একাই ডাক্তার ইমাম কবিরাজ : ঝাঁড়ফুক তাবিজে প্রতারণা

চুয়াডাঙ্গার বাটিকাডাঙ্গায় চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা

লাবলু রহমান: একবিংশ শতাব্দীতেও মধ্যযুগীয় কুসংস্কার। তাবিজ ঝাঁড়ফুক করে প্রতারণার ফাঁদে অনেকেই টাকা পয়সা হারিয়েছেন। কুসংস্কারচ্ছন্ন গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে একাই ইমামতির পাশাপাশি তিনি ডাক্তার ও কবিরাজির কাজ করছেন। বলা হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের বাটিকাডাঙ্গা দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হযরত আলীর কথা। তিনি গ্রামের বিভিন্ন মানুষকে ওষুধ দিয়ে দ্বিগুণ দাম নিচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি কবিরাজি করে থাকেন। শিশু বা বাচ্চাদের মাদুলি দিয়ে তাদের কাছ থেকে ৩৫১ টাকা হাদিয়া বা সদকার টাকা পকেটে ভরছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের বাটিকাডাঙ্গার দক্ষিণপাড়ার জামে মসজিদ ইসলামের রাফয়ে দাইন নিয়মে সালাত কায়েম করার কারণে ওই মসজিদে অনেকেই নামাজে যেতেন না। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত পবিত্র ঈদ উল আজহার আগে দক্ষিণপাড়ার ওই মসজিদে ইমাম নিয়োগ দেন হযরত আলী নামের জৈনক এক ব্যক্তিকে। তিনি ঝিনাইদহ জেলার মান্দারবাড়ীয়ার ছেলে ও সাধুহাটি এলাকার জামাই। সপ্তাহের ৬ দিন মসজিদেই থাকেন।

অভিযোগ উঠেছে তিনি ইমামতির পাশাপাশি চিকিৎসা ও কবিরাজি করে গ্রামের সহজসরল মানুষকে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে তুলছেন।

কারো শরীর খারাপ বা জটিল সমস্যা হলে চিকিৎসার জন্য তিনগুন বেশি দামে ওষুধ এবং তাবিজ বা মাদুলি দিয়ে হাদিয়া বাবদ ৩৫১ টাকা করে নিচ্ছেন। বাটিকাডাঙ্গা গ্রামের আকবার আলী জানান, আমার স্ত্রী অসুস্থ হলে তাকে স্যালাইন দিয়ে সাড়ে ৩শ টাকা নিয়েছেন। এছাড়াও তিনি ২৮ জনকে ওই একই স্যালাইন পুশ করেছেন।

অন্য একটি সূত্র জানিয়েছেন ওই স্যালাইনের মূল্য ১শ টাকা। এছাড়াও মহিলা ও বাচ্চাদের তাবিজ লটকিয়ে ৩৫১ টাকা হাদিয়া গ্রহণ করেন। একাই তিনি ইমাম, চিকিৎসক ও কবিরাজ বনে গিয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় জৈনক এক মহিলা বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

সাঈদ হোসেন নামের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা জানান, আমরা যে মসজিদে নামাজ পড়তাম সেখানে মুসল্লি হচ্ছে না এবং আয়ের উৎস কমে যাবার কারণে তারা হুজুরকে দোষারোপ করছেন। তার এলাকায় একটি ফার্মেসি ছিল।

মসজিদে ক্যাশিয়ার সোহেল হোসেন জানান, এ বিষয় জানা ছিলো না। তবে অবশ্যই খোঁজখবর নিয়ে দেখবো। ইমাম সাহেবের আইডি কার্ড ও ছবি আছে কিনা কমিটির কাছে জানতে চাইলে তারা জানান এখনো নেয়া হয়নি।

তবে গ্রামের লোকজন জানান, ইমাম সাহেবের দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানো ও তার চালচলন সন্দেহজনক। তিনি আসলে কে কি কারণে ইমামতির পাশাপাশি শিরক বা কুফরি কাজ করছেন তা নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে গ্রামে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More