আ.লীগ জনগণের পাশে আছে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বা বিরোধী দলে যেখানেই আওয়ামী লীগ থাকুক না কেন, এই দলের নেতাকর্মীরা সর্বদা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, মানুষের জন্য কাজ করছেন। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা বা অন্য যে কোনো দুর্যোগে তারা মানুষের পাশে থেকেছেন। এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
গতকা মঙ্গলবার সিলেট সার্কিট হাউজে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কারণ তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধারে এবং ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলে গেছেন, যেখানে অনেকেই পৌঁছুতে পারেননি। সেখান থেকে তারা ওই এলাকার ছবি আমাকে পাঠিয়েছেন। সেই ছবি আমি সেনাপ্রধান, আমাদের অফিস, বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। এতে উদ্ধার প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে।
পর্যালোচনা সভায় বিভাগীয় প্রশাসন জানায়, বন্যায় চারটি জেলার ৩৩টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব উপজেলার ৪৫ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি আছে। মাত্র সোয়া চার লাখ মানুষ ১২৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। আর ৭৪ হাজার হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
৪০ হাজার পুকুর ও হ্যাচারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গতদের চিকিৎসায় ৩শর বেশি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এসব উপজেলায় ১৩০৭ টন খাদ্যসামগ্রী, ২৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, নগদ ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। সভায় প্রধানমন্ত্রী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবকে বিশেষ করে মাঠপর্যায়ের প্রশাসনকে একগুচ্ছ নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, বন্যা কবলিত মানুষের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে তারা এসব খাবার কয়েকদিন সংরক্ষণে রেখে খেতে পারেন। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে। দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং স্যালাইন বিতরণ করতে হবে।
কুশিয়ারা নদীর ড্রেজিং এবং নাব্য বৃদ্ধি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীর নাব্য রক্ষায় আমি একবারের জন্য ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের পক্ষে কিন্তু নদীর নাব্য নিশ্চিত করতে বছর বছর ড্রেজিং করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় বৃহত্তর সিলেট জেলার অধিকাংশ বাড়িঘরের সামনেই বড় বড় ড্রেন এবং বিল ছিল। দুর্ভাগ্যের বিষয় সে ধরনের কোনো ড্রেন বা জলাশয় এখন আর নেই। বরং জায়গাগুলো বিভিন্ন বাড়িঘর ও স্থাপনায় দখল হয়ে গেছে। ময়মনসিংহের অবস্থাও সিলেটের মতোই। বন্যার সময় খাদ্যের গুদামে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে এবং খাদ্য ভা-ার থেকে যাতে সহজে পরিবহণ করা যায় সে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। পানি নামতে শুরু করলে ডায়রিয়া ও জ্বরের মতো সংক্রামক রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করতে সিলেট অঞ্চলের পুরো বন্যা কবলিত এলাকা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। তিনি বলেন, পুরো সিলেট অঞ্চল পরপর তিনবার বন্যার সম্মুখীন হয়েছে। এই বন্যাই শেষ নয়। কাজেই বন্যা মোকাবেলায় আমাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। বন্যার সময় নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করতে ল্যান্ড ফোন লাইন সক্রিয় রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী সিলেট যাওয়ার পথে হেলিকপ্টারে খুব নিচ দিয়ে সিলেট, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি সিলেট ও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকদের কাছে তার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে সহায়তা হস্তান্তর করেন এবং পরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More