মেয়াদ শেষ হবার ৫ বছর পর চুয়াডাঙ্গার তিতুদহ ইউপি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা

দলীয় মনোনয় পেতে আ.লীগের ৫ প্রার্থীর আবেদন
বেগমপুর প্রতিনিধি: আইনি জটিলতার কারণে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি চুয়াডাঙ্গার তিতুদহ ইউপি নির্বাচন। সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এবং আইনি জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে মেয়াদ শেষ হবার দীর্ঘ ৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তিতুদহ ইউপি নির্বাচন। সে লক্ষ্যে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দিন ধার্য করে নির্বাচন কমিশন তফশিল ঘোষণা করেছে। অপরদিকে জেলা আ.লীগের আহবানে সাড়া দিয়ে দলীয় মনোনয় পেতে মনোনয় প্রত্যাশী আ.লীগের ৫ জন প্রার্থী ইউনিয়ন কমিটির নিকট আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন। আবেদনকারী প্রত্যেকে প্রার্থী মতামত ব্যক্ত করেছেন দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না তারা। এখন দেখার বিষয় দলীয় প্রার্থীর নাম চুড়ান্ত ভাবে ঘোষণা হলে কে কতটুকু দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে চলেন।
জানাগেছে, ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ২০১৬ সালে মেয়াদ শেষ হবার কথা ছিলো। মেয়াদ শেষের আগেই ব্যাপক সীমানা এবং অর্ধলক্ষ জনগোষ্ঠির সেবা প্রদানে বিঘœ সৃষ্টি হওয়ায় তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙ্গে পুনঃগঠিত তিতুদহ ও নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ইউনিয়ন বিভক্তির পরপরই সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দেখা দেয় আইনি জটিলতা। তিতুদহ ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে জটিলতা থেকে গেলেও ২০ অক্টোবর ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত হয় গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। পাশাপাশি প্রশাসক নিয়োগ হয় তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদে। অবশেষ সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হবার দীর্ঘ ৫ বছর পর গত ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন তফশীল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। তফশীল অনুযায়ী আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন। এদিকে নির্বাচন কমিশন তফশীল ঘোষণা করলে জেলা আ.লীগের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি মারফত দলীয় মনোনয় প্রাত্যাশীদের দলীয় মনোনয় পেতে ইউনিয়ন আ.লীগ কমিটির নিকট আবেদন করার নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা পেয়ে গতকাল শুক্রবার রাত অবদি দলীয় মনোনয় পেতে ৫ জন প্রার্থী ইউনিয়ন কমিটির নিকট আবেদন করেছে বলে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, আজ (শনিবার) বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবেদন পত্র জমাদানের শেষ সময় আছে। আমার প্রত্যাশা হয়তো আরও দুটি আবেদন পড়তে পারে। আবেদনকারীদের মধ্যে আছেন সদর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান টিপু, ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি শুকুর আলী মিয়া, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাশেদ রেজা, ইউনিয়ন আ.লীগের সহসভাপতি মোকাদ্দেস আলী ও ইউনিয়ন আ.লীগ কমিটির সদস্য হায়দার আলী মল্লিক। দলীয় মনোনয় প্রত্যাশী অপর প্রার্থী বড়সলুয়া গ্রামের ফারুক হোসেন সম্প্রতি আইনি জটিলতায় জেলে থাকায় তিনি প্রার্থী হচ্ছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এদিকে আবেদনকারী প্রত্যেকেই বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে তারা যাবেন না। দল যাকে ভালো মনে করবে তাকেই দলীয় প্রতীক নৌকা দেবেন। দলীয় একাধিক নেতা কর্মীরা বলেন, দলীয় প্রতীক পাওয়া পর্যন্ত মনোনয় প্রত্যাশীদের মনোভাব থাকে একরকম। আবেদনকারীদের মধ্যে যখন একজনের নাম চুড়ান্তভাবে ঘোষণা করা হয় তখন অনেকেই বিদ্রোহী হয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হয়। যা সম্প্রতি শেষ হওয়ায় ইউপি নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে। মুখে সবাই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না বলে মতামত ব্যাক্ত করলেও শেষ অবদি বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। এখন দেখার বিষয় দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত হলে আবেদনকারীরা তখন কে কোন ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। 
উল্লেখ্য, এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক প্রেরিত পত্র প্রাপ্তির পর স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ৬৮৬নং পত্রের নির্দেশক্রমে এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) সংশোধন আইন ২০০৯ এর ১১ ধারা মোতাবেক জেলা প্রশাসকের ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে সংশি¬ষ্ট জেলা প্রশাসক ২৪ জুন ২০১৫ তিতুদহ ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন নামে নতুন ইউনিয়ন এবং তিতুদহ ইউনিয়নকে পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশি¬ষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুলিপি প্রেরণ করেন। তারই আলোকে ওই বছর ২৪ সেপ্টম্বর গেজেট প্রকাশিত হয়। গেজেট প্রকাশের পর সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। ফলে পরিষদের মেয়াদ শেষ হলেও আইনি জটিলতার মারপ্যাঁচে ১০ বছর অনুষ্ঠিত হয়নি নির্বাচন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More