বঙ্গবাজারে আগুনের দায় সরকারের: মির্জা ফখরুল

 

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিকা-ের ঘটনায় সরকার ও তার বিভিন্ন সংস্থার অবহেলাকে দায়ী করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘কী দুর্ভাগ্য এ দেশের, চতুর্দিকে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। অথচ অগ্নিনির্বাপণের জন্য যে আধুনিক ব্যবস্থা করা দরকার তা নেই। এই সরকারের গুরুত্ব হচ্ছে কোন জায়গায় তারা কমিশন বেশি পাবে, কোন জায়গায় টাকা উপার্জন বেশি হবে সেখানে। বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিকা-ের জন্য দায়ী সরকার। এই দায় নিয়ে তাদের পদত্যাগ করা উচিত।’ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারলাম, বেশ কিছুদিন আগে সেখানে (বঙ্গবাজার মার্কেটে) সিটি করপোরেশন এটাকে ঠিক নিরাপদ নয়-এই ধরনের ঘোষণা দেয়। এরপর সেখানে খালি করার জন্য তাদের (বঙ্গবাজার মার্কেটের ব্যবসায়ীদের) বলেছে, এটা (মার্কেট) ঠিক করা উচিত। কিন্তু নো-বডি টেকেন ইন্টারেস্ট। কারও যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।’ তিনি বলেন, ‘একটা কাঠের স্ট্রাকচার বলা যায়। সেটা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে রেখে সরকার বলুন, যেসব সংস্থা আছে যারা এসবের দায়িত্বে রয়েছে তারা বা সিটি করপোরেশন-কেউ কিন্তু এই দায়িত্বটা পালন করেনি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর উদাসীনতা, অযোগ্যতা, দুর্নীতি, নজরদারির অভাবের কারণে এই ধরনের ভয়াবহ পরিণতির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সিদ্দিকবাজারে কিছুদিন আগে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে ২১ জনের প্রাণ গেছে। এখানে (বঙ্গবাজার মার্কেট) আল্লাহর রহমতে কারও প্রাণ যায়নি। কিন্তু যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সেটা ভয়ংকর। এই নিম্ন-আয়ের মানুষগুলো অথবা সাধারণ ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছেন, ঈদের আগে যখন ব্যবসায়ীরা তাদের সর্বস্ব পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন।’

জার্মানির ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সম্প্রতি র‌্যাবের ওপর একটি ডকুমেন্টারি করেছে ডয়েচে ভেলে। এটা খুব সেনসিটিভ হওয়ার কারণে দেশের বেশির ভাগ পত্রিকা কোনো নিউজ করেনি, কেউ বলেনওনি। সেনসিটিভ হলেও এটা বাস্তবতা, যা ডয়েচে ভেলে করেছে। এই ডকুমেন্টারির বিরুদ্ধে নেগেটিভ কোনো কিছু, যে অস্বীকার করা, সেটা কিন্তু আসেনি।’

তিনি বলেন, ‘এই ডকুমেন্টারি প্রমাণ করেছে, অনির্বাচিত সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই কাজগুলো করছে।’ সরকার রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে মানবাধিকারবিরোধী, সংবিধানবিরোধী এসব কাজ করছে অভিযোগ করে অবিলম্বে তা বন্ধের দাবি জানান তিনি। বুধবার নরসিংদীতে দলীয় সভা চলাকালীন কিছু লোক পুলিশের ছত্রছায়ায় বিএনপি কার্যালয় আক্রমণ করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এতে জানালা-দরজা ভেঙে পড়ে। ককটেল মিটিংয়ের মধ্যেও এসে পড়ে। স্বাভাবিকভাবে মিটিং প- হয়ে যায়। একটি রাজনৈতিক দল তার জেলা কার্যালয়ে সভা করবে, এটা তার সম্পূর্ণ সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার। সরকার বারবার চিৎকার করে বলছে, আমরা গণতন্ত্রের জন্য কোনো বাধা দিচ্ছি না কোথাও। নরসিংদীর ঘটনাই প্রমাণ করে তারা বাধা দিচ্ছে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশের সামনে কী করে দুষ্কৃতীকারী কার্যালয়ে ঢুকল এবং সভা প- করে দিল।’

বুধবার রাতে রাজধানীর নিকুঞ্জের ৫নং সড়কে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল সভাপতি আবু হোরায়রা, সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল ইসলাম তালুকদার বিন্দু ও সহদপ্তর সম্পাদক আনোয়ারের ওপর হামলায় ছাত্রলীগকে দায়ী করে দোষীদের গ্রেফতার দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More