আলমডাঙ্গায় মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ: ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকী ইউনিয়নের পরাজিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমুল হুসাইনের ওপর নৃশংস হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে রাতে আলমডাঙ্গা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। এ বিক্ষোভ সমাবেশের পাল্টা বিক্ষোভ করতে গেলে তরিকুল চেয়ারম্যানের লোকজনের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষের সময় তরিকুলের বিক্ষুব্ধ সমর্থকরা পুলিশের দুটি ও পাবলিকের ৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। এসময় পুলিশের এক ইন্সপেক্টরসহ ৫ জন আহত হয়েছে। বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম পক্ষ বুধবার সন্ধ্যায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে নাজমুল হুসাইনকে পিটিয়ে জখম করে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
গ্রামসূত্রে জানা যায়, ডাউকী ইউনিয়নের পরাজিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমুল হুসাইন বুধবার সন্ধ্যায় নিজ গ্রাম ডাউকী স্কুল মাঠে বসেছিলেন। ওই সময় নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামের লোকজন আকস্মিক হামলা চালায়। লাঠির আঘাতে নাজমুল রক্তাক্ত জখম হন। তাকে উদ্ধার করে গ্রামবাসী প্রথমে হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। রাতেই নাজমুল হুসাইনকে হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্স থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
নাজমুল হুসাইনকে নির্বাচনোত্তর মেরে রক্তাক্ত জখম করার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে ডাউকী গ্রামবাসী। আহত নাজমুল হুসাইনের মাকে সামনে নিয়ে গ্রামবাসীরা এবং উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতারা আলমডাঙ্গা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে বক্তারা নৌকা প্রতীকের বিজয়ী প্রার্থী তরিকুল ইসলামের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে, নাজমুল হুসাইনের সমর্থকদের বিক্ষোভ মিছিল করার সংবাদ পেয়ে তরিকুল ইসলামের লোকজন শহরে পাল্টা বিক্ষোভ করার প্রস্তুতি নেয়। তারা হাউসপুর এলাকায় অবস্থান নেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে বিক্ষোভ মিছিল করতে বাঁধা দেয়। এ সময় পুলিশের সাথে তরিকুলপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারা এসআই শরিয়ত উল্লাহ ও এএসআই শরিফুলের দুটি পালসার মোটরসাইকেল ভেঙে দেয়। পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এসময় আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ পরিদর্শক অপারেশন শেখ মাহবুবুর রহমান , এসআই শরিয়তুল্লাহ, এএসআই শরিফুল, কন্সটেবল, মামুন ও শাওন আহত হয়। পরে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে ৩ রাউন্ড শট গানের ফাকা গুলি ছোঁড়া হয়েছে।
এলাকাসূত্রে জানা গেছে, এ হামলা ঘটনার পূর্বে দুপুরে স্কুল ছুটির সময় ডাউকী গ্রামের সাজেদুর রহমান রকির বোনকে একই গ্রামের হাসান উত্যক্ত করে। এ কথা জানার পর রকি হাসানকে কিল থাপ্পুড় মারে। মার খেয়ে হাসান তরিকুল ইসলামকে জানান যে, নৌকার ভোট করে আমরা কেনো মার খেলাম? এ মারের ঘটনার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নাজমুল হুসাইনের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, ডাউকি ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামের কর্মীরা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমুল ইসলামকে মারধর করে। খবর পেয়ে উপস্থিত হলে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে এবং পুলিশের দুটি ও স্থানীয়দের দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More