ঝিনাইদহসহ দেশের ১৪ জেলায় বসছে দুদকের নতুন অফিস

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের ১৪ জেলায় বসছে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন অফিস। চলমান ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে এই ১৪ সমন্বিত জেলা অফিস। প্রতিটি অফিসের অধীনে একাধিক জেলা থাকছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে একটি ও পয়লা জুলাই থেকে ১৩ জেলায় চালু হবে। কমিশন সম্প্রতি বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। সাংগঠনিক কাঠামোর পরিসর বাড়ানোর অনুমোদনের তিন বছর পর তা কার্যকর হতে যাচ্ছে। এতে সবমিলে ৩৬ জেলায় এ ধরনের অফিস থাকছে। পর্যায়ক্রমে বসবে বাকি জেলায়। জেলায় জেলায় অফিস দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। তবে জেলা অফিসগুলো যাতে ‘নামসর্বস্ব’ না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখার ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছেন তারা।
জানতে চাইলে দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, দুদক হচ্ছে একটি পাবলিক অফিস। এখানে মানুষকে সুযোগ দিতে হয়। মানুষের অভিযোগগুলো শুনতে হয়। সাধারণ মানুষ যাতে অভিযোগ দিতে পারে এমন একটি পরিবেশও তৈরি করতে হয়। সঙ্গত কারণেই ২২টি জেলা কার্যালয় দিয়ে সারা দেশের ৬৪টি জেলার কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। সেজন্যই কার্যালয় ও জনবল বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে প্রক্রিয়াটি কার্যকর করতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। বর্তমান কমিশন গঠনের পর এ কাজে গতি ফেরে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে একটি ও পরে ১৩টি জেলা কার্যালয় স্থাপন ও কার্যক্রম শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, দুইশ কর্মকর্তা নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়ে দুদক পূর্ণোদ্যমে মাঠে থাকবে। দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, নতুন করে জেলা কার্যালয় চালুর খবর ইতিবাচক। দুর্নীতির অনুসন্ধান ও তদন্ত যথাসময়ে সম্পন্ন করতে চাইলে পর্যাপ্ত লোকবলের প্রয়োজন। নতুন কার্যালয়গুলোতে দক্ষ জনবল নিয়োগ করতে হবে। দুদকের অফিস থাকায় জেলাগুলোতেও অনিয়ম-দুর্নীতি কিছুটা হলেও কমবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নতুন ১৪টি জেলা কার্যালয় স্থাপন ও কার্যক্রম চালুর বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচক। এর প্রয়োজন ছিলো। অনেক দেরির পর কাজটি হয়েছে এজন্য আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। তবে একই সঙ্গে নতুন কার্যালয়গুলো যেন নামসর্বস্ব না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যোগ্য প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ দিতে হবে। আর কেন্দ্রীয়ভাবে কমিশনকে বিষয়টিও মনিটরিং করতে হবে। যে ১৪ জেলায় দুদকের কার্যালয় চালু হচ্ছে : দুদকের সাংগঠনিক কাঠামোর পরিসর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদনের তিন বছর পর তা কার্যকর হতে চলেছে। গত ৬ অক্টোবর দুদক সচিব স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলা নিয়ে কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয় স্থাপনের ঘোষণা আসে। এরপর গত ১ নভেম্বর দুদক সচিব স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে আরও ১৩টি জেলা কার্যালয় স্থাপন ও চালুর অনুমোদন দেয়া হয়। এগুলো হলো- ঝিনাইদহ (ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা), বাগেরহাট (বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা) নারায়ণগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ), গাজীপুর (গাজীপুর ও নরসিংদী), মাদারীপুর (মাদারীপুর ও শরীয়তপুর), গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর (জামালপুর ও শেরপুর), নওগাঁ (নওগাঁ ও জয়পুরহাট), কুড়িগ্রাম (কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট), চাঁদপুর (চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর) ও পিরোজপুর (পিরোজপুর ও ঝালকাঠি) সমন্বিত জেলা কার্যালয়। যেসব জেলায় চলছে দুদকের কার্যক্রম : দুদকের প্রধান কার্যালয় ছাড়াও বর্তমানে চালু থাকা ২২টি কার্যালয় হলো-ঢাকা-১ মেট্রোপলিটন (ঢাকা মহানগর), ঢাকা-২ (ঢাকা মহানগরের বাইরে ৫ থানা ও মানিকগঞ্জ), ফরিদপুর (ফরিদপুর ও রাজবাড়ী), ময়মনসিংহ (ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা), টাঙ্গাইল, রাজশাহী (রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর), পাবনা (পাবনা ও সিরাজগঞ্জ), বগুড়া, রংপুর (রংপুর ও গাইবান্ধা), দিনাজপুর, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন (চট্টগ্রাম মহানগর), চট্টগ্রাম (চট্টগ্রাম মহানগরের বাইরে উপজেলাসমূহ), রাঙ্গামাটি (রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি), কুমিল্লা (কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া), নোয়াখালী (নোয়াখালী ও ফেনী), খুলনা, যশোর (যশোর ও নড়াইল), কুষ্টিয়া (কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর), বরিশাল (বরিশাল ও ভোলা), পটুয়াখালী (পটুয়াখালী ও বরগুনা), সিলেট (সিলেট ও সুনামগঞ্জ) ও হবিগঞ্জ (হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার)।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More