শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন আজ

স্টাফ রিপোর্টার: মহামারী করোনাভাইরাসের মধ্যেই বেদনা আর শোকের দুর্বিষহ স্মৃতি নিয়ে আবারও হাজির হয়েছে শোকাবহ আগস্ট। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানো বেদনাবিধূর মাসের প্রথম দিন আজ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে নরপিশাচরূপী ঘাতকচক্র। এরপর থেকে দিনটি মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকা-ের কালিমালিপ্ত বেদনাবিধূর শোকের মাস হিসাবে পরিচিত। যিনি আজীবন সংগ্রাম আর ত্যাগে আমাদের মহান স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় তারই প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল হায়েনার দল। জাতির পিতাকে হত্যা করেও বাঙালির কাছ থেকে তাকে আলাদা করতে পারেনি ঘাতকরা। আগস্ট এলেই কোটি কোটি বাঙালি শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করে তাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় বঙ্গবন্ধুকে ঠাঁই দেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবি শামসুর রাহমান তার ‘ধন্য সেই পুরুষ’ কবিতায় লিখেছেন- ‘ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর রৌদ্র ঝরে চিরকাল, গান হয়ে নেমে আসে শ্রাবণের বৃষ্টিধারা; যাঁর নামের ওপর কখনো ধুলো জমতে দেয় না হাওয়া, ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর পাখা মেলে দেয় জ্যোৎস্নার সারস, ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর পতাকার মতো দুলতে থাকে স্বাধীনতা, ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর ঝরে মুক্তিযোদ্ধাদের জয়ধ্বনি।’
ত্যাগ, সংগ্রাম, বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্ব, অদম্য স্পৃহা, দৃঢ় প্রত্যয়, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও আদর্শের দ্বারা বঙ্গবন্ধু সমগ্র বাঙালি জাতিকে উজ্জীবিত করেছিলেন। স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত আত্মত্যাগে তিনি গোটা জাতিকে দীক্ষিত করে তুলেছিলেন। তার নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের জন্মলাভ, ’৪৮-এর মার্চে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রতিবাদে আন্দোলন, ’৪৯-এর ২৩ জুন আওয়ামী লীগের জন্ম, ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ৬-দফা, ’৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও ১১-দফা, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচনে ‘আওয়ামী লীগ’-এর নিরঙ্কুশ বিজয়সহ ইতিহাস সৃষ্টিকারী নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা চূড়ান্ত লক্ষ্যে এগিয়ে যায়।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিশপথে ঐক্যবদ্ধ হয় বাঙালি জাতি। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করলে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্বে পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেন বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। বাংলার ইতিহাসের মহানায়ক। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বাঙালি জাতির পিতা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More