জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে ত্রি-ফসলি কৃষি জমিতে সৌর বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের প্রতিবাদে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার এ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশ হতে ফসলের মাঠ রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।
সূত্রে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে প্রায় ৬শ’ বিঘা কৃষি আবাদি জমি রয়েছে। ওই জমিতে সাইকেলিস্ট এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি সংস্থা ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে সৌরবিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন সিদ্ধান্ত নেয় এবং ৫৪০ বিঘা জমি অকৃষি দেখিয়ে তা হুকুম দখলের প্রক্রিয়া শুরু করে। গ্রামবাসীরা জানায়, এ জমি হুকুম দখল করলে ছোট্ট এই গ্রামের মানুষ তাদের চাষযোগ্য ভূমি হারাবেন। ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে নিপাতিত হবেন। এ অবস্থায় তারা তাদের জমিকে পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনে বিরোধীতা করে আসছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রামবাসী জানতে পারেনি। এ অবস্থায় গতকালও তারা ভূমি রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
এ বিষয়ে রায়পুর ইউনিয়নের পরিষদেও কৃষ্ণপুর ওয়ার্ড মেম্বার মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃষি জমিতে যে কোনোপ্রকার শিল্প স্থাপনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এরপরও ওই বেসরকারি সংস্থাটি রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কৃষকদের জমি বিক্রি করতে চাপ প্রদান করছে। যেটি সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।
জমি মালিক রহমত আলী বলেন, আমার সর্বমোট তিন বিঘা জমি রয়েছে। আর এই জমিতে কোনোভাবে চাষের মধ্য দিয়ে আমি আমার সংসার চালায়। যদি আমার এই জমি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে চলে যায় তাহলে আমার মরা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
সাজ্জাদ হোসেন নামে আরেকজন জমি মালিক বলেন, আমরা আবাদি কৃষি জমি রক্ষার্থে সেই সাথে কৃষকদের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করলেও প্রশাসনের তরফ থেকে আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সেই সাথে এ ধরনের কর্মকা- থেকে সরে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। যার ফলে আমরা এক প্রকার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃষি আবাদি জমি রক্ষায় বদ্ধপরিকর। কিন্তু কিছু স্বার্থলোভী মহল টাকার লোভে এ ধরনের কর্মকা- পরিচালনা করছে যেটি খুবই নিন্দাজনক।
এ বিষয়ে জীবননগর কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, আমরা শুনেছি একটি বেসরকারি সংস্থা সৌর বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করার জন্য কৃষি জমি নির্বাচন করেছে। তবে আমরা এ ব্যাপারে সরকারিভাবে কোনো তথ্য বা আদেশ-নির্দেশ এখনও পর্যন্ত পায়নি।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম রাসেল বলেন, বিষয়টি যেহেতু একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত তাই এ ব্যাপারে আমরা কিছুই বলতে পারবো না। এছাড়াও আমরা সরকারিভাবে কোনো আদেশ নির্দেশ বা তথ্য এখনও পর্যন্ত পায়নি।