বিএনপির জোট ছেড়েছে জামায়াত : রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়

সামনের নির্বাচনী রাজনীতিতে নিজেদের মতো করে মাঠে নামবে দলটি
স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় দুই যুগের জোটবদ্ধ রাজনীতি। দীর্ঘ এ সময়ে নির্বাচন-আন্দোলনসহ নানা ইস্যুতে একসঙ্গে পথচলা। শুরুতে চার দলের জোট। পরে পরিধি বেড়ে হয় ২০ দল। মূল ভূমিকায় ছিল বিএনপি আর জামায়াত। দুই দলের রাজনৈতিক গাঁটছড়া নিয়ে ছিল নানা আলোচনা-সমালোচনা। কিছু কারণে দল দুটি’র নেতাকর্মীদের মধ্যেও ছিল অস্বস্তি। বেশ কিছুদিন ধরে দূরত্ব স্পষ্ট হচ্ছিল ক্রমে। সম্প্রতি এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে দীর্ঘ দিনের জোটসঙ্গী বিএনপি থেকে আলাদা হয়ে পথ চলার ঘোষণা দিয়েছেন জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তার ওই অনানুষ্ঠানিক বক্তব্যটি অবশ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। এতে তোলপাড় শুরু হয় রাজনৈতিক অঙ্গনে। চলছে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা। বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোট থেকে জামায়াতের সরে দাঁড়ানোকে রাজনীতিতে নয়া মেরুকরণের আভাস হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। একইসঙ্গে দেশের চলমান রাজনীতিতে এটি নতুন এক পরিবর্তন বলেও মনে করা হচ্ছে। জামায়াতের জোট ছাড়া নিয়ে অবশ্য মিত্র দলগুলোর মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এমনকি জামায়াতের নেতাকর্মীরাও এ নিয়ে অখুশি বা উৎফুল্ল নন।
জামায়াত আমীরের ঘোষণায় এটা স্পষ্ট যে, সামনের নির্বাচনী রাজনীতিতে নিজেদের মতো করে মাঠে নামবে দলটি। সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলনে গেলে জামায়াতও এর অংশ হবে। কেউ কেউ বলছেন, সামনের বৃহৎ সরকারবিরোধী আন্দোলন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নিজস্ব শক্তি নিয়ে প্রস্তুতি নিতে চাইছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সম্ভাব্য আন্দোলন নিয়ে নিজেদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও হচ্ছে। এমন অবস্থায় বোঝাপড়ার মাধ্যমেই ২০ দলের অন্যতম দল জামায়াত জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুদূরপ্রসারী চিন্তা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। এটা হতে পারে তাদের পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজি। আর এই সিদ্ধান্তের কারণে দুই দলের অবস্থান অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছে। কারণ বিএনপি’র পক্ষ থেকে অনেক আগ থেকেই জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার বিষয়ে ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন নেতারা। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে দলের নিবন্ধন ফিরে পেতে চেষ্টা করছে জামায়াত। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে বড় শোডাউন, সিলেট অঞ্চলে বন্যাসহ নানা দুর্যোগে নির্বিঘেœ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের তৎপরতায় নতুন বার্তা বলে মনে করছিলেন অনেকে।
জামায়াত সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বিএনপি’র নেতাদের সঙ্গে আগামী নির্বাচন, আন্দোলন, জোটসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। সেখান থেকেই মূলত জোট ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে জামায়াতের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানেও বিএনপি’র সঙ্গে আর না থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসে। তবে বিষয়টি ঘোষণা দিয়ে সামনে আনতে চায়নি জামায়াত।
দলটির নীতিনির্ধারকদের ভাষ্য, দেশে এখন কোনো আন্দোলন বা নির্বাচন নেই। তা ছাড়া জোটের প্রধান দল বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকে রাজনীতির মাঠে ২০দলীয় জোটকে অনেকটাই অকার্যকর করে রেখেছে। একই সঙ্গে জামায়াতও শরিক দল হিসেবে বিএনপি’র কাছে গুরুত্ব হারিয়েছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ঐক্যফ্রন্টকে প্রাধান্য দিয়েছে বিএনপি। ওই নির্বাচনে জোটের আসন ভাগাভাগিতে জামায়াত চাহিদা অনুযায়ী আসন পায়নি। যে কয়টি আসন পেয়েছে, সেগুলোতে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ নিয়েও গড়িমসি ও দীর্ঘসূত্রতা করে বিএনপি। জামায়াত নেতারা মনে করছেন, জোট থেকে সঠিক মূল্যায়ন না পেলেও জোটে থাকার কারণে নেতাকর্মীদের চরম মূল্য দিতে হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের রোষানলে পড়তে হচ্ছে নানাভাবে। এমন অবস্থায় জোটে না থাকাকেই তারা শ্রেয় মনে করছেন।
এদিকে বিএনপি’র একটি অংশ অনেক দিন ধরে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে দলের নীতিনির্ধারকদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন। তারা বলছেন, জামায়াতের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলের অনেকের বিরূপ ধারণা রয়েছে। জামায়াত যদি জোট ছেড়ে যায়, বিএনপি তাদের ফেরানোর চেষ্টা করবে না।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপি’র মিত্রতা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু থেকেই সমালোচনা রয়েছে। বিশেষ করে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতাদের বিচার এবং ফাঁসির পর সারা দেশে দলটির নেতাকর্মীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেশ-বিদেশে আলোচিত-সমালোচিত হয়। তখন থেকে বিভিন্ন মহল থেকে বিএনপি’র ওপর চাপ বাড়ে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার।
সম্প্রতি দলের এক সভায় ভার্চ্যুয়াল বক্তব্যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা এতদিন একটা জোটের সঙ্গে ছিলাম। ছিলাম বলে আপনারা হয়তো ভাবছেন কিছু হয়ে গেছে নাকি? আমি বলি হয়ে গেছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এটি একটি জোট ছিল। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জোট তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। সেদিন বাংলাদেশ পথ হারিয়ে ছিল। সেটা আর ফিরে আসেনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বছরের পর বছর এই ধরনের অকার্যকর জোট চলতে পারে না। এই জোটের সঙ্গে বিভিন্ন দল যারা আছেন, বিশেষ করে প্রধান দলের (বিএনপি) এই জোটকে কার্যকর করার কোনো চিন্তা নাই। বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট দিবালোকের মতো এবং তারা আমাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন বাস্তবতা হচ্ছে নিজস্ব অবস্থান থেকে আল্লাহর ওপর ভর করে পথ চলা। তবে হ্যাঁ জাতীয় স্বার্থে একই দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ।
বিএনপি’র সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমীর বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছি, এর সঙ্গে তারা ঐকমত্য পোষণ করেছে। তারা আর কোনো জোট করবে না। এখন যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করবো। যদি আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করেন তাহলে আমাদের আগামী দিনগুলোতে কঠিন প্রস্তুতি নিতে হবে এবং অনেক বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। দোয়া করেন, এ সকল ত্যাগ যেন আল্লাহর দরবারে মঙ্গলজনক হয়। এ ত্যাগের বিনিময়ে আল্লাহ পাক যেন আমাদের পবিত্র একটি দেশ দান করে। যে দেশটা কোরআনের আইনে পরিচালিত হবে।
জামায়াতের আমীরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তিনি (জামায়াতের আমীর) বলেছেন আলোচনার মাধ্যমে যুগপৎ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলনের কথা বলেছেন। এটা তো বিএনপি আরও এক বছর আগে থেকেই বলে আসছে। এটা নতুন কোনো কথা না। ওনি যেটা বলেছেন, সেটা সঠিক বলেছেন। আলোচনার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে, যার যার অবস্থান থেকে যুগপৎ আন্দোলন করবে।
এতে করে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি’র কোনো দূরত্ব বাড়লো কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা তো দূরত্বের কিছু না। সার্বিক রাজনৈতিক বিবেচনায় যুগপৎ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জামায়াত তো অনেকগুলো পার্টির মধ্যে একটা পার্টি। আমরা ডান, বাম, মধ্যপন্থি, ইসলামী দল সবাইকে মাথায় রেখে এবং আলোচনা করেই যুগপতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বিষয়ে সবাই মতামত দিয়েছে। এখানে জামায়াত কোনো ইস্যু না। এখানে জামায়াতকে এনে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার কোনো সুযোগ নাই।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমরা আগে থেকেই বলেছি যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে। আর জামায়াতের এই বক্তব্যের ফলে তাদের সঙ্গে তো দূরত্বের কিছু নাই। এটা একটা পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজি। আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি যে, যুগপৎ আন্দোলন করবো। তারা তাদের অবস্থান জানিয়েছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এটা তো বিএনপি’র আচরণ দেখেই বোঝা যায়। কারণ বিএনপি তো একাই চলছে। আর আমি মনে করি জামায়াত আমীরের অবজারবেশন হান্ড্রেড পারসেন্ট রাইট। এই উপলব্ধিটা যদি তার সঠিক হয় তাহলে বিএনপি’র এখন উচিত যুগপৎ আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরি করা বা কাজ করা। কারণ আন্দোলনের সময়টা কিন্তু এখন। এই সময় যদি হারিয়ে যায় তাহলে ‘সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়’ এমন অবস্থা হতে পারে।
তিনি বলেন, ওনি যে বক্তব্যটা রেখেছেন সেখানে তিনি বাস্তবতাটা তুলে ধরেছেন। কিন্তু বক্তব্যের কোথাও তো সমালোচনা নাই। আর এই জোট অকার্যকর তো বটেই। সেটা উনি বলেছেন। তবে তিনি কোনো দোষারোপের মধ্যে যাননি। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীর প্রতীক) বলেন, এটা জামায়াতের একটা অনানুষ্ঠানিক বক্তব্য। কিন্তু এটা গুরুত্ব বহন করে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে জামায়াতের অফিসিয়ালি বক্তব্য কি হয়। পাশাপাশি আমাদের অপেক্ষা করতে হবে ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক বিএনপি’র সিদ্ধান্ত কি হয়। তারা জোটকে সক্রিয় করেন কি করেন না। জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আমাদের কোনো অফিসিয়াল বা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রচার করে থাকি। এই জাতীয় কোনো বক্তব্য আমরা প্রচার করিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন একটা জোটের মধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দল থাকে তখন তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মত থাকতে পারে। এখানে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি’র কোনো টানাপড়েন যাচ্ছে না। কারণ ভিন্নমত থাকতেই পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, আমার মনে হয় জামায়াত কখনো তাৎক্ষণিক ফল পাওয়ার জন্য রাজনীতি করে না। তাদের হয়তো সুদূর একটা পরিকল্পনা রয়েছে। এই সুদূর চিন্তা বা পরিকল্পনা থেকেই জামায়াত একলা চলো নীতি গ্রহণ করেছে বলে আমার মনে হয়। আর এখানে দুইটা দলই দুইটাকে ছেড়েছে। কারণ জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি তেমন খুশি ছিল বলে আমার মনে হয় না। আর বিএনপি’র সঙ্গে জোট করে জামায়াতেরও তো তেমন কোনো লাভ হয়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়তে গিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ চারদলীয় জোট গঠন হয়। একসঙ্গে আন্দোলনের পর এই জোট ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পায় এবং সরকার গঠন করে। চার দলীয় জোট সরকারে জামায়াতের তৎকালীন আমীর মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। শুরুর দিকে চারদলীয় জোটের শরিক ছিল এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট ও জামায়াতে ইসলামী। একপর্যায়ে এরশাদ চার দল ছেড়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে গেলে জাতীয় পার্টির নেতা নাজিউর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে দলটির একটি অংশ (যা পরে বিজেপি হয়) চার দলে থেকে যায়। চারদলীয় জোট পরে ২০ দলীয় জোটে রূপান্তরিত হয়। বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জোট থেকে বিভিন্ন সময়ে একাধিক ইসলামিক দল বেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে এই জোট ছাড়ে প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর দল ইসলামী ঐক্যজোট। এর এক দশক আগে ২০০৬ সালে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বিএনপি জোট ছেড়ে যায়। অষ্টম জাতীয় সংসদ থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত একসঙ্গে আন্দোলন ও নির্বাচন করেছে বিএনপি-জামায়াত।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, বিএনপি’র বড় উইকেট পড়ে গেছে। জামায়াতে ইসলাম বলেছে তারা বিএনপি জোটের সঙ্গে আর নেই। বিএনপি নৈরাজ্য করে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। রাস্তায় নৈরাজ্য করলে বাংলাদেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মুখে আঙ্গুল দিয়ে বসে থাকবে না। তারাও আন্দোলন গড়ে তুলবে।
গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। আব্দুর রহমান বলেন, বিএনপি কখনো সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। জিয়াউর রহমান বিচারপতি সায়েমের বুকে পা দিয়ে চেপে, বন্দুক ঠেকিয়ে স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট হয়েছিল। ১৯৯১ সালে দেশি-বিদেশি যড়যন্ত্র করে বিএনপি কারচুপি করে ক্ষমতায় এসেছে। ২০০১ সালে বাংলাদেশের মানুষের গ্যাস ভারতে রপ্তানি করবে বলে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। এখন বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়।
তিনি বলেন, বিএনপি র‌্যাব সৃষ্টি করেছিলো। ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ বাবুকে প্রথম গুম করে বিএনপি। বিএনপি চট্টগ্রামে নিজেদের নেতা জামালকেও গুম করে, ৪২ দিনের মাথায় তার লাশ পাওয়া যায়। শেখ হাসিনা অর্ন্তবতীকালীন সরকারের প্রধান হবেন বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের অন্যতম এই নীতিনির্ধারক বলেন, গুমের নামে অনেকে নাটক করে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট ঢাকায় এলে মির্জা ফখরুল ভাবলেন তাদের ক্ষমতায় বসাবে। তারা যখন বলছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংকট নেই, তখন বিএনপি’র মুখ চুপসে গেছে। ভারতে নরেন্দ্র মোদি যখন প্রধানমন্ত্রী হলেন তখন মেকআপ করে তৈরি হয়ে গেলেন যেন এবার তাকে (খালেদা জিয়া) প্রধানমন্ত্রী বানাবে। তারপর ভাবলো, হিলারি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে তাকে ক্ষমতায় বসাবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More