লোকজ উৎসব পসানালী অতীতকে স্মরণ করিয়ে দেয়

দর্শনা আকন্দবাড়িয়ায় লোকজ উৎসবের ২য় দিনের আলোচনায় সরদার আল আমিন

 

দর্শনা অফিস: “মুজিব বর্ষে আহ্বান, প্রাণ খুলে গাও মাটির গান” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতিবারের মতো এবারও দর্শনা আকন্দবাড়িয়ায় ৩ দিনব্যাপী মুজিব শতবার্ষিকী ও গ্রামীন লোকজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আকন্দবাড়িয়া বাউল পরিষদের আয়োজনে এ উৎসবের ২য়দিন ছিলো গতকাল শুক্রবার। এ দিনের আয়োজনমালায় বিকেল ৩ টায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে দড়াটানা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিকুর রহমান। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত আলোচনাসভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক মাথাভাঙ্গার প্রকাশক-সম্পাদক চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন। বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, একজন মানুষ, যখন মানুষ হয় তখন থেকেই শুরু হয় লাঠির প্রচলন। কারণ মানুষ অন্য প্রাণীর হাত থেকে রক্ষা পেতে যে লড়াই করেছে তা সেই লাঠির মাধ্যমেই করেছে। সে থেকেই লাঠি খেলার প্রচলন হয়ে আসছে আমাদের সমাজে। পাশ্চাত্য সাংস্কৃতির কারণেই বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি, দড়াটানাসহ লোকজ সাংস্কৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই আমাদের প্রজন্ম যেনো কোনোভাবেই অতীতকে ভুলে না যায়। মনে রাখতে হবে যে অতীত ভোলে না, সামনের দিনগুলো হয়ে ওঠে তার সুন্দর ও উজ্জলময়। বাউলরাই পারে অপসাংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে সুস্থ সাংস্কৃতি ধারা ফিরিয়ে আনতে। সেক্ষেত্রে ধীরু বাউল একজন গুণি মানুষ হিসেবে এলাকায় খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার এ সাহসী ভূমিকাকে আমি সাধুবাদ জানাই। ধীরু বাউলের এ ধরণের আয়োজন যেমন রুখে দেয় আকাশ ও অপসাংস্কৃতিকে, তেমনই সাধরণ মানুষ বিনোদনের মাধ্যমে তৃপ্তির ছোঁয়া। তাই লোকজ উৎসবই ফিরিয়ে আনতে পারে বাংলার ঐতিহ্যে লালিত আমাদের সোনালী অতীত। উৎসবের আয়োজক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী, ট্যালেন্ড হান্ট টপটেন বাউল ধীরুর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি, সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন জোয়ার্দ্দার, সাংবাদিক মফিজ উদ্দিন, দৈনিক মাথাভাঙ্গার অকৃত্রিম বন্ধু মনিরুল ইসলাম, হিজলগাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি সাইফুল আজম মিন্টু, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার হোসেন বকুল, সাংবাদিক মাহফুজ মামুন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দর্শনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হানিফ ম-ল। আলোচনা পর্ব শুরুর আগে নিত্য পরিবেশন করেন ক্ষুদে বাউল প্লাবন। পরে সংগীত পরিবেশন করেন ধীরু বাউলসহ আগত ও স্থানীয় শিল্পীরা। সবশেষে পরিবেশিত হয়েছে দেশবরণ্য শিল্পী সুজন সরকার ও রেশমা সরকারের পালাগান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধান অতিথিসহ বিশেষ অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় বাউল পরিষদের পক্ষ থেকে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিকুর রহমানকে বাউল পরিষদের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও হরেক রকম প্রসাধনী ও খেলনা-পাতির স্টল দিয়ে সাজানো হয়েছে মেলা চত্বর। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নাগর দোলা, ঝাপান, লাঠি খেলা, সাপ খেলা, বাউল গান, যাত্রাপালাসহ বিভিন্ন আয়োজন থাকছে মেলার প্রতিদিনের অনুষ্ঠানমালায়। শেষে দুদিনব্যাপী ক্রীড়া প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণ করেন সরদার আল আমিন।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More