দামুড়হুদার ঠাকুরপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ চারদিন পর ফেরত

দর্শনা অফিস/কুড়–লগাছি প্রতিনিধি: দামুড়হুদার ঠাকুরপুর সীমান্তে বিএসএফর গুলিতে নিহত ওমিদুলের লাশ ৪ দিনের মাথায় ফেরত দিয়েছে। দর্শনা জয়নগর সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফর পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে দর্শনা জয়নগর সীমান্তে এ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ডের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান, দর্শনা কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার আব্দুল বারেক মোল্লা, কুড়–লগাছি ইউপি চেয়ারম্যান শাহ এনামুল করিম ইনু, দর্শনা থানার এসআই শরিফুল ইসলাম, ভারতের গেদে বিএসএফ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার এসি নরেন্দ্র পাল প্রমুখ। বিজিবি-বিএসএফর উপস্থিতি বৈঠকে ভারতের কৃষ্ণনগর থানা পুলিশ বাংলাদেশি যুবক ওমিদুলের লাশ হস্তান্তর করে দর্শনা থানা পুলিশে। বৈঠক শেষে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেছে। সন্ধ্যার আগে ওমিদুলের লাশ নেয়া হয় নিজ বাড়িতে। গতরাত ৮টার দিকে স্থানীয় গোরস্তানে ওমিদুলের লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ঠাকুরপুর সীমান্ত পথে গরু আনতে ভারতে যান ওমিদুলসহ ৭-৮ জন। ভোর ৪টার দিকে সীমান্তের ৮৯নং মেইন পিলারের ভারতের অভ্যান্তরে গরু চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন মালোপাড়া বিএসএফ সদস্য। অন্যরা পালিয়ে রক্ষা পেলেও বিএসএফর গুলিবিদ্ধ হয় ওমিদুলের দেহে। ওমিদুলের লাশ সীমান্ত থেকে উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশ হাসপাতালে নেয় ময়নাতদন্তের জন্য। পরদিন সকালেই ওমিদুলের লাশের ছবি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিএসএফর পক্ষ থেকে ঠাকুরপুর বিজিবি ক্যাম্পে পাঠানো হয়। ছবি দেখে পরিবারের সদস্যরা ওমিদুলের লাশ শনাক্ত করেছেন। এ ঘটনায় ঠাকুরপুর কোম্পানী কমান্ডার আজাদুল ইসলাম সীমান্তে গুলি বর্ষন, বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার কড়া প্রতিবাদ ও লাশ ফেরত চেয়ে বিএসএফ’র কাছে চিঠি দেন। অভিযোগ রয়েছে, বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে দামুড়হুদার ঠাকুরপুর সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরেই গরু পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে চোরাকারবারিদের জন্য। গরু পাচারকালে প্রাণ হারানোর ঘটনাও কম ঘটেনি। তবুও থামেনি গরু পাচার কারবার। অভিযোগ রয়েছে এক শ্রেণির প্রভাবশালী গরু চোরাকারবারি অর্থ বিনিয়গের মাধ্যমে খেটে খাওয়া দিনমজুরদের রাতের আধারে সীমান্তে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে গরু আনতে পাঠিয়ে থাকেন ভারতে। এবারো প্রভাবশালী অভিযুক্ত কয়েকজন চোরাকারবারির জোন হাজিরায় ভারতে গরু আনতে গিয়ে প্রাণ দিতে হলো দামুড়হুদার কুড়–লগাছি ইউনিয়নের ঠাকুরপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের ছেলে ওমিদুল ইসলামকে (২২)। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ওমিদুল দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার চিহ্নিত গরু চোরাকারবারি ঠাকুরপুরের মান্দার মোল¬ার ছেলে আসাদুল মোল্লা, নস্করের ছেলে ইস্রাফিল, আব্বাসের ছেলে তাজমুল ও চাঁদ মিয়ার ছেলে সাইদুরের জোন হাজিরায় ভারত থেকে রাতের আধারে বিজিবি-পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গরু পাচার করে আনতো। এক জোড়া গরু ভারত থেকে আনার জন্য ওমিদুল হাজিরা পেয়ে থাকতো ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। নিহতের মা বলেন, তার ছেলেকে গরু আনতে ভারতে পাঠিয়েছিলো তাজুল, সালাম, হাবিবুর ও আসাদুল। ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমি ওদের বিচার চাই।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More