ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: করোনার থাবায় বিপর্যস্ত ঝিনাইদহ জেলা। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এমন পরিস্থিতিতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের করোনা বিভাগে জায়গা হচ্ছে না রোগীদের। ফলে অনেককেই মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আবার দেখা দিয়েছে চিকিৎসক সঙ্কটও। আর তরল অক্সিজেন যা আছে তাতে চলবে মাত্র তিন দিন।
হাসপাতালসূত্রে জানা যায়, সদর হাসপাতালে করোনা বিভাগে গত এক সপ্তাহ আগে ৫০টি শয্যার বিপরীতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় আরও ২০ টি শয্যা বাড়ানো হয়। বর্তমানে এ বিভাগে ৭০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ৬৮ জন। এর মধ্যে ৫১ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১৭ জনের উপসর্গ রয়েছে। এমনকি যে অক্সিজেন আছে তা আর মাত্র তিন দিন চলবে। এরইমধ্যে আরও তরল অক্সিজেন চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ জন। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ হাজার ৭১১ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৮৯২ জন এবং মারা গেছেন ৭৮ জন। এমন পরিস্থিতিতে চিন্তিত সচেতন মহল। তারা বলছেন, দিন দিন জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে, তাহলে ঝিনাইদহের অবস্থা খুবই খারাপ হবে। এখনই হাসপাতালে রোগীদের জায়গা দেয়া যাচ্ছে না। আগামীতে কী হবে, তা ভাবতেই ভয় লাগছে। তবুও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। এমনকি লকডাউনও মানছে না অনেকে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশিদ জানান, হাসপাতালে প্রতিদিন নতুন নতুন করোনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেখা দিয়েছে চিকিৎসক সঙ্কট। এতে চিকিৎসা দেয়াটাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদফতরে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বেশ কয়েকজন মেডিকেল কর্মকর্তা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এরইমধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি এখনও কাজে যোগদান করেননি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরও বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালে ১ হাজার ৫০০ লিটার তরল অক্সিজেন রয়েছে। এটা দিয়ে আগামী তিনদিন চলবে। তবে রোগীদের অবস্থা বেশি খারাপ হলে এর আগেই অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘রোগী বাড়তে থাকলে হাসপাতালের অবস্থা আরও প্রকট হতে পারে। হয়তো অন্যান্য সেবা বন্ধ করে দেয়া হতে পারে। এ বিষয়েও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহে করোনা সংক্রমণ রোধে মঙ্গলবার (২২ জুন) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের বিশেষ লকডাউন। এরপরও শহরে বিনা কারণে বের হচ্ছেন মানুষ।
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ