শারদীয় উৎসব উদযাপনে এবারও তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে পূজা কমিটির সাথে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিষয়ক মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পুলিশ পার্ক কমিউনিটি সেন্টারে ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও পূজা উদযাপন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ ও আনসার সদস্যের পাশাপাশি ম-প এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবে স্বেচ্ছাসেবকরাও। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ম-প এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি সকলকে সচেতন থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা সবাই সবার ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই। উৎসবের আনন্দে মেতে উঠি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্যপরিষদের সভাপতি ডা. মার্টিন হিরোক চৌধুরী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব কিশোর কুমার কু-ু, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ হিন্দুবৌদ্ধ এক্য পরিষদের সভাপতি ডা. মার্টিন হিরোক চৌধুরী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব কিশোর কুমার কু-ু, মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কাজী আয়েশা সিদ্দিকা সরকার, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন, আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম, জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক, দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুল কবীর, দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ। এছাড়া জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সভার শুরুতে জেলার দুর্গা পূজার পরিসংখ্যান ও নিরাপত্তা বিষয়ে প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক। এতে জানানো হয়, এবছর জেলায় সর্বমোট ১১৭টি পূজা মন্ডপ রয়েছে। এরমধ্যে সদর থানার মধ্যে ২৪ টি, দামুড়হুদা মডেল থানার মধ্যে ১৪টি, আলমডাঙ্গা থানার মধ্যে ৩৮ টি, জীবননগর থানার মধ্যে ২৩ টি ও দর্শনা থানার মধ্যে ১৮টি পূজা মন্ডপ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ২১ টি, গুরুত্বপূর্ণ ৩৬ টি ও সাধারণ ৬০টি পূজা ম-প রয়েছে। অধিক গুরুত্বপূর্ণ পূজা মন্ডপে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক, ২ জন সদস্য, ১ জন পিসি (লাঠি ও বাঁশিসহ), ১ জন এপিসি (লাঠি ও বাঁশিসহ), ৩ জন পুরুষ আনসার সদস্য (লাঠি ও বাঁশিসহ) ও ২ জন মহিলা আনসার সদস্য (লাঠিসহ) মোতায়েন থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ পূজাম-পে ৮ জন ও সাধারণ পূজাম-পে ৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পূজা ম-প এলাকার গ্রামপুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করবে। জেলার পূজাম-পের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশের ৬৩৪ জন সদস্য ও আনসার ভিডিপির ৭৪৭ জন সদস্য কাজ করবে। সভায় আরও জানানো হয়, পূজা উদযাপন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নিরাপত্তা পরিকল্পনা পূজা শুরুর পূর্বে, পূজা চলাকালীন সময় ও প্রতিমা বিসর্জনের দিন এই তিন স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে। সভায় পূজা শুরুর পূর্বে নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট বিট অফিসার পূজাম-প পরিদর্শন করবেন। পূজা উদযাপন কমিটি, স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তি করবেন। ম-প এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করবে পূজা উদযাপন কমিটি। ম-প এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করবে পূজা উদযাপন কমিটি। প্রবেশ পথে চেকিং করবে ডিএসবি/পূজা উদযাপন কমিটি। সভায় পূজা চলাকালীন সময়ের জন্য নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, রশি বা বাঁশ দিয়ে আলাদা প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার ২টি ভিন্ন পথ করতে হবে। ইভটিজিং, হই হুল্লোড়, ধাক্কাধাক্কি বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কমিটি ও পুলিশ শক্ত অবস্থানে থাকবে। নারী ও পুরুষ পৃথক স্থানে বসবে। নামাজের সময় সতর্ক ও সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ করতে হবে। ম-প এলাকায় মাদক সেবন/গ্রহণ, বিক্রয়রোধে শক্ত অবস্থানে থাকবে পুলিশ। সভায় পূজা বিসর্জনের দিনের নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, পূজা কমিটি, মেয়র/চেয়ারম্যান ভেন্যু ব্যবস্থাপনা করবেন। পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার মোতায়েন থাকবে। রুট পূর্বেই নির্ধারণ করে জানাতে হবে। মাগরিবের পূর্বে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে। যদি বিসর্জন না হয় তাহলে পূর্বেই জানাতে হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More