প্রস্তুত পদ্মা বহুমুখী সেতু : সেই মাহেন্দ্রক্ষণ কাল খুলছে স্বপ্নের দ্বার

সারাদেশে সাজসাজ রব : মাওয়া ও জাজিরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আলোকসজ্জা

স্টাফ রিপোর্টার: এখন আর স্বপ্ন নয়। শুধু বাস্তব এবং দৃশ্যমান অবকাঠামোও নয়। ১৬ কোটি মানুষের আকাক্সক্ষার ফসল। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের নতুন এক পরিচয়। দেশের আত্মমর্যাদা ও সক্ষমতার একটি প্রতীক। গর্ব ও আকাক্সক্ষার সেই প্রতীকটি হচ্ছে ‘পদ্মা সেতু’। নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার প্রকল্পের আওতায় নির্মিত বহুল কাক্সিক্ষত এই সেতু উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষণ কাল শনিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে এই সেতুর উদ্বোধন করবেন। পরের দিন ২৬ জুন থেকে ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুতে সাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এর মধ্যদিয়ে অদম্য বাঙালি জাতির স্বপ্নের দ্বার খুলছে। এ সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হতে যাচ্ছে। যাতায়াত ব্যবস্থায় নতুন মাইলফলকে পৌঁছুলো বাংলাদেশ। দেশি-বিদেশি নানা প্রতিকূলতা এবং প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষমতা অর্জনের প্রমাণ মিললো। সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সারা দেশে সাজসাজ রব উঠেছে। মাওয়া ও জাজিরা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে।

সেতু বিভাগসূত্রে জানা গেছে, এই সেতুর মধ্যদিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে। এর সরাসরি সুফল পাবেন তিন কোটির বেশি মানুষ। পরোক্ষ সুফল পাবে পুরো বাংলাদেশ। এ সেতুর সুবিধা নিয়ে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং ভোমরা স্থলবন্দরের ব্যবহার বেড়ে যাবে। কমবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের ওপর আমদানি-রপ্তানি চাপ। ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যাতায়াতের সময় অন্তত দুই থেকে চার ঘণ্টা কমে যাবে। ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক ঘণ্টায় যাতায়াত করা যাবে। এ সেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। উন্মুক্ত হচ্ছে পর্যটনের নতুন দুয়ার। এ সেতুর ফলে বছরে দশমিক ৮৪ শতাংশ দরিদ্রতা হ্রাস পাবে এবং জিডিপিতে এক দশমিক ২৩ শতাংশ অবদান রাখবে। শুধু তাই নয়, আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এটি বড় ভূমিকা রাখবে। এশিয়ান হাইওয়েতে-১ (তামাবিল-সিলেট-ঢাকা-পদ্মা সেতু-যশোর-বেনাপোল) সরাসরি যুক্তের মাধ্যমও এ সেতুটি।

এর আগে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর ও নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়ায় পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিস্তারিত সমীক্ষা, নকশা প্রণয়নসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাসে বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঋণ চুক্তি সই করে বাংলাদেশ। কাজ শুরুর আগেই দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগে দাতা সংস্থাগুলো ঋণ চুক্তি বাতিল করলে ২০১২ সালের ৯ জুলাই এক বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই পদ্মা সেতুর বিভিন্ন কম্পোনেন্টের ঠিকাদার নিয়োগ শুরু হয়। ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর মূল সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর এই সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দিতে কাল শনিবার নিজ হাতের তৈরি এই সেতুর উদ্বোধনও করবেন প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এদিন মাওয়া প্রান্তে সুধী সমাবেশের পর সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে স্মারক ডাকটিকিট ও স্যুভেনির শিটের উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি টোল দিয়ে সেতু পার হয়ে জাজিরায় গিয়ে সেখানে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। দুই পারেই সেতুর ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সেতু নির্মাণকাজের ধাপে ধাপে নানা প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নির্মাণ করা হয় এ সেতু। সেতুর পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে বিশ্বব্যাংক। অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, তৎকালীন সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তাদের গ্রেফতারের দাবি জানায়। অভিযোগ তোলা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। তবুও দাতা সংস্থাগুলো এ সেতুর অর্থায়নে ফিরে আসেনি। কানাডার আদালতে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলাও প্রমাণিত হয়নি। অবশেষে বিশ্বব্যাংক তাদের অর্থায়ন থেকে সরে আসা ভুল থাকার কথা স্বীকার করে। ওই অবস্থায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে নিজ অর্থায়নে এ সেতুর বাস্তবায়ন করা হয়। এছাড়া বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ, ডলারের ও নির্মাণ যন্ত্রাংশের দাম বৃদ্ধি, পদ্মা নদীতে ভাঙন ও তীবু স্রোত এবং নদীর তলদেশে মাটির গভীরতায় নরম মাটির অস্তিত্ব পাওয়ার মতো কারিগরি ও বৈশ্বিক অনেক ধরনের প্রতিকূলতা পেরিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে পদ্মা সেতু।

পরিবহণ সংশ্লিষ্ট ও যাত্রীরা জানান, এ সেতুর চালুর ফলে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ঘাটে ফেরির জন্য দীর্ঘ লাইন ও অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে যাচ্ছে। ঈদ-পার্বণ ও বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে জীবন বাজি রেখে যাত্রীদের আর বিশাল ও উত্তাল পদ্মা নদী পাড়ি দিতে হবে না। নদী পাড়ি দিতে গিয়ে পিনাক-৬ লঞ্চডুবির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।

জানা গেছে, গাড়ি চলাচলের জন্য প্রস্তুত পদ্মা সেতু। বুধবার পদ্মা সেতু হস্তান্তর করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ। এ সেতু নির্মাণে ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকার। ২১ জুন পর্যন্ত এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ৯৩৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। যদিও নদীশাসন, পুনর্বাসন, সংযোগ সড়কসহ পদ্মা সেতু বহুমুখী প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ২১ জুন পর্যন্ত প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। প্রকল্পের সার্বিক আর্থিক অগ্রগতি ৯১ দশমিক ৮৫ শতাংশ আর বাস্তব ভৌত অগ্রগতি ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে নদীশাসন কাজে ৯৪০০ কোটি টাকার মধ্যে ৮৭০৬ কোটি টাকা, পুনর্বাসন কাজে ১৫১৫ কোটি টাকার মধ্যে ১১১৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বাকি টাকা অন্যান্য কাজে খরচ হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে পদ্মা সেতু: যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধন হয় ১৯৯৮ সালে। ওই সেতু নির্মাণে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়। এতেই সাহস জোগায় দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পদ্মা সেতু নির্মাণ। ১৯৯৭ সালে জাপান সফরকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটিকে পদ্মা ও রূপসা সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দেন। এরপরই ১৯৯৯ সালের মে মাসে শুরু হয় প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা। দেশীয় অর্থায়নে ওই সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার এ সমীক্ষা চালায়। নদীর প্রশস্ততা কম বিবেচনায় মাওয়া-জাজিরায় সেতু নির্মাণের পরামর্শ দেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আরপিটি-নেডকো-বিসিএল জয়েন্ট ভেঞ্চার। ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রাক-সমীক্ষার প্রতিবেদন দেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। ওই বছরের ৪ জুলাই পদ্মা সেতু নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শুরু হয় সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ। ২০০৭ সালের রোড মাস্টার প্ল্যানে পদ্মা সেতুকে অগ্রাধিকার প্রকল্পভুক্ত করা হয়। একই বছর বিস্তারিত নকশা প্রণয়নে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই বছরের ২৭ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সেতুতে গাড়ির পাশাপাশি রেল চলাচলের সুযোগ রেখে প্রকল্প সংশোধন করে। এতে ব্যয় দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। বেড়ে যায় সেতুর দৈর্ঘ্য। ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঋণচুক্তি করা হয়। পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক পরের বছরের ৩০ জুন চুক্তি বাতিল করে। সরে যায় সহ-অর্থায়নকারী জাইকা, এডিবি ও আইডিবিও। মালয়েশিয়ার সঙ্গে পিপিপি ভিত্তিতে সেতু নির্মাণে আলোচনা হলেও, দেশটিও পিছিয়ে যায়।

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালের ৯ জুলাই এক বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সংসদেও একই ঘোষণা দেন। ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর মূল সেতুর ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টম্বর সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের উপর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। এরপর ২০১৮ সালে চারটি, ২০১৯ সালে ১৪টি, ২০২০ সালে ২২টি স্প্যান বসানো হয়। এরপর বাকি কাজ শেষ করা হয়।

রাজনৈতিক, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে নির্মাণ করা হয়েছে এ সেতু। সেতুর কাজের মান নিয়েও বারবার প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এছাড়া প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশও বারবার বাধা তৈরি করেছে। আনপ্রেডিক্টেবল পদ্মা নদীতে এ সেতু নির্মাণই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। আমাজনের পরই খরস্রোতা নদী হিসাবে পদ্মা বিবেচিত। এ নদীতে সেতু নির্মাণ সফলভাবে শেষ করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। সেতু বিভাগ এ সেতুকে বিশ্বের ‘মোস্ট কমপ্লেক্স সেতু প্রকল্প’ হিসাবে আখ্যায়িত করেছে। এ সেতুর স্থায়িত্বকাল ধরা হয়েছে ১০০ বছর।

আরও জানা গেছে, পদ্মা নদী ভাঙনপ্রবণ ও খরস্রোতা হওয়ার কারণে এ সেতুর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে পিলার ও পাইল বসানোর ক্ষেত্রে যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে; তা বিশ্বে প্রথম। এ সেতুতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১২২ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত পাইল বসানো হয়েছে; যা ৪০ তলা বিশিষ্ট ভবনের সমান। অর্থাৎ এসব পাইল নদীর পানি ভেদ করে ১২২ মিটার পর্যন্ত গভীরতা পর্যন্ত ঠেকেছে। তবে কিছু পাইলের গভীরতা ৯৮ মিটার থেকে বিভিন্ন আকারের রয়েছে। প্রতিটি পিলারের ডায়ামিটার তিন মিটার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নদীর গতিপ্রকৃতি বিবেচনায় সেতুর পাইল নির্মাণে কয়েকবার ডিজাইন পরিবর্তন করতে হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, পদ্মা নদীর স্রোতের তীব্রতা প্রতি সেকেন্ডে ৩ থেকে সাড়ে ৪ মিটার। নদীর প্রবাহমাত্রা প্রতি সেকেন্ডে দেড় লাখ ঘনমিটার। নদীর তলদেশে স্রোতে ৬২ মিটার পর্যন্ত মাটি সরে যায়। নদীর এমন আচরণ সহনীয় ফাউন্ডেশনের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পদ্মা সেতু। নদীর তলদেশের মাটি নরম হওয়ায় ওইসব স্থানের ১১টি পিলারের নিচে স্কিন গ্রাউন্টিং পদ্ধতিতে সাতটি করে পাইল রয়েছে। পদ্মা সেতুতে ভূমিকম্প প্রতিরোধক হিসাবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়েছে। এর ক্যাপাসিটি ৯৮ হাজার কিলোনিউটন। রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রা পর্যন্ত ভূমিকম্প সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে এ সেতুর। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হ্যামার ব্যবহার করা হয়েছে; যার সক্ষমতা তিন হাজার ৫০০ কিলোজুল। চার হাজার টন সক্ষমতার জাহাজ আঘাত দিলেও সেতুর ক্ষতি হবে না।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More