স্টাফ রিপোর্টার: কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পল্টন থানা প্রান্তের গেট দিয়ে ঢুকতেই উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে। নিচতলায় গিয়ে দেখা যায়, হুড়োহুড়ি করছেন শ’দুয়েক লোক। সবাই পুলিশ সদস্য। এসেছেন করোনা পরীক্ষার জন্য।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআর) এসআই ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ। সেখানে উপস্থিত হতে হলে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রেজাল্ট বাধ্যতামূলক। তাই সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে করোনা পরীক্ষার জন্য। এখানে যে অবস্থা, তাতে মনে হচ্ছে সংক্রমণ বেড়ে যাবে কয়েকগুণ।’ শুধু পুলিশ হাসপাতালেই নয়, কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। যদিও করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। শনিবারও কয়েক দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু বাণিজ্য মেলা, মার্কেট, শপিংমল, হাট-বাজার, অফিস-আদালত, গণপরিবহণ-কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এমনকি বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন বা স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের দায়িত্ব যাদের ওপর, তারাও মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক পরার আগ্রহ নেই অনেকের। ইচ্ছেমতো তাদের চলাফেরা। আর এ কারণে হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। বিধিনিষেধ কার্যকরে অতীতে পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু এবার সে ধরনের ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না পুলিশ সদস্যদের।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। নগরবাসীর মধ্যে সচেতনতা না বাড়লে জোর করে স্বাস্থ্যবিধি মানানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে জনসচেতনতা বাড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। টিকা সনদ ছাড়া যাতে কেউ হোটেল-রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে না পারে সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশের নজরদারি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২৩ থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ সপ্তাহ পালন করা হবে। এ কর্মসূচি সফল করতে অনেক পুলিশ সদস্য ব্যস্ত রয়েছেন। তাই হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে নজরদারির ঘাটতি থাকতে পারে। ২৭ জানুয়ারির পর থেকে জনস্বার্থে পুলিশের ভূমিকা কঠোর হতে পারে।
সরেজমিন বিভিন্ন হাট-বাজার, অফিস-আদালত, মার্কেট, শপিংমল এবং গণপরিবহণে দেখা যায়-বেশিরভাগ মানুষ মাস্ক পরছেন না। আবার কেউ মাস্ক পরলেও থাকছে থুতনির নিচে। কেউ কেউ মাস্ক রাখছেন পকেটে। স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখছেন না বললেই চলে। কারও মধ্যেই সামাজিক দূরত্ব মানার প্রবণতা দেখা যাছে না। পরিচিতজনরা একে অপরের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করছেন অবলীলায়। রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধির বালাই চোখে পড়েনি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ