসীর পাশে ছিলাম। এখনও সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ভালো সেবা দেয়ার জন্য ভালো কিছু জানা লাগে। তাই এফসিপিএস ডিগ্রিটি অর্জন করলাম। দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জানা ও শেখার শেষ নেই। এছাড়া আমার এ দীর্ঘ চিকিৎসক জীবনে আমার জানামতে রোগী বা রোগীর নিকটজনদের সাথে আমার কোনো বাক-বিতন্ডা বা সম্পর্কের অবনতি ঘটেনি। তাই আমি মনে করি সকলের দোয়া আমার সাথে আছে। তবে যদি সুযোগ আসে ও সৃষ্টিকর্তা যদি সুস্থ রাখেন তাহলে এ অবসর জীবনে কোনো প্রাইভেট মেডিকেলে সেবা দেয়ার ইচ্ছা আছে। কারণ অর্জিত ডিগ্রিটির সদব্যবহার করতে চাই।’ এ ডিগ্রি অর্জন করায় চুয়াডাঙ্গার অনেক ক্লিনিক মালিক ও কনসালটেন্ট ডাক্তারগণ ফুলেল শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ডা. তরুন কান্তি ঘোষ নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার সুমেরুখোলা গ্রামের নিম্ন মধ্যবিক্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৬০ সালের ১৭ মে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ছিলেন প্রাইমারি শিক্ষক এবং মা ছিলেন গৃহিনী। অভাব অনাটনের সংসারে ১০ ভাই-বোনের মধ্যে ডা. তরুন ছিলেন নবম। স্বাভাবিক কারণেই বোঝা যায়, তিনি নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এবং সংসারের নানা প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে সংগ্রাম করে জীবনে সফল্য অর্জন করেছেন। এরপর ১৯৭৫ সালে এসএসসি, ১৭৭৭ সালে এইচএসসি ও ১৯৮৩ সালে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এমবিবিএস পাস করেন। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা আমার সেকেন্ড হোম। তাই এ জেলাবাসীকে ভুলে থাকা যাবে না।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More