মায়ের কবরের পাশে সমাহিত হবেন ক্যাপ্টেন নওশাদ

রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম। বাংলাদেশ বিমানের ক্যাপ্টেন আবু সাপা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার ২ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় বাংলাদেশে বিমানের বিজি-০২৬ ফ্লাইটে ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসবে। তখন বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বিমানের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল ও েবাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান উপস্থিত থাকবেন।
বাংলাদেশ বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবনের সামনে ক্যাপ্টেন নওশাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বাদ জোহর। তারপর বনানী কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে তাকে। সোমবার ভারতের নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ক্যাপ্টেন নওশাদ।
গত ২৭ আগস্ট ওমানের মাস্কাট থেকে ১২৪ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (বিজি-০২২) উড্ডয়ন করেছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ। পথে ভারতের আকাশে তিনি হার্ট অ্যাটাক করেন। পরে প্লেনটিকে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয়। সেখান থেকে নওশাদকে নেওয়া হয় হাসপাতালে। ওই ফ্লাইটে ১২৪ জন যাত্রী ছিলেন। পরে যাত্রীদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। শুক্রবার সকালে ওমানের মাস্কাট থেকে ১২৪ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (বিজি-০২২) উড্ডয়ন করেছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ। পথে ভারতের আকাশে তিনি অসুস্থ বোধ করেন। কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল প্লেনটিকে তার নিকটস্থ নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিলে কো-পাইলট উড়োজাহাজটি নিয়ে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন। পরে ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুমকে নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয়। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের প্লেনটিতে ১২৪ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে ছিলেন। এদিকে শুক্রবারই আরেকটি ফ্লাইটে করে আট সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল নাগপুরে যায়। মধ্যরাতের পর প্লেনটিকে যাত্রীসহ ঢাকার বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ভোরে মাস্কাট বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ প্লেনে ১৪৯ যাত্রী ও সাত ক্রু নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করেন ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল। বিজি-১২২ ফ্লাইটটি উড্ডয়ন করার পর মাস্কাট বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে ক্যাপ্টেন নওশাদকে জানানো হয়, রানওয়েতে টায়ারের কিছু অংশ পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত তার প্লেনের হতে পারে। ওই তথ্যের পর অধিকতর নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাপ্টেন নওশাদ তার ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের পরিবর্তে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন।
এ সময় তার অনুরোধে ঢাকায় জরুরি অবতরণের জন্য সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অবতরণের আগে ক্যাপ্টেন ফ্লাইটটি নিয়ে রানওয়ের উপরে দুই বার লো-লেভেলে ফ্লাই করেন। তখন দেখা যায়, আসলেই প্লেনটির পেছনের দুই নম্বর টায়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু ক্যাপ্টেন নওশাদ অসামান্য দক্ষতার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত টায়ার ও ল্যান্ডিং গিয়ারসহ নিরাপদে ফ্লাইটটি অবতরণ করাতে সক্ষম হন। সবাই সুস্থ ও নিরাপদে প্লেন থেকে নেমে আসেন।
এমন দক্ষতার কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুমকে পেশাগত দক্ষতা ও নৈপুণ্যের প্রশংসা করে স্বীকৃতি দেয় আন্তর্জাতিক পাইলট অ্যাসোসিয়েশন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More