মাথাভাঙ্গা মনিটর: পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে ওপারে পাড়ি দিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। মৃত্যুকালে এই ফুটবল কিংবদন্তীর বয়স হয়েছিলো ৬০ বছর। ম্যারাডোনার জন্য আর্জেন্টিনায় তিনদিনের শোক কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে বুধবার মারা যান ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত এই আর্জেন্টাইন। আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে খবরটি নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটির প্রধান ক্লাওদিও তাপিয়া শোকবার্তায় বলেন, ‘আমাদের কিংবদন্তীর মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত, দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনা। সবসময় তুমি আমাদের হৃদয়ে থাকবে।’ ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার ম্যারাডোনা একক নৈপূণ্যে দেশকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। ফুটবল কীর্তির বাইরেও যিনি ছিলেন বর্ণময় চরিত্রের অধিকারী। পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানানোর পরও নানা বিতর্কের জন্ম দিয়ে প্রায় সবসময়ই ছিলেন খবরের শিরোনাম হয়ে। দেশের হয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলা ম্যারাডোনা জাতীয় দলের হয়ে ৯১ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৩৪ গোল। ৮৬’র বিশ্ব জয়ের পরের বিশ্বকাপেও দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু শিরোপা লড়াইয়ে হেরে যায় সেই সময়ের পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে। ১৯৯৪ সালের যুক্তরাষ্ট্র আসরেও দলের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি; কিন্তু ড্রাগ টেস্টে পজেটিভ হয়ে দুই ম্যাচ খেলেই দেশের পথ ধরতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। গ্রুপ পর্বে গ্রিসের বিপক্ষে জয়ের পর নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জেতা ম্যাচটিই হয়ে থাকে তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
বুটজোড়া তুলে রেখে কোচিং ক্যারিয়ারে পা রাখেন ম্যারাডোনা। ২০১০ বিশ্বকাপে ছিলেন আর্জেন্টিনার ডাগআউটে। কোচ হিসেবে অবশ্য উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাননি তিনি। গতবছর থেকে স্বদেশের ক্লাব হিমনেশিয়ার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। গত ৩০ অক্টোবর ৬০তম জন্মদিন পালন করার তিনদিন পর শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করায় ম্যারাডোনাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে পরের দিন তার অস্ত্রোপচার করানো হয়। অস্ত্রোপচার সফল হলেও হঠাৎ করে অ্যালকোহল পরিহার করায় কিছু সমস্যা দেখা দেয় তার। এ কারণে প্রত্যাশার চেয়ে বেশিদিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছিলো ম্যারাডোনাকে। দেশের বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেয়া ম্যারাডোনা ক্লাব ক্যারিয়ারে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়েছেন নাপোলিতে। ইতালিয়ান ক্লাবটিকে জিতিয়েছিলেন তাদের ইতিহাসের প্রথম সেরি আ শিরোপা, ১৯৮৬-৮৭ মরসুমে। দুই মরসুম বাদে দলটির হয়ে জিতেছিলেন দ্বিতীয় সেরি আ। এখন পর্যন্ত ওই দুবারই লিগ শিরোপা জিতেছে নাপোলি। ১৯৮২ সালে বার্সেলোনার হয়ে ইউরোপীয় ফুটবলে পা রাখেন মারাদোনা। কাতালান ক্লাবটিতে দুই মরসুম খেলে পাড়ি দিয়েছিলেন নাপোলিতে। ক্যারিয়ার জুড়ে ম্যারাডোনা গড়েছেন ইতিহাস, জন্ম দিয়েছেন নানা কীর্তি, হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ