চালুই হলো না মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

জনশক্তি রপ্তানি শুরু না করে উল্টো নতুন নতুন জটিলতা

স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘসূত্রতা কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের। জুনের মধ্যেই কর্মী পাঠানো শুরু করার কথা ঘোষণা হয়েছে বারবার। কিন্তু জুলাই মাস এসে গেলেও তা শুরু করা হলো না। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ার হাইকমিশন এখনো সেই কর্মী পাঠানো এজেন্সির সংখ্যা নিয়েই ব্যস্ত। কর্মী পাঠানো শুরুর বিষয়ে এখনো চলছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা।

জানা যায়, কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার জন্য দুই রিক্রুটিং এজেন্সির নাম পাঠিয়ে গত ২৯ জুন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন। এর মধ্যে একটি এজেন্সি হলো সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড বা বোয়েসেল। হাইকমিশনের চিঠিতে মনোনীত রিক্রটিং এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সরকারি এই সংস্থাকেও দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করতে অনুরোধ জানানো হয়। এই চিঠি পেয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়ার মন্ত্রণালয়। চুক্তির বাইরে এ ধরনের অনুরোধকে ভালো চোখে দেখছেন না তারা। আবার হাইকমিশন থেকে এমন চিঠি দেয়ার এখতিয়ার আছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অনেকে। জনশক্তি রপ্তানিকারকদের প্রশ্ন, এত দিন সিন্ডিকেট সিন্ডিকেট করে সেখানেই সরকারি সংস্থাকে অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা কেন। জনশক্তি রপ্তানি শুরু না করে উল্টো নতুন নতুন জটিলতা তৈরি করে কেন আটকে রাখা হচ্ছে সবকিছু। যেখানে মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তারা কর্মী নেয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন সেখানে কোন স্বার্থে বারবার পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর চুক্তি মোতাবেক যেখানে রিক্রুটিং এজেন্সি পছন্দ করার এখতিয়ার পুরোটাই মালয়েশিয়ার সেখানেই বা কেন নতুন করে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন। মন্ত্রণালয় ও হাইকমিশনের এসব কর্মকান্ডে দীর্ঘসূত্রতা হওয়ায় নেপাল থেকে কর্মী নেয়ার দিকে মালয়েশিয়ার নিয়োগ কর্মকর্তা ঝুঁকছেন বলেও অভিযোগ রপ্তানিকারকদের। এতে বাজার হারানোর আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।

মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুললেও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের শর্তারোপের কারণে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। গত ২ জুন জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মিটিংয়ে মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ উভয় দেশের প্রতিনিধি দল মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে একমত হয়। পরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, জুনের মধ্যেই কর্মী গমন শুরু হবে। কিন্তু এরপর হাইকমিশন এবং মন্ত্রণালয়ের একের পর এক শর্তারোপ পুরো প্রক্রিয়াটিকে বিলম্ব ঘটায়। মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তাদের ডিমান্ড লেটার সত্যায়নের পরিবর্তে কখনো মেডিকেল সেন্টারের অনুমোদন, কখনো ডাটা ব্যাংকের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগে বাধ্যবাধকতা, কখনো র্যাুন্ডম স্যাম্পলিং আবার কখনোবা মালয়েশিয়ার কাছে মন্ত্রণালয়ের নতুন সিস্টেম সমন্বয় করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই একেকটি শর্ত উত্তরণ করতে করতেই চলে যাচ্ছে সময়। প্রবাসী মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, উভয় দেশের সম্মতিক্রমে জনশক্তি রপ্তানি শুরু হলে এবার মালয়েশিয়ায় প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী যেতে পারবেন। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৬ লাখ বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More