আগামী সোমবার ভার্চুয়ালি তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন

এসপিদের সঙ্গে বিরোধের অবসান চান ডিসিরা

স্টাফ রিপোর্টার: জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা পুলিশ সুপারদের (এসপি) মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক বিরোধ দীর্ঘদিনের। জেলায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অনেক সময় ডিসির সভাপতিত্বে এসপি উপস্থিত হন না। সেখানে জুনিয়র কর্মকর্তারা এসপির পক্ষে উপস্থিত থাকেন। জেলায় প্রতিদিনের মামলা ও জিডির তথ্য ডিসিকে সরবরাহ করার কথা থাকলেও সেটি মানেন না এসপিরা। বিষয়টি সুরাহা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসপিদের চিঠি দিলেও সমাধান হচ্ছে না। ডিসি-এসপির এমন মনস্তাত্ত্বিক বিরোধের প্রমাণ পেয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও। জেলার দুই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার বিরোধ ও মতানৈক্য সংক্রান্ত বেশকিছু তথ্য গত বছরের মে মাসে গোয়েন্দা সংস্থার গোপনীয় প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এই মতানৈক্যের কারণে জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। ফলে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে এসপিদের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তি চান ডিসিরাও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য এবারের সম্মেলনে তুলতে চান ডিসিরা। এ ছাড়া জেলায় সব ধরনের রাজনৈতিক তদবির ও চাপ থেকে মুক্ত থেকে কাজ করতে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে সম্মেলনে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন ডিসিরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করবেন।
সূত্র মতে, ডিসি সম্মেলনে ২৭৫টি প্রস্তাব আলোচনার জন্য বিভিন্ন কার্য অধিবেশনে তোলা হবে। এতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়বৃদ্ধি করতে স্থানীয় সব ধরনের ইজারা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনকে অংশ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন সিলেটের ডিসি। নিজস্ব আয় কম হওয়ায় অনেক উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব, হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর ও গ্রাম পুলিশদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। এমনকি চেয়ারম্যান ও সদস্যদেরও সম্মানী ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না বলে প্রস্তাবে যুক্তি দেখানো হয়েছে। উপজেলা পরিষদের কর্মচারীদের বদলির ক্ষমতা চেয়েছেন একজন ডিসি। প্রতি তিন বছর পরপর জেলা পর্যায়ে আন্তঃউপজেলায় বদলির ক্ষমতা ডিসিকে এবং বিভাগীয় পর্যায়ে আন্তঃজেলা পর্যায়ে বদলির ক্ষমতা বিভাগীয় কমিশনারের হাতে ন্যস্ত করার প্রস্তাব করেছেন ঝালকাঠির ডিসি। প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলা হয়েছে, এই কর্মচারীরা দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে চাকরির কারণে স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ফলে অফিসের কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটে এবং প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। তাদের বদলি করলে স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যোগসাজশ কমে যাবে। এতে প্রত্যাশিত সেবা বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মচারীদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ হবে। বর্তমানে তাদের বদলির কোনো বিধান নেই। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে মাঠকর্মীর পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ সম্পন্ন করার প্রস্তাব দিয়েছেন ভোলার ডিসি। গ্রাম আদালতের বেঞ্চ সহকারী জনবল বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছেন কুষ্টিয়ার ডিসি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সম্মানী বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন যশোরের ডিসি। গ্রামপুলিশ ও মহল্লাদারদের বেতন-ভাতা ও আনুতোষিক ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন চট্টগ্রাম, যশোর, বান্দরবান ও বরগুনার ডিসি।
সূত্র জানায়, এবারের ডিসি সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করবে সরকারের শীর্ষ মহল। ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে খুন-রাহাজানি সরকারকে বেশ বিব্রত করেছে। দলীয় কোন্দলে সৃষ্ট অরাজকতা নিয়ে সরকারের শীর্ষ মহল খুবই বিব্রত। একই সঙ্গে এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন, বিশেষ করে টেন্ডার পাওয়া না পাওয়াকে কেন্দ্র করে দলীয় কোন্দল সরকারের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More