জামায়াতের আমীর ডা. শফিক ৭ দিনের রিমান্ডে

 

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপতার করেছে ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। সোমবার রাত ১টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরার আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে জামায়াত। গত ১০ই ডিসেম্বর বিএনপি’র সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াত। একইভাবে বিএনপি’র ১০ দফার প্রতিও সমর্থন জানায় দলটি। জামায়াতের আমীরের গ্রেফতারের বিষয়ে গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, জামায়াত আমীর তার ছেলে ডা. রাফাত নতুন জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়েছেন এটা জেনেও সমর্থন দিয়ে গেছেন। পরে রাফাত সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’য় জড়ানো অনেকেই শিবিরের সাথী ও কর্মী ছিলেন। তাদের হিজরতের খরচও দিয়েছেন জামায়াত আমীর। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে জামায়াতের আমীরকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি জানান, গত ৯ই নভেম্বর জামায়াত আমীরের ছেলে ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। তারও আগে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’য় জড়িয়ে ট্রেনিং ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য সিলেট থেকে হিজরত করা তিন জঙ্গি সদস্যকে যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়।

ডা. রাফাত আগে ছাত্রশিবির করতেন। যাদের আমরা গ্রেফতার করেছি তারা সবাই ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ট্রেনিং ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য হিজরত করেছিলেন। তারা প্রত্যেকেই শিবিরের সাথী ছিলেন। তিনি আরও জানান, ডা. রাফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছি, বাবা জামায়াত আমীর ডা. শফিকুল রহমানের সম্মতিক্রমেই ২০২১ সালের জুন মাসে বান্দরবান থেকে ফিরে আসেন তিনি। পরে শফিকুর রহমানের সিলেটের বাসায় বিভিন্ন সময় জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন ডা. রাফাত। ১১ ছেলেসহ রাফাত যে হিজরত করেছেন এর সবই জানতেন জামায়াত আমীর। ক্ষেত্র-বিশেষ তিনি সহযোগিতাও করেছেন। হিজরতের যাবতীয় ব্যয়ভারও তিনি বহন করেছিলেন। ছেলেসহ ১১ জনকে ডা. শফিকুর রহমান খরচ দিয়ে কুকিচিনে পাঠিয়েছিলেন। কুকিচিন আর্মি থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কুকিচিনের কাউকে আমরা এখনো গ্রেফতার করতে পারিনি। কুকিচিনের সঙ্গে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সমর্থন এবং সহযোগিতা পেয়ে আসছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এদিকে, যাত্রাবাড়ীতে দায়ের হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ডা. শফিকুর রহমানের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বিকেলে সিটিটিসির পরিদর্শক এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আবুল বাসার তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চান। আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন আইনজীবী তার রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ৯ই নভেম্বর শফিকুর রহমানের ছেলে রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। তার ছেলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় তাকেও গ্রেফতার দেখানো হলো।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More