গাংনী প্রতিনিধি: গাংনীর ধলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নন এমপিও পাঁচ শিক্ষক কর্মচারীর এমপিওভুক্তির ভাগ্য ঝুলে পড়েছে পরিচালনা পর্যদের সভাপতি ইলিয়াছ হোসেনের মোটা অংকের ঘুষ দাবিতে। ৬ মে’র মধ্যে অনলাইনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলে সরকারি জরুরি নির্দেশনা থাকলেও সভাপতি রেজুলেশন দেননি। তাই অসহায় ভুক্তভোগী শিক্ষক কর্মচারীরা বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত সভাপতি ইলিয়াছ হোসেন কাথুলী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য। সারাদেশে এমপিওভুক্তির জন্য সরকারি তালিকাকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের করোনা পরিস্থিতিতে উত্তরণের জন্য বেতন ভাতা দেয়ার জন্য জরুরি ভিত্তিতে কাগজপত্র দাখিলের নির্দেশনা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীদের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ধলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক একজন, শিক্ষক তিনজন, একজন লাইব্রেরিয়ান ও একজন নৈশপ্রহরী এবারে সরকারি ঘোষণায় এমপিওভুক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছেন। গেলো ১ মে থেকে ৪ মে’র মধ্যে তাদের কাগজপত্র দাখিল করার জন্য সরকার নির্দেশনা দেয়। অনলাইন সার্ভারে সমস্যা থাকায় ৬ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিন্তু সভাপতি কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করায় অনলাইনে ভুক্তভোগী শিক্ষক কর্মচারীরা সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়াই কাগজপত্র দাখিল করতে বাধ্য হন। তাই কাগজপত্র গ্রহণ করে তাদের ভাগের পরিবর্তন হবে না ঝুলে যাবে তা নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারে চলছে কান্নার রোল।
ভুক্তভোগীরা জানান, ১৮-২০ বছর ধরে নন এমপিও থাকায় অসহায় মানবেতর জীবন-যাপন করছিলেন এসব শিক্ষক কর্মচারীরা। সরকারের মানবিক উদ্যোগের সুযোগ নিতে না পারায় তারা অন্ধকারের মধ্যে পড়েছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, কাগজপত্র দাখিলে সরকারি ঘোষণা শুনে সভাপতি ইলিয়াছ হোসেন ১ মে বিদ্যালয়ে পরিচালনা পর্ষদের জরুরি সভা আহ্বান করেন। সেখানে ভুক্তভোগী শিক্ষক কর্মচারীদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়।
সভায় বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদের একজন সদস্য স্বাক্ষর করেছেন। সভাপতির ইশরায় আর কোনো সদস্য স্বাক্ষর করেনি। ফলে সভার রেজুলেশন অসমাপ্ত থাকার অজুহাতে তিনি রেজুলেশন দেননি। নিরুপায় হয়ে প্রধান শিক্ষক ২ মে সভাপতির বাড়িতে দেখা করেন। এসময় প্রধান শিক্ষকের কাছে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন সভাপতি ইলিয়াছ হোসেন।
এরপরে শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ সভাপতির ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অনুরোধ করেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে অনেক টাকা খরচ হয়েছে তাই শিক্ষক কর্মচারীরা টাকা না দিলে রেজুলেশন দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন সভাপতি ইলিয়াছ হোসেন। তাদের অনুনয় বিনয় উপেক্ষো করেও তিনি শক্ত অবস্থানে অনড়। তাই নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
৬ মে কাগজপত্র দাখিলের শেষ দিনে ইউএনও কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করেন শিক্ষক কর্মচারীরা। তখন ইউএনও মোবাইলে কথা বলেন সভাপতি ইলিয়াছ হোসেনের সাথে। ইউএনও নির্দেশনা উপেক্ষা করেও ইলিয়াছ হোসেন তার অবস্থানে অনড় থাকায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত পূর্বক ইলিয়াছ হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। সভাপতি ইলিয়াছ হোসেনের ঔর্ধত্যপূর্ণ অমানবিক আচরণে এলাকার মানুষও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
বিষয়টি তদন্ত চলছে। দ্রুত এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একটি সূত্র।
তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে গতরাতে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও সভাপতি ইলিয়াছ হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ