বিবাহ তালাক রেজিস্ট্রিতে অনিয়ম/জালিয়াতি রোধে করণীয়

কাজী মোঃ শামছুল হক

বিবাহ-তালাক রেজিস্ট্রিতে
অনিয়ম/জালিয়াতি রোধে করণীয়

বিবাহ/তালাক রেজিস্ট্রিতে নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হাজির হলে প্রথমে দেখবেন কাজী সাহেব যে বইটি এনেছেন; তাতে কোন কাজীর সিলমোহর, স্বাক্ষর আছে কি না? থাকলে সিলে কোন সীমানা/এলাকা ব্যবহার করা আছে। তিনি আপনার এলাকার নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী কিনা? কাজী নিজেই না সহকারী, সহকারী বৈধ না। নিজ এলাকার বাহিরে যেয়ে বিবাহ্ রেজিস্ট্রি করার এখতিয়ার কোন কাজীর নেই। হায়ার করা কাজী দ্বারা বিবাহ্ রেজিস্ট্রি করবেন না, ওই কাবিননামা গ্রহণযোগ্য হবে না। আপনার বিবাহ্ তালাক সম্পন্ন হওয়ার পরপরই রেজিস্ট্রি কাবিননামা বুঝে নিন। দেরি হলে কাবিননামার জন্য আলাদা ফি দাবি করতে পারে। রেজিস্ট্রি ফি প্রদান করলে বিনা খরচে কাবিননামা পাবেন। অসৎ কাজীরা বলে থাকেন যে, কাবিননামা ৩ মাস পরে রেজিস্ট্রি হবে, কথাটা প্রতারণামূলক। প্রয়োজনে বিবাহের ১ ঘণ্টার মধ্যে কাবিন নামা দেয়া সম্ভব। যদি কেহ বাহিরের জেলার কোন কাজীর নামে রেজিস্ট্রি দেখায়, এই ব্যক্তি প্রতারক, ধোকাবাজ মিথ্যা বলছে, জেলার বাহিরে কাজীর নিকট থেকে রেজিস্ট্রি করার মতো কোনো নিয়ম নেই, লুজ ফরমে বা সাদা কাগজে লিখে রেজিস্ট্রি করা সরাসরি জালিয়াতি করা। কারণ বিবাহ, তালাকে পক্ষগণের স্বাক্ষর রেজিস্ট্রি বালামে আবশ্যক। লুজ ফরম বা সাদা কাগজে যে স্বাক্ষর করা তা বালাম বইতে রেজিস্ট্রি করতে হলে পক্ষগণের স্বাক্ষর অন্য কেহ লিখে দিলে তা জাল ছাড়া আর কিছু না। জাল কাবিননামা হলে ভবিষ্যতে আপনার কাবিননামা নাও পেতে পারেন, দেনমোহার বাড়ানো বা কমানো হতে পারে। সরকার বিবাহ তালাক রেজিস্ট্রি ফি বাড়িয়েছে, বর্তমানে প্রতি হাজারে ১৪ টাকা, ১ লাখে ১৪শ টাকা। এমনভাবে পাঁচ লাখে ৭ হাজার টাকা এবং ৫ লাখের ওপরে গেলে প্রতি লাখে মাত্র ১শ টাকা, ওই ৭ হাজার টাকার সাথে যোগ হবে। তালাক রেজিস্ট্রি ফি ১ হাজার টাকা। বিবাহ রেজিস্ট্রিতে বেশি দাবি করলে রসিদ নেবেন। আর যদি কম নেয় তাহলে বুঝবেন সে আপনাকে ফাঁকি দিয়ে গোপন বইতে করছে, যার হিসাব সরকারি খাতে পাবেন না। বাল্যবিবাহ্ এক শ্রেণির প্রতারক জালিয়াত চক্র সরলমনা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করে দেয়ার কথা বলে মোটাঅংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। কোর্ট ম্যারেজ বলে বাংলাদেশে কোনো আদালতে বিবাহ্ রেজিস্ট্রির বিধান নেই। কোন কাজী, ইমাম, হুজুর ও উকিল দ্বারা কোর্ট ম্যারেজ ধোঁকাবাজি। বাংলাদেশে সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত নিকাহ্ রেজিস্ট্রারই বিবাহ রেজিস্ট্রারযোগ্য। বাল্যবিবাহ্ যখন একজন নিকাহ্ রেজিস্ট্রার রেজিস্ট্রি করছে না সেখানে একজন অসৎ কাজী বা যেই হোক না কেন তারা রেজিস্ট্রি করলেও রেজিস্ট্রি হবে না এবং আপনাকে যে কাগজ বা কাবিননামা কোর্ট ম্যারেজ হিসেবে দিচ্ছে তা ভূয়া। ভবিষ্যতে এ কাবিননামাহ বিপদে আপনার কাজে আসবে না। এই জাতীয় কাবিননামা/কোর্ট ম্যারেজ আইন আদালতে সঠিক প্রমাণ করতে পারবেন না, আমার চ্যালেঞ্জ। বাল্যবিবাহ্ রাস্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ, প্রতারকরা কৌশলে বাল্যবিবাহ্ রেজিস্ট্রি করে দিচ্ছে। আপনি যদি সৎ নাগরিক হয়ে থাকেন, বাল্যবিবাহ্ পড়ানো বা রেজিস্ট্রিকারী যেই হোক, (কাজী, ভুয়া কাজী, ইমাম, উকিল) এদেরকে হাতে নাতে ধরিয়ে দিতে নিম্ন মোবাইল নম্বরে কল করলে আপনাকে পুরস্কৃত করা হবে। সুতরাং আপনি যদি বিবাহ্ তালাক বিষয়ে কোনো ঝামেলায় পড়ে থাকেন আপনার কাবিননামা দিতে বাহানা করছে বা মোটা অংকের টাকা দাবি করছে, আপনার সহযোগিতা করা আমার দায়িত্ব। আপনি সচেতন হোন, প্রতারককে ধরিয়ে দিন সমাজ ও দেশকে বাঁচান। খোদা হাফেজ-

বাল্যবিবাহ বন্ধে উল্লেখযোগ্য পন্থা হতে পারে নিকাহ্ রেজিস্ট্রারদের বালাম বই তদাকরি করা।

 

কাজী মোঃ শামছুল হক
সভাপতি
জেলা কাজী সমিতি, চুয়াডাঙ্গা ও
নিকাহ রেজিস্ট্রার
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা
৪ ও ৯নং ওয়ার্ড।
মোবাইল: ০১৭১৯-০৩৪১১৮

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More