স্টাফ রিপোর্টার: চলতি বছরের মতো সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই নেয়া হবে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। ২০২২ সালের জন্য নির্ধারিত এক ও অভিন্ন পুনর্বিন্যাসকৃত (সংক্ষিপ্ত) সিলেবাসে আগামী বছরের এ দুই পাবলিক পরীক্ষা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এনসিটিবির প্রস্তাব পেয়ে পরীক্ষার সিলেবাস জানাতে আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেলা সাড়ে ১২টায় এটি অনুষ্ঠিত হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা চলতি বছরের মতো পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে নেয়া হবে। তবে কতটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে, কত নম্বরে আর কত সময়ে হবে তা শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে (আজ) ঘোষণা করবেন।’ এনসিটিবির পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ মহামারির কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় সরাসরি পাঠদান ব্যাহত হয়েছে। ২০২৩ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচিতে নাকি পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে সে বিষয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন। বর্তমানে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা আগামী বছর এসএসসি ও সমমানে এবং একাদশে পড়–য়া শিক্ষার্থীরা এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবে। তথ্যমতে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ২০২১ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে নবম শ্রেণিতে ক্লাস করার কথা থাকলেও তারা সশরীরে ক্লাস শুরু করেছে ওই বছর ১২ সেপ্টেম্বর। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা ওই বছরের ১ জুলাই সশরীরে ক্লাস শুরুর পরিবর্তে শুরু করেছে চলতি বছরের ২ মার্চ। করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ সময় তারা সরাসরি অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও অনলাইন ক্লাস এবং অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা শিখন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে। তবু শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি রয়েই গেছে। ১৫ মার্চ সব শ্রেণিতে সরাসরি পাঠদান শুরু হয়েছে।
আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেয়ার যুক্তি হিসেবে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ বলছেন, ২০২৩ সালের পরীক্ষার্থীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস অনুসরণ করা হলে পূর্ণ সিলেবাস সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না তাদের পক্ষে। এ ছাড়া আগামী বছরের পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্নপত্র প্রণয়নের পাশাপাশি শিক্ষা বোর্ডের অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য ২০২১ ও ২০২২ সালের সিলেবাস অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হবে, যা শিক্ষা বোর্ডসহ পরীক্ষা গ্রহণকারী সংশ্লিষ্ট সবার জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে। কিন্তু চলতি বছরের সিলেবাস অনুযায়ী আগামী বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নিলে এ সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে। ২০২২ সালের সিলেবাস অনুযায়ী পুনর্বিন্যাসকৃত বিষয়কাঠামো, পাঠ্যসূচি, প্রশ্নসংখ্যা ও নম্বর বণ্টন ২০২৩ সালের জন্য একইভাবে কার্যকর হলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবার পক্ষে তা অনুসরণ করা সহজ হবে। এ ছাড়া চলতি বছরের পরীক্ষার্থীদের মতো আগামী বছরের পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকা ছাত্রছাত্রীরা একই সিলেবাস অনুসরণ করে অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, ‘চলতি বছরের সিলেবাসের মতো আগামী বছরও এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিতে মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছি। মার্চে এ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব দিলেও পরীক্ষার যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।’
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ